কাজহীন আর্থিক বৃদ্ধি, আশঙ্কা কেন্দ্রের তথ্যে

দিল্লি, ২ জুলাই– করোনা কালে মানুষের জীবন-জীবীকা একেবারে ধরাতলে গিয়ে ঠেকেছিল৷ কিন্তু তারপর গোটা বিশ্ব করোনার থাবা থেকে ধীরে ধীরে নিজেকে মুক্ত করেছে৷ বেড়েছে মানুষের কর্মকাণ্ড৷ কিন্তু সেই কাজের বাজার নাকি এখনও সেই রকমই থেকে গিয়েছে বলে খবর৷ সেই বেকারত্ব নিয়ে বার বার মোদি সরকারকে দুষেছে বিরোধী পক্ষ৷ লোকসভা ভোটের আগে দেশে চড়া বেকারত্ব নিয়ে বার বার বিরোধীদের তোপের মুখে পডে়ছিল মোদি সরকার৷ বিশেষত যুব সম্প্রদায়ের হাতে কাজ না থাকা আর্থিক বৃদ্ধির পক্ষে খারাপ বলে সতর্ক করেছেন রঘুরাম রাজন থেকে কৌশিক বসু-সহ বিভিন্ন অর্থনীতিবিদেরা৷
সম্প্রতি একের পর এক সমীক্ষা দেশে কর্মসংস্থানের হাল নিয়ে প্রশ্ন তুলছে৷ বিরোধীরা ক্রমাগত বেকারত্বের প্রশ্নে আক্রমণ করছেন মোদি সরকারকে৷ অর্থনীতিবিদেরাও কাজহীন আর্থিক বৃদ্ধি নিয়ে সতর্ক করছেন৷ বলছেন, তরুণ প্রজন্ম কাজ না পেলে বাড়তে পারে বৈষম্য৷ মাথা তুলতে পারে সামাজিক অস্থিরতা৷ সংশ্লিষ্ট মহলের মতে, এই পরিস্থিতিতে নিজেদের তথ্যই কাজের বাজার নিয়ে মাথাব্যথা আরও বাড়াল কেন্দ্রের৷

কেন্দ্র মুখে কাজের জগতে বিপ্লব আনার কথা বললেও আসলে দেশে বেকারত্বের হার বাড়ছে বই কমছে না তা বিভিন্ন সময়ে উঠে এসেছে নানা তধ্যে৷ মোদি সরকার সেই কথা স্বীকার না করলেও, কাজ নিয়ে চিন্তা যে অমূলক নয় তার প্রমাণ দিয়ে গত অর্থবর্ষে কমল ইপিএফও-র সদস্য নিয়োগ৷ খোদ পরিসংখ্যান মন্ত্রকের তথ্যই জানাচ্ছে, ওই সময়ে ১.০৯ কোটি কর্মী যোগ দিয়েছেন এই প্রকল্পে৷ যা তার আগের বছরের তুলনায় ৪% কম৷ ২০২২-২৩ সালে সদস্য যোগদানের সংখ্যা ছিল ১.১৪ কোটিরও বেশি৷

এ পর্যন্ত করোনার আগের সদস্য সংখ্যাও ছুঁতে পারেনি ইপিএফও৷ সব মিলিয়ে যা কাজের বাজারের আশঙ্কাজনক ছবিই তুলে ধরেছে বলে জানাচ্ছে সংশ্লিষ্ট মহল৷ তাদের দাবি, কর্মী এত কমা মানে বহু মানুষ কাজ হারিয়েছেন৷ বেকারত্ব বেডে়ছে দেশে৷ তবে সরকারি মহলের মতে, বহু মানুষ অবসরও নিয়েছেন৷ তাই এত সদস্য বাদ গিয়েছেন ইপিএফ থেকে৷ তাঁদের নাম উঠেছে পিএফ পেনশন পাওয়ার তালিকায়৷


উল্লেখ্য, পরিসংখ্যান মন্ত্রকের ‘পে-রোল রিপোর্টিং ইন ইন্ডিয়া: অ্যান এমপ্লয়মেন্ট পার্স্পেকটিভ: জানুয়ারি টু এপ্রিল, ২০২৪’ রিপোর্ট বলছে, গত অর্থবর্ষে দেশে ইপিএফও-র প্রকল্পে যোগ দিয়েছেন ১,০৯,৯৩,১১৯ জন কর্মী৷ এ নিয়ে টানা পাঁচ বছরেও কর্মী নিয়োগ অতিমারির আগের ১,৩৯,৪৪,৩৪৯ জনকে ছুঁতে পারেনি৷ তার উপরে এই সময়ে কর্মী রাজ্য বিমা প্রকল্পেও (ইএসআই) সদস্য যোগদানের সংখ্যা ২০২২-২৩ সালের ১,৬৭,৭৩,০২৩ থেকে কমে হয়েছে ১,৬৭,৬০,৬৭২ জন৷ তবে আলোচ্য বছরে বেডে়ছে এনপিএসের সদস্য৷ ৮,২৪,৭৩৫ থেকে তা বেডে় হয়েছে ৯,৩৭,০২০ জন৷ কিন্ত্ত এই প্রকল্পে কর্মী ছাড়াও যে কোনও ব্যক্তি যোগ দিতে পারেন৷ ফলে তার হিসাব দিয়ে কর্মী সংখ্যা মাপা যায় না বলেই মত সংশ্লিষ্ট মহলের৷