দিল্লি, ২৩ এপ্রিল– স্বাস্থ্য বিমার ক্ষেত্রে এখন পর্যন্ত বয়স্কদের অভিযোগ সব থেকে বেশি৷ একটা বয়সের পর স্বাস্থ্য বিমা করানো যায় না৷ কিন্তু বয়সকালেই তো রোগের প্রকোপ বেশি৷ চিকিৎসায় খরচও বেশি৷ তবে এবার সেই চিন্তা থেকে মুক্ত হলেন বয়স্করা৷ দেশের সব মানুষকে বিমার আওতায় আনতে চায় কেন্দ্র৷ সেই পরিকল্পনার অঙ্গ হিসেবে এ বার স্বাস্থ্য বিমা কেনার বয়সের ঊর্ধ্বসীমা (৬৫ বছর) তুলে নিল বিমা নিয়ন্ত্রক আইআরডিএআই৷ সম্প্রতি বিজ্ঞপ্তিতে বিমা সংস্থাগুলিকে এই নির্দেশ দিয়েছে তারা৷ জানিয়েছে, গত ১ এপ্রিল থেকে এই নিয়ম কার্যকর হয়েছে৷ আগে থেকে কোনও কঠিন রোগ থাকলেও সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে বিমার সুবিধার বাইরে রাখা যাবে না৷
ক্যান্সার, হূদরোগ, এইচআইভি আক্রান্তদেরও অস্বীকার করা যাবে না৷ গ্রাহকদের সুবিধার জন্য কিস্তিতে প্রিমিয়াম নিতে পারবে সংস্থাগুলি৷ আয়ুর্বেদ, যোগ, ন্যাচারোপ্যাথি, ইউনানি, সিদ্ধা এবং হোমিওপ্যাথির মতো চিকিৎসা ব্যবস্থার ক্ষেত্রে আর্থিক সুবিধাকে কোনও ঊর্ধ্বসীমার মধ্যে বেঁধে রাখতে পারবে না সংস্থাগুলি৷ বিমার অঙ্কের পুরো সুবিধাই দিতে হবে৷
সংশ্লিষ্ট মহলের বক্তব্য, আগের নিয়ম অনুযায়ী ৬৫ বছরের বেশি বয়সিদের নতুন প্রকল্প বিক্রি করা যেত না৷ তার আগে প্রকল্প কেনা থাকলে নবীকরণ করা যেত৷ স্বাস্থ্য বিমায় বয়সভিত্তিক এই নিয়ন্ত্রণ তুলে নেওয়ার উদ্দেশ্য মূলত দু’টি৷ এক, বিমার বাজার আরও বাড়ানো৷ দুই, স্বাস্থ্য পরিষেবার ক্রমবর্ধমান খরচ থেকে নিজেদের সুরক্ষিত রাখার জন্য সব শ্রেণির মানুষের সামনে রাস্তা আরও প্রশস্ত করে দেওয়া৷ বস্তুত, বিজ্ঞপ্তিতে আইআরডিএআই বলেছে, ‘সমস্ত বয়সের মানুষের কাছে যাতে স্বাস্থ্য বিমার সুবিধা পৌঁছয় তা বিমা সংস্থাগুলিকে নিশ্চিত করতে হবে৷ বিশেষত প্রবীণ নাগরিক, পড়ুয়া, শিশুদের জন্য ও মাতৃত্বকালীন সুবিধা সংক্রান্ত প্রকল্প তৈরি করতে হবে তাদের৷’
তবে অনেকে মনে করছেন, এতে বিমার প্রিমিয়াম বাড়তে পারে৷ আর সে ক্ষেত্রে এই পদক্ষেপের মূল উদ্দেশ্য সফল হওয়া কঠিন৷ ন্যাশনাল ইনশিয়োরেন্সের প্রাক্তন ডিরেক্টর সিদ্ধার্থ প্রধান বলেন, ‘পদক্ষেপটি ভাল৷ এর ফলে বিমা ক্ষেত্রের পরিসর বাড়বে৷ তবে সংস্থাগুলি এই নির্দেশ কার্যকর হলে প্রিমিয়ামের অঙ্ক কেমন ধার্য হয়, সে দিকে নজর রাখতে হবে৷ আমার আশঙ্কা, এর ফলে প্রিমিয়াম আরও বাড়বে৷ আইআরডিএআই-কে এই দিকে নজর রাখতে হবে৷ না হলে মূল উদ্দেশ্য সফল হবে না৷’
আইআরডিএআই আরও জানিয়েছে, আগে থেকে কোনও রোগ থাকলেও কোনও ব্যক্তি স্বাস্থ্য বিমার আওতায় আসতে চাইলে তাঁকে প্রকল্পের সুবিধা দিতে হবে৷