মহাকাশ দুনিয়ায় নজির গড়ল ইন্ডিয়ান স্পেস রিসার্চ অর্গানাইজেশন। মহাকাশে পাড়ি দিল ইসরোর তৈরি একটি পোলার স্যাটেলাইট লঞ্চ ভেহিক্যাল (পিএসএলভি)। সোমবার রাতে অন্ধ্র প্রদেশের শ্রীহরিকোটায় সতীশ ধাওয়ান স্পেস সেন্টারের লঞ্চিং প্যাড থেকে পিএসএলভি সি৬০ রকেটটির সফল উৎক্ষেপণ হয়েছে। কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই এটির পেলোডগুলি সফল ভাবে স্থাপন করা হল পৃথিবীর কক্ষপথে। মহাকাশে ভারতের নিজস্ব স্পেস স্টেশন নির্মাণ ও চন্দ্রযান ৪-এর সাফল্যের লক্ষ্যে এই অভিযান খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
মহাকাশে স্পেস ডক পরীক্ষাকে টার্গেট করে এই মিশন এগিয়েছে। এর আগে আমেরিকা, রাশিয়া, চিন এই প্রযুক্তি ব্যবহার করেছে। তালিকায় চার নম্বরে নাম লেখাল ভারত। মহাকাশে মহাকাশচারীদের ভ্রমণে ডকিংয়ের প্রয়োজন হয়। একই কক্ষপথে দুটি দ্রুতগতির মহাকাশযানকে যুক্ত করার প্রক্রিয়াই হল স্পেস ডকিং। দুটি মহাকাশযানের মধ্যে ডকিং সম্পন্ন হলে মহাকাশচারীরা স্পেস স্টেশনে প্রবেশ করতে পারেন। বিভিন্ন সামগ্রী সরবরাহের কাজেও সুবিধা হয়। এই দুই কৃত্রিম উপগ্রহ সেই ডকিং প্রযুক্তিই খতিয়ে দেখবে।
৪৪.৫ মিটার লম্বা রকেটটি দু’টি মহাকাশযান বহন করেছে। স্পেসক্রাফ্ট এ এবং বি, প্রতিটির ওজন ২২০ কেজি করে। এ ছাড়া রয়েছে ২৪টি সেকেন্ডারি পেলোড। প্রথম কৃত্রিম উপগ্রহটিতে রয়েছে হাই রেজোলিউশন ক্যামেরা এবং দ্বিতীয় উপগ্রহে রেডিয়েশন মনিটর ও প্রাকৃতিক সম্পদ অনুসন্ধানের পাশাপাশি হাই রেজোলিউশনের ছবি তোলার ব্যবস্থা থাকবে। গুলির ১০ গুণ গতিতে ছুটে মহাকাশে ঘুরতে ঘুরতে দু’টি কৃত্রিম উপগ্রহের জুড়ে যাওয়ার কথা। দু’টি মহাকাশযান – স্পেসক্রাফ্ট এ বা ‘চেজার’ এবং স্পেসক্রাফ্ট B বা ‘টার্গেট’ একই গতি এবং দূরত্বে যাওয়ার পর প্রায় ৪৭০ কিলোমিটার উচ্চতায় একসঙ্গে জুড়বে।
পিএসএলভি সি৬০ মিশনের প্রধান জয়কুমার জানিয়েছেন, ২০৩৫ সালের মধ্যে নিজস্ব আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশন স্থাপন করতে জোরকদমে প্রস্তুতি শুরু করেছেন তাঁরা। সেই লক্ষ্য অর্জনের পথে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ ‘মহাকাশ ডকিং’ পরীক্ষা। এই অভিযান প্রসঙ্গে ইসরো প্রধান এস সোমনাথ বলেন, পৃথিবীর পাশাপাশি চাঁদের কক্ষপথেও এই ডকিং প্রক্রিয়া চলবে। চন্দ্রযান ৪-এর অভিযানের লক্ষ্যে এই মিশন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ কারণ। ওই অভিযানে আমরা চাঁদের মাটিতে নামব এবং সেখান থেকে আবার ফিরে আসব পৃথিবীতে।