রাজ্যের ‘বিশেষ মর্যাদা’ চাইতেই এসেছি, বললেন অন্ধ্রের মুখ্যমন্ত্রী
অমরাবতি, ৯ ফেব্রুয়ারি– শুক্রবারই অন্ধ্রের নেতা, প্রয়াত প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী পিভি নরসিংহ রাওকে মরণোত্তর ভারতরত্ন সম্মাননা দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছেন মোদি৷ আর সেদিনই অন্ধ্রপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী তথা ওয়াইএসআর কংগ্রেসের সভাপতি জগন্মোহন রেড্ডি হাজির হলেন মোদির দফতরে৷ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির দফতরে গিয়ে তাঁর সঙ্গে বৈঠকও করলেন জগন৷ অন্ধ্রের মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, তাঁর রাজ্যের জন্য ‘বিশেষ মর্যাদা’ চেয়ে প্রধানমন্ত্রীকে আবেদন জানাতে গিয়েছিলেন তিনি৷ কিন্ত্ত তেলুগু দেশম প্রধান চন্দ্রবাবু নায়ডুর পরে লোকসভা ভোটের আগে তাঁর এই দিল্লি সফর অন্য গল্প বলছে৷
অন্ধ্রের রাজনীতিতে জগনের মূল প্রতিদ্বন্দ্বী, তেলুগু দেশম পার্টি (টিডিপি)-র প্রধান চন্দ্রবাবু নায়ডু বুধবার রাতে দিল্লি গিয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সঙ্গে বৈঠক করেছিলেন৷ অন্ধ্রের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী চন্দ্রবাবু ছ’বছর পরে আবার বিজেপি নেতৃত্বাধীন এনডিএ-তে ফিরতে চলেছেন বলে জল্পনা৷ সেখানে ক্ষমতাসীন ওয়াইএসআর কংগ্রেসকে হারানোর উদ্দেশে ইতিমধ্যেই তেলুগু অভিনেতা-রাজনীতিক পবন কল্যাণের দল জনসেনা পার্টির সঙ্গে হাত মিলিয়েছে টিডিপি৷ বিজেপিও সেই জোটে শামিল হলে জগনের হারের সম্ভাবনা রয়েছে বলে ইতিমধ্যেই কয়েকটি জনমত সমীক্ষায় দাবি করা হয়েছে৷
আগামী এপ্রিল-মে মাসে লোকসভা ভোটের সঙ্গেই অন্ধ্রে বিধানসভা ভোট হওয়ার সম্ভাবনা৷ ঘটনাচক্রে, ইতিমধ্যেই জগনের বোন শর্মিলা কংগ্রেস যোগ দিয়ে সে রাজ্যের সাংগঠনিক প্রধানের দায়িত্ব পেয়েছেন৷ ক্ষমতা দখল করতে না পারলেও প্রয়াত মুখ্যমন্ত্রী ওয়াইএস রাজশেখর রেড্ডির কন্যাকে সামনে রেখে কংগ্রেস এ বার জগনের দলের ভোটব্যাঙ্কে ফাটল ধরাতে পারে বলে রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের একাংশ মনে করছেন৷ সে ক্ষেত্রে সুবিধা হবে চন্দ্রবাবুর৷
তবে কি নিজের ভোটব্যাঙ্ক বাঁচাতেই অন্ধ্রের মুখ্যমন্ত্রী হঠাৎ মোদির ‘দরবারে’ হাজির হয়েছেন কি না, তা নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে৷ যদিও গত দেড় দশকে প্রতিটি লোকসভা-বিধানসভা ভোটের আগেই অন্ধ্রে ‘বিশেষ রাজ্যের মর্যাদা’ নিয়ে রাজনৈতিক চাপানউতর শুরুর উদাহরণ রয়েছে৷ প্রসঙ্গত, ২০০৯ সালে হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় মারা গিয়েছিলেন অখণ্ড অন্ধ্রের তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী তথা কংগ্রেস নেতা রাজশেখর রেড্ডি৷ তাঁর মৃতু্যতে খালি হওয়া কাড়াপা জেলার পুলিভেন্ডুলা বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচনে জেতেন স্ত্রী বিজয়াম্মা৷ কংগ্রেস শীর্ষ নেতৃত্বের সঙ্গে মতবিরোধের জেরে ২০১১ সালে নয়া দল ওয়াইএসআর কংগ্রেস গডে়ন রাজশেখর-পুত্র জগন৷ সে সময় পাশে পেয়েছিলেন মা বিজয়াম্মা এবং বোন শর্মিলাকে৷ পরে জগনের সঙ্গে দূরত্ব বাডে় দু’জনেরই৷