পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তার নেতৃত্বাধীন দল তৃণমূল কংগ্রেসের বিস্তারের জন্য যথাসাধ্য চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। সম্প্রতি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কংগ্রেসকে বিভিন্ন সভায় তুলোধনা করছেন। তাঁর অভিযোগ, বিজেপির সঙ্গে সমঝোতা করে চলছে কংগ্রেস।
যে সিপিএম অটল বিহারী বাজপেয়ীর হাত ধরেছিল সেই শত্রু সিপিএমকে কংগ্রেস সমর্থন করছে। একমাত্র নিখাদ বিজেপি বিরোধিতা করে চলেছে তৃণমূল। কংগ্রেসকে কাঠগড়ায় তুলে মমতা যখন এমন অভিযোগ করছে, ঠিক সেই সময় দেশের বিভিন্ন প্রান্ত নির্বাচনী ফলাফলে আচমকাই জ্বলে উঠল কংগ্রেস।
উত্তর ভারতের হিমাচল প্রদেশ, দক্ষিণ ভারতের কর্ণাটক কিংবা পশ্চিম ভারতের রাজস্থান — সোনিয়া গান্ধি, রাহুল গান্ধি, প্রিয়াঙ্কা গান্ধি বঢ়ড়ার নেতৃত্বাধীন কংগ্রেস দুরন্ত ফলাফল করল উপনির্বাচনে। বিজেপি শাসিত দুই রাজ্য থেকে বিজেপির জেতা আসনের দখল নিল গ্র্যান্ড ওল্ড পার্টি।
হিমাচলের কংগ্রেস মুখপাত্র রাজীব শুক্ল বলেছেন, ‘সাধারণত উপনির্বাচনে ক্ষমতায় থাকা দলই জেতে। কিন্তু হিমাচলের ক্ষমতায় রয়েছে বিজেপি এম। সেখানে কংগ্রেসের এই জয় প্রমাণ করে দিচ্ছে মানুষ বিজেপির শাসনে অতিষ্ঠ। সম্প্রতি ঘটে যাওয়া প্রাকৃতিক দুর্যোগের অভিঘাত হিমাচলে এখনও দগদগে।
কিন্তু বিজেপির অবস্থা তার থেকেও যেন বিধ্বস্ত। তিনটি বিধানসভার উপনির্বাচনে একটিও আসন পায়নি পদ্মশিবির। তার উপর একটিতে আবার তৃতীয় হয়েছে। একটি লোকসভা আসনের উপনির্বাচনেও জয় পেয়েছে কংগ্রেস। প্রয়াত প্রাক্তনমুখ্যমন্ত্রী বীরভদ্র সিংয়ের স্ত্রী প্রতিভা সিংয়ের কাছে মাণ্ডিতে পরাস্ত হয়েছেন বিজেপি প্রার্থী।
এক কথায় বিজেপিকে চার শূন্য ব্যবধানে হারিয়েছে কংগ্রেস। মধ্যপ্রদেশ ও অসমে দু’টি করে আসন খোয়ালেও কংগ্রেস গোটা উপনির্বাচনকে ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গিতেই দেখতে চাইছে।
পর্যবেক্ষকদের মতে, মমতা সহ গোটা তৃণমূল যখন বিজেপি বিরোধী লড়াইতে সাবেক দলকে হেলাফেলা করে দেখাতে চাইছে, সোজাসাপ্টা বলে দিচ্ছে কংগ্রেসের দুর্বলতার কারণেই মোদি শক্তিশালী হচ্ছেন, তখন চপ্ত নম্বর আকবর রোডও বিজেপি শাসিত রাজ্য থেকে আসন ছিনিয়ে আনাকে পাল্টা তুলে ধরতে চাইবে কংগ্রেস।
সেই সঙ্গে বার্তা যাবে তৃণমূলের কাছেও। যদি সত্যি সত্যি কেন্দ্রের ক্ষমতা থেকে বিজেপিকে সরাতে হয়, তাহলে কংগ্রেসকে গুরুত্ব দিতেই হবে। তা না হলে, বিরোধী জোট সম্ভব হবে না, উপনির্বাচনের ফলাফল এমনটাই বার্তা দিচ্ছে।