ওয়াকফ বিল সংক্রান্ত যৌথ সংসদীয় কমিটি তথা জেপিসি-র চেয়ারম্যান জগদম্বিকা পাল একতরফা ভাবে সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন । সোমবার এই অভিযোগ তুলে লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লাকে চিঠি দিলেন জেপিসির সদস্য বিরোধী সাংসদেরা। বিজেপি সাংসদ জগদম্বিকার ‘স্বেচ্ছাচারী আচরণের’ কারণে তাঁরা জেপিসি থেকে ইস্তফার মতো সিদ্ধান্ত নিতে পারেন বলেও চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে।
বিরোধী সাংসদরা সোমবার লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লাকে চিঠি লিখে সতর্ক করেছেন যে তাঁরা ওয়াকফ বিলের সংশোধন সংক্রান্ত যৌথ সংসদীয় কমিটি থেকে ইস্তফা দিতে পারেন। সাংসদরা কমিটির চেয়ারম্যান, ভারতীয় জনতা পার্টির জগদম্বিকা পালকে একতরফাভাবে সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য অভিযুক্ত করেছেন। চিঠিতে লিখেছেন, ‘যে কোনও ভাবে ওয়াকফ বিল পাশের জন্য একতরফা সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন জেপিসির চেয়ারম্যান।’ পাশাপাশি, এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সরকারের ‘তাড়াহুড়ো’ নিয়েও প্রশ্ন তোলা হয়েছে চিঠিতে। আবেদন জানানো হয়েছে, বিষয়টি গভীর ভাবে পর্যালোচনা করা হোক এবং বিভিন্ন পক্ষের মতামত জানার জন্য আরও সময় দেওয়া হোক।
নতুন ওয়াকফ বিলের খসড়া নিয়ে শুরু থেকেই টানাপড়েন শুরু হয়েছে সরকার ও বিরোধীদের। গত ২২ অক্টোবর জেপিসির বৈঠকে অসংসদীয় আচরণের অভিযোগে সাসপেন্ড করা হয় কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়কে। তিনি বিজেপি সাংসদ অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের সঙ্গে বিবাদ চলাকালীন জেপিসির চেয়ারম্যান তথা বিজেপি সাংসদ জগদম্বিকা পালকে লক্ষ্য করে কাচের বোতল ভেঙে ছোড়েন বলে অভিযোগ। ওই ঘটনায় কাচ বিঁধে কল্যাণের নিজের হাতই জখম হয়। কল্যাণ পরে দাবি করেন, তিনি ইচ্ছাকৃত ভাবে কাচের বোতল ভাঙেননি। সেই সঙ্গে জগদম্বিকাকে নিশানা করে তিনি বলেন, উনি তাঁকে অসম্মান করেছেন। তাঁর পরিবারকেও হেয় করা হয়েছে।
২৮ অক্টোবর জেপিসির দ্বিতীয় বৈঠকে যোগ দেননি কল্যাণ। সে দিন বিরোধী সাংসদেরা ওয়াকফ বিল বাতিলের দাবিতে সাময়িক ভাবে ওয়াকআউট করেছিলেন। এরপর বিরোধীদের প্রবল আপত্তির মধ্যে গত ৮ আগস্ট লোকসভায় ওয়াকফ সংশোধনী বিল পেশ করেন কেন্দ্রীয় সংখ্যালঘু মন্ত্রী কিরেণ রিজিজু। বিলটি ‘অসংবিধানিক এবং মুসলিমদের ধর্মীয় স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপকারী’ বলে অভিযোগ তুলে বিরোধীরা একযোগে আপত্তি জানান। দীর্ঘ বিতর্কের পর বিলটি জেপিসি-র কাছে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেয় কেন্দ্র।
ওয়াকফ সংশোধনী বিল নিয়ে বিরোধী শিবির এবং মুসলিম সংগঠনগুলির যুক্তি, ওয়াকফ বোর্ডের বিভিন্ন সম্পত্তি দখলের উদ্দেশ্যে ওই বিল আনছে কেন্দ্র। তাদের দাবি, দিল্লি-সহ দেশের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় ওয়াকফ সম্পত্তি দখল করার জন্য কেন্দ্র দ্রুত সংশোধনী বিল পাশ করাতে চাইছে। পাল্টা কেন্দ্রের যুক্তি, মুসলিম সমাজের গরিব এবং মহিলারা এত দিন ওয়াকফ আইন সংস্কারের দাবি জানিয়ে আসছিলেন।