বিজেপির পর কংগ্রেস রাজ্যও, বাংলার অনুকরণে বাজেটে বিরাট বরাদ্দ হল ‘গৃহলক্ষ্মী’ প্রকল্পে

বেঙ্গালুরু, ১৬ ফেব্রুয়ারি– মুখে যতই মমতাকে বিদ্রুপ করুক না কেন মমতার দেখানো পথেই ভোট যুদ্ধে জয়লাভ করতে চাইছে বিজেপি থেকে শুরু করে কংগ্রেস৷ পশ্চিমবঙ্গ, মধ্যপ্রদেশের পর এ বার কর্ণাটক৷ বাংলার মুখ্যমন্ত্রীর দেখানো পথেই লোকসভা নির্বাচনের আগে মহিলা ভোটকে পাখির চোখ করতে চাইছে সে কর্ণাটকের কংগ্রেস সরকারও৷ আগেও তৃণমূল সরকারের অনুকরণে কংগ্রেসের নির্বাচনী ইস্তাহারেই বলা হয়েছিল, কর্ণাটকে তারা ক্ষমতায় এলে বাডি়র গৃহকর্ত্রীর হাতে প্রতি মাসে দু’হাজার টাকা তুলে দেবে৷

নামেও বাংলাকে অনুকরণ করে লক্ষ্মীভান্ডারের স্থানে প্রকল্পের নাম রাখা হয়েছিল ‘গৃহলক্ষ্মী’৷ শুক্রবার সে রাজ্যের বাজেটে এই প্রকল্পের জন্য ২০২৪-২৫ অর্থবর্ষে ২৮ হাজার ৬০৮ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী সিদ্দারামাইয়া৷ কর্ণাটকের বিধানসভায় দাঁডি়য়ে তিনি বলেন, ‘গৃহলক্ষ্মী প্রকল্পে এখনও পর্যন্ত এক কোটি ৩৩ লক্ষ মহিলা উপকৃত হয়েছেন৷ জানুয়ারি মাস পর্যন্ত এক কোটি ১৭ লক্ষ প্রকল্পে নাম নথিভুক্ত করেছেন৷’ তবে কংগ্রেসের আগেই বাংলার দেখানো পথে বিজেপিশাসিত মধ্যপ্রদেশে মহিলাদের জন্য ‘লাডলি বহেন যোজনা’ চালু করেছিলেন সে রাজ্যের তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ সিংহ চৌহান৷ আগে মহিলাদের জন্য চালু হওয়া এই প্রকল্পে আর্থিক সাহায্যের অঙ্ক হাজার টাকা হলেও গত বছর মধ্যপ্রদেশে বিধানসভা নির্বাচনের আগে জানানো হয়, মহিলারা মাসে তিন হাজার টাকা করে পাবেন৷ ভোটের ফল বিশ্লেষণে দেখা যায়, মূলত মহিলাদের ভোটেই মধ্যপ্রদেশের গড় নিজেদের দখলে রাখে বিজেপি৷

এ রাজ্যের শাসকদল তৃণমূলের তরফে অবশ্য গোড়া থেকেই দাবি করা হয় যে, ‘লক্ষ্মীর ভান্ডার’-এর মতো প্রকল্প চালু করে তারা যে পথ দেখিয়েছে, তাই অনুকরণ করছে দেশের বাকি রাজ্যগুলি৷ বস্তুত, ২০২১ সালের বিধানসভা ভোটের আগে ফেব্রুয়ারি মাসে চালু হয় লক্ষ্মীর ভান্ডার প্রকল্প৷ এই প্রকল্পে রাজ্যের ২৫ থেকে ৬০ বছর বয়সি মহিলারা রাজ্য সরকারের কাছ থেকে আর্থিক সহায়তা পান৷ রাজ্যে বসবাসকারী যে কোনও পরিবারের মহিলা সদস্য এই সুবিধা পেতে পারেন৷ সম্প্রতি রাজ্য বাজেটে এই প্রকল্পে আর্থিক বরাদ্দ বৃদ্ধি করে ফের ২০২৪ সালের এপ্রিল মাস থেকে বর্ধিত সহায়তা চালুর সিদ্ধান্ত নেয় বঙ্গ সরকার৷


রাজ্যের মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য বাজেট পেশের সময় বলেন, ‘লক্ষ্মীর ভান্ডার প্রকল্পে তফসিলি জাতি এবং জনজাতির শ্রেণির জন্য আর্থিক সহায়তা বৃদ্ধি করে মাসিক ১,২০০ টাকা এবং অন্যদের জন্য এই সহায়তা বৃদ্ধি করে মাসিক ১০০০ টাকা হবে৷’ আগে এই বরাদ্দের পরিমাণ ছিল যথাক্রমে ১০০০ টাকা এবং ৫০০ টাকা৷ এর জন্য রাজ্য সরকারের কোষাগার থেকে অতিরিক্ত ১,২০০ কোটি টাকা বরাদ্দ হয়েছে বলে জানান চন্দ্রিমা৷