বৃহস্পতিবার পুরীতে পালিত হল জগন্নাথদেবের স্নানযাত্রা। তবে যে চেনা ভিড়ের ছবিটা এই স্নানযাত্রার সময় পুরীতে দেখা যায় সেটা এবারের স্নানযাত্রীয় ছিল অমিল। মোটর উপর ভক্তশুন্য পুরীতে কোভিড বিধি মেনে সতর্কতার সাথে পালন করা হয় এবারের স্নানযাত্রা উৎসব।
জগন্নাথ মন্দির সূত্রের খবর, রাজপরিবারের করােনা হওয়ার কারণে এবারের স্নানযাত্রা উৎসবে পুরীর রাজা যোগ দিতে পারবেন না। এই উৎসবে যখন জগন্নাথদেব তাঁর রত্নসিংহাসন থেকে স্নানবেদীতে আসেন, তার আগে বেদী সােনার ঝাড়ু দিয়ে পরিমার্জন করেন পুরীর গজপতিরাজা দিব্যসিংহ দেব। তাই উৎসবে রাজার অনুপস্থিতির ফলে এই আচার পালিত হবে কিনা তা নিয়ে ধন্দ ধরে রয়ে গিয়েছে।
মূলত স্নানযাত্রার দিনটাকে জান্নাথদেবের জন্মতিথি হিসাবেই ধরা হয়। পুরাণ অনুসারে জ্যৈষ্ঠ মাসের পূর্ণিমা তিথিতে স্বয়ম্ভু মনুর যজ্ঞের প্রভাবে জগন্নাথদেব আবির্ভূত হয়েছিলেন। স্কন্দ পুরাণ মতে, পুরীর মন্দিরে জগন্নাথ, বলরাম, সুভদ্রার বিগ্রহ প্রতিষ্ঠার পরে প্রথম রাজা ইন্দ্রদ্যুম্নই এই অনুষ্ঠানের আয়ােজন করেছিলেন। স্নানযাত্রায় দরিতাপতিরা মন্দিরের উত্তর দিকে কূপ থেকে জল এনে সেই জল শুদ্ধিকরণ সরে ১০৮ টি কলসিতে ভরা হয়। এই ১০৮ টি কলসির জলেই জগন্নাথ, বলরাম ও সুভদ্রার বিগ্রহকে স্নান করান হয়। সেই জলে মেশানাে থাকে চন্দন, আতর সহ নানা সুগন্ধী।
শােনা যায়, ‘পারমনী’ মন্ত্রে সােনার কলসি ভর্তি করে গর্ভ মন্দিরে আগে অধিবাস করতে হয়। তারপর বিগ্রহকে স্নানবেদীতে নিয়ে আসার রীতি শুরু হয়। স্নানের সময় চামর ও তালপাতা দিয়ে হাওয়া করা হয়। স্নানের পরে জগন্নাথ ও বলরামের হাতিবেশ বা গণেশবেশ হয়ে থাকে। কথিত আছে, জগন্নাথদেব মহারাজা ইন্দ্রদ্যুম্নকে নির্দেশ দিয়েছিলেন মহাস্নানের পর তার অঙ্গরাগবিহীন রূপ কেউ না দেখেন। তাই স্নানযাত্রার পর থেকে ১৫ দিন পুরীর মন্দিরের দরজা সাধারণের জন্য বন্ধ থাকে।