যুদ্ধক্ষেত্রে নয়, আলোচনার মাধ্যমেই রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শেষ হতে পারে। এমনটাই বলেছেন ভারতের বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর।জয়শঙ্কর বলেন, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের তিন বছর পর বিশ্ব বুঝতে শুরু করেছে যে এই সমস্যাটি কেবল আলোচনার মাধ্যমেই সমাধান করা যেতে পারে।
জয়শঙ্কর বলেন, ভারত সবসময় বিশ্বাস করে যে এই যুদ্ধ যুদ্ধক্ষেত্রে সমাধান করা যাবে না। শেষ পর্যন্ত উভয় পক্ষকে আলোচনার টেবিলে ফিরে আসতে হবে এবং ভারত এটি সম্ভব করার জন্য সর্বাত্মক চেষ্টা করছে। তিনি বলেন, আমরা যখন মস্কোতে যাই, তখন আমরা প্রেসিডেন্ট পুতিনের সঙ্গে কথা বলি। আমরা যখন কিভে যাই, তখন আমরা প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কির সঙ্গে দেখা করি। আমরা দুই পক্ষের মধ্যে পারস্পরিক সমঝোতার সূত্র খোঁজার চেষ্টা করি।
তিনি স্পষ্ট করেছেন, ভারত কোনও শান্তি পরিকল্পনা উপস্থাপন করছে না। জয়শঙ্করের কথায়, আমরা মধ্যস্থতা করছি না। আলোচনা করছি এবং নিশ্চিত করছি যে সম্পূর্ণ স্বচ্ছতার সঙ্গে উভয় পক্ষকে তথ্য দেওয়া হয়।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এই বছরের শুরুতে কিভ গিয়েছিলেন এবং রাষ্ট্রপতি জেলেনস্কির সঙ্গে দেখা করেছিলেন। প্রধানমন্ত্রী মোদী শান্তির পক্ষে থাকার জন্য ভারতের প্রতিশ্রুতি মনে করিয়ে দেন। অন্যদিকে, জেলেনস্কি ইউক্রেনকে সমর্থন করার জন্য এবং ভারসাম্যপূর্ণ মনোভাব গ্রহণ না করার জন্য ভারতের কাছে আবেদন করেছিলেন। যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার চেয়ে আলোচনার প্রয়োজনীয়তাকে স্বীকৃতি দেওয়া বেশি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছে।
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের পর পশ্চিমের দেশগুলি রাশিয়াকে বয়কট করলেও ভারত বন্ধুত্ব বজায় রেখেছে। সম্প্রতি রাশিয়া সফরে যান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। এছাড়াও, ভারত রাশিয়া থেকে তেল ক্রয় অব্যাহত রেখেছে। বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্করকে এই বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি রাশিয়া থেকে তেল কেনার সিদ্ধান্তকে সমর্থন করেছেন। তাঁর প্রশ্ন, ভারতের শক্তির চাহিদা মেটাতে বিশ্বের কাছে আর কোনও ভাল বিকল্প আছে কি না?
২২-তম দোহা ফোরামে একটি আলোচনার সময় জয়শঙ্কর স্পষ্ট করেছেন, রাশিয়ার কাছ থেকে তেল কেনা ভারতের জন্য সস্তা চুক্তি নয়, তবে এটি দেশের শক্তি সুরক্ষা নিশ্চিত করার প্রয়োজনীয়তা। তিনি বলেন, আমি তেল কিনছি। এটা সত্যি। তবে এটা সস্তা নয়। আপনাদের কাছে এর চেয়ে ভালো চুক্তি আছে?
বিগত কয়েক বছরে ভারতে রাশিয়া থেকে অপরিশোধিত তেল আমদানি উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি করেছে। রাশিয়া এখন ভারতের বৃহত্তম অপরিশোধিত তেল সরবরাহকারী হয়ে উঠেছে। ভারতের মোট তেল আমদানির ৩৫ শতাংশেরও বেশি রাশিয়ার।