মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের হুশিয়ারির পর ভারত হাইড্রক্সিক্লোরোকুইন রফতানিতে নিষেধাজ্ঞা শিথিল করতে বাধ্য হল। বিদেশ দফতরের পক্ষে জানানো হয়েছে করোনা মোকাবিলায় যে সকল দেশে হাইড্রক্সিক্লোরোকুইনের প্রয়োজন সেখানে ভারত ওষুধটি পাঠাবে।
বিদেশমন্ত্রকের মুখপাত্র অনুরাগ শ্রীবাস্তব এখবর দিয়ে বলেছেন, ভারত সব সময়েই আন্তর্জাতিক সংহতি রক্ষায় সহযোগিতায় বিশ্বাসী। এমন এক আপতকালীন সময়ে ভারত প্যারাসিটামল এবং হাইড্রক্সিক্লোরোকুইনের মতো ওষুধ যথাযথ পরিমাণে চাহিদা মতো প্রতিবেশী দেশ ও যেখানে সংক্রমণে ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলিতেও পাঠানো হবে।
মার্কিন মুলুকে করোনায় আক্রান্ত হয়ে এপর্যন্ত মৃতের সংখ্যা দশ হাজার ছাড়িয়েছে। আক্রান্তের সংখ্যা তিন লাখ ছাড়িয়েছে। আর আমেরিকা ইতিমধ্যেই ভারতকে করোনা মোকাবিলায় ২৯ লাখ ডলার সাহায্য করার কথা ঘোষণা করেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প।
ভারতে করোনা সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় ৪ এপ্রিল হাইড্রক্সিক্লোরোকুইন রফতানিতে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছিল। দেশে পর্যাপ্ত যোগানের জন্য ইতিমধ্যেই স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রক দুটি সংস্থাকে ১০ হাজার কোটি হাইড্রক্সিক্লোরোকুইন ট্যাবলেট সরবরাহের নির্দেশ দিয়েছে।
ভারতে প্রতিমাসে মোট ২০ কোটি ট্যাবলেট তৈরি করা সম্ভব। হাইড্রক্সিক্লোরোকুইন না পাঠালে পরবর্তীতে ভারতকে তার ফল ভুগতে হবে বলে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের হুঁশিয়ারির প্রেক্ষিতে কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধি আগে নিজের দেশের স্বার্থ দেখার পরামর্শ দিয়েছেন কেন্দ্রীয় সরকারকে। তাঁর মতে করোনা মোকাবিলায় দেশের মানুষের কাছে আগে ওষুধ পৌঁছে দিতে হবে। পরে অন্য দেশের কথা ভাবা যাবে।
নোভাল করোনাভাইরাসের সংক্রমণের হাত থেকে রেহাই পেতে ম্যালেরিয়ার প্রতিষেধক হাইড্রক্সিক্লোরোকুইন এবং প্যারাসিটামল ট্যাবলেটের ওপরই ভরসা করছে বহু দেশ। প্রতিদিন মার্কিন মুলুকে সংক্রমণের সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় মার্কিন দেশে হাইড্রক্সিক্লোরোকুইনের চাহিদা বাড়ছে। বিশ্বে হাইড্রক্সিক্লোরোকুইন রফতানিকারক দেশ হিসেবে ভারতের ওপর চাপ বাড়ছে। নিজের দেশের চাহিদা মোকাবিলায় রফতানি বন্ধ রেখেছিল ভারত।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডেনাল্ড ট্রাম্পের কড়া সমালোচনা করেছেন রাহুল গান্ধি। বন্ধু দেশকে এমন হুঁশিয়ারি দেওয়ার মানে কি? ভারতেও তো করোনা সংক্রমণ বাড়ছে তার মোকাবিলা করা সরকারের দায়িত্ব। তাই নিজের দেশের মানুষের দুর্দশা আগে দূর করতে হবে সরকারকে। উদ্বৃত্ত ওষুধই কেবল ভারত রফতানি করতে পারে।
আর এক কংগ্রেস নেতা শশী থারুর মার্কিন প্রেসিডেন্টের হুঁশিয়ারির নিন্দা করেছেন। আন্তর্জাতিক কুটনৈতিক ক্ষেত্রে কোনও দেশের প্রধানকে এমনভাবে অন্য রাষ্ট্রকে হুমকি দেওয়া হয়েছে কিনা তিনি মনে করতে পারছেন না। তবে এদিনই ভারত হাইড্রক্সিক্লোরোকুইন রফতানি নিয়ে আগের অবস্থান থেকে সরে এসেছে। করোনায় ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলিতে ওই ওষুধ সরাহের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।