মুম্বই: সিএএ চালু হতেই ফের কেন্দ্রের তথা প্রধানমন্ত্রী মোদির হয়ে গলা ফাটালেন কঙ্গনা৷ ইনস্টাগ্রাম স্টোরিতে মোদির ছবি পোস্ট করে কঙ্গনা লিখলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী মোদি যা বলেন, তা করেনও৷’ এই পোস্টে কঙ্গনা আরও লিখলেন, ‘সিএএ নিয়ে নিজস্ব মতামত জানানোর আগে অবশ্যই জেনে নিন এটি আসলে কী৷’
কঙ্গনা যে মোদি ভক্ত, তা সবাই জানেন৷ এমনকী, এসব নিয়ে কঙ্গনা কখনও লুকোছাপাও করেন না৷ উলটে যখনই সুযোগ পান, তখনই নরেন্দ্র মোদির প্রশংসায় পঞ্চমুখ হন কঙ্গনা৷ সিএএ লাগু হতেই ফের নিজের সেই ভক্তিই প্রকাশ করলেন কঙ্গনা৷ মঙ্গলবার থেকেই সিএএ অনলাইন পোর্টালে নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করা যাবে বলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের তরফে জারি করা বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে৷ স্বাভাবিকভাবেই, সিএএ চারবছর ধরেই দেশবাসীর নজরে রয়েছে৷ সোমবার দুপুরে সিএএ কার্যকরের বিজ্ঞপ্তি জারির খবর প্রকাশ হতেই তোলপাড় দেশ৷ এর পর সিএএ বিজ্ঞপ্তি জারির হতেই হঠাৎ করে ই-গেজেট ওয়েবসাইট ক্র্যাশ হয়ে যায়৷ সিএএ-তে প্রথমবার ধর্মের ভিত্তিতে নাগরিকত্ব প্রদানের কথা বলা হয়েছে৷
২০১৯-এর লোকসভা নির্বাচনের প্রচারে বিজেপির অন্যতম ইসু্য ছিল সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন কার্যকর করা৷ দেশব্যাপী বিরোধিতা, সহিংস আন্দোলনের মধ্যেই ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে লোকসভা ও রাজ্যসভায় বিলটি পাস করিয়ে নেয় মোদি সরকার৷ ওই হিংসায় দেশের বিভিন্ন প্রান্তে অন্তত ১০০ জনের মৃতু্য হয়েছিল৷ বিশেষ করে, পশ্চিমবঙ্গের মতো বিরোধী শাসিত রাজ্যগুলো ধর্মীয় পরিচয়ের ভিত্তিতে সিএএ কার্যকরের বিরোধী৷বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ২০১৪-র ৩১ ডিসেম্বরের আগে বাংলাদেশ, পাকিস্তান এবং আফগানিস্তান থেকে ভারতে আসা অমুসলিম অভিবাসীদের এদেশে নাগরিকত্ব দেবে কেন্দ্র সরকার৷ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের একজন মুখপাত্র জানিয়েছেন যে, যোগ্য ব্যক্তিরা ‘সম্পূর্ণ অনলাইন মোডে’ আবেদন জমা দিতে পারেন৷ আবেদনকারীদের কাছ থেকে অন্য কোনও নথি চাওয়া হবে না৷ সম্প্রতি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ সিএএ কার্যকরকে ‘দেশের একটি কর্তব্য’ বলে উল্লেখ করে জানিয়েছিলেন যে সেটি লোকসভা ভোটের আগেই কার্যকর হবে৷ তার একমাসের কম সময়ের মধ্যেই সিএএ কার্যকর হয়ে গেল৷
নিয়ম অনুযায়ী, রাষ্ট্রপতি সই করার ছয় মাসের মধ্যে আইনের নির্দিষ্ট ধারা-উপধারা যুক্ত করতে হয়৷ না হলে লোকসভা কিংবা রাজ্যসভার নির্দিষ্ট কমিটিগুলির কাছে বিশেষ অনুমতি নিতে হয়৷ এ ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক ২০২০ সাল থেকে আইন কার্যকর করার সময়সীমা বৃদ্ধির আবেদন জানিয়ে আসছিল৷এদিন বিজ্ঞপ্তি জারির পর শাহ নিজের এক্স হ্যান্ডলে লিখেছেন, ‘মোদি সরকার আজ নাগরিকত্ব (সংশোধিত) বিধিমালা, ২০২৪ জারি করেছে৷ এই বিধিগুলোর দ্বারা এখন পাকিস্তান, বাংলাদেশ এবং আফগানিস্তানে ধর্মীয় নির্যাতনের শিকার সংখ্যালঘুরা আমাদের দেশে নাগরিকত্ব অর্জন করতে সক্ষম হবেন৷ এই বিজ্ঞপ্তি জারি করে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি আরও একটি প্রতিশ্রুতি রক্ষা করেছেন এবং ওইসব দেশে বসবাসকারী হিন্দু, শিখ, বৌদ্ধ, জৈন, পার্শি এবং খ্রিস্টানদের প্রতি আমাদের সংবিধান প্রণেতাদের প্রতিশ্রুতিও রক্ষা করেছেন৷’
জানা গিয়েছে, নাগরিকত্বের জন্য আবেদন অনলাইনের মাধ্যমে করা যাবে৷ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, এর জন্য নির্দিষ্ট পোর্টাল তৈরি করা হয়েছে৷ আর সেই ‘সিএএ পোর্টালে’-র মাধ্যমেই নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করা যাবে৷ পোর্টালটি হল- indiancitizenshiponline.nic.in৷