চেষ্টা করেও ইন্ড্রাস্ট্রিতে বন্ধুত্ব করতে পারিনি : রাঘব 

দীর্ঘ পঁচিশ বছর আগে সঙ্গীত জগতে তাঁর অভিষেক ঘটেছিল৷ বাংলা আধুনিক গান, রবীন্দ্র সঙ্গীত তথা নজরুলগীতিতে তাঁর অবাধ বিচরন৷ নেপথ্য কন্ঠশিল্পী হিসেবেও তিনি কাজ করেছেন বহু চলচিত্রে৷ শ্রোতাদের উপহার দিয়েছেন অসংখ্য গান৷ “রজতে রাঘব”-এ দৈনিক স্টেটসম্যানের প্রতিনিধি শোভন মন্ডলের মুখোমুখি রাঘব চট্টোপাধ্যায়৷

রজতে রাঘব, সঙ্গীতে দীর্ঘ পঁচিশ বছরের ক্যারিয়ার৷ কেমন ছিল যাত্রাপথ?
এরকম এক কথায় সেটা বলা সম্ভব নয়৷ ভাল-মন্দ, উত্থান-পতন প্রত্যেকটা মানুষের জীবনেই থাকে৷ তবে আমি ইতিবাচক দিকটাকেই প্রাধান্য দিতে পছন্দ করি৷ সাময়িক নেগেটিভিটি আসলেও, সে নিয়ে খুব একটা মাথা ঘামাই না৷ জীবনে কী পায়নি, বা কে আমাকে নিয়ে কী মন্তব্য করল, তা নিয়ে খুব একটা ভাবিনা আমি৷ ভাবলে এগোনো সম্ভব না৷

ইন্ডাস্ট্রির সহকর্মীদের সাথে গায়ক রাঘব চট্টোপাধ্যায়ের সম্পর্কটা ঠিক কেমন? পঁচিশ বছরে কতজন বন্ধু পেয়েছেন?
না, প্রকৃত অর্থে বন্ধুত্ব কারোর সাথে হয়নি৷ যদিও একসময় আমি সে চেষ্টা করে দেখেছি৷ কিন্তু ব্যর্থ হয়েছি৷ আমার ভাবনার সাথে তাঁদের ভাবনা মেলেনি৷ সেই জন্যই সবার সাথে প্রফেশনাল বন্ধুত্ব রাখাটাই শ্রেয় বলে আমি মনে করি৷ তবে হ্যাঁ, সহকর্মীদের মধ্যে সুসম্পর্ক বজিয়ে রাখতে একে অপরের বাড়িতে যাওয়া-আসা কিংবা সৌজন্য বিনিময় চলতে থাকে৷ কিন্তু তাকে “বন্ধুত্ব” অ্যাখ্যা দেওয়াটা যথাযত বলে আমি মনে করি না৷


দীর্ঘদিন ধরেই আপনি রিয়েলিটি শোয়ের বিচারকের গুরু দায়িত্ব পালন করে আসছেন৷ সম্প্রতি, এই  রিয়েলিটি শো -গুলিকে ঘিরে অনেক বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে৷ অনুষ্ঠান গুলির সত্যতা নিয়ে উঠছে প্রশ্ন৷ আপনার অভিজ্ঞতা কী বলে?
আমার ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা থেকে বলি, ধরুন আপনার ভাই কোনও একটা রিয়েলিটি শোয়ে গিয়ে চান্স পেলেন না৷ তর্কের খাতিরে ধরে নিলাম তিনি একজন ভাল গায়ক, কিন্তু ওই মুহূর্তে অত বড় মঞ্চে গান গাইতে গিয়ে হয়তো ঘাবড়ে গিয়েছিলেন৷ ফলে শো -থেকে ডিসকয়ালিফাইড করা হয় তাঁকে৷ এবার সেই ক্ষোভে আপনি যদি সমাজ মাধ্যম জুড়ে রিয়েলিটি শো নিয়ে বিরূপ মন্তব্য ছড়াতে শুরু করেন, তখন স্বাভাবিক ভাবেই মানুষের মনে এই শো -গুলি নিয়ে মিথ্যে সন্দেহের সৃষ্টি হবে৷ কিন্ত্ত সত্যিটা হল, বিচারকেরা সম্পূর্ণ স্বাধীনভাবে বিচার করার সুযোগ পান৷ আর যারা বিচারক হন, যথেষ্ট যোগ্য বলেই তাঁরা ওই আসনে স্থান পান৷

বলিউড সংঙ্গীত জগতে বাঙালিরা রাজ করে এসেছেন আগাগোড়া৷ কিন্তু শ্রেয়া- অরিজিৎ পরবর্তী কেউ তেমনভাবে উঠে আসছেন না কেন? অভাবটা কোথায়?
বাঙালি করেছেন মানে সারাক্ষণ বাঙালিরাই করে যাবেন এমনটা নয়৷ অবাঙালিদের মধ্যেও গুনের অভাব নেই৷ তাঁদের ছোট করে দেখার কোনও কারণ নেই৷ নিশ্চয়ই বাঙালিরা ফিরবে৷ শ্রেয়া আসার অনেক বছর পর অরিজিৎ ইন্ডাস্ট্রিতে আসে৷ সময়ের ব্যবধান সেখানেও ছিল৷ আবারও হয়তো ৫-৭ বছর অপেক্ষা করতে হবে বাঙালির৷

‘রজতে রাঘব’ শীষর্ক এই অনুষ্ঠান নিয়ে কী বার্তা দিতে চান আপনি? কনসার্ট সম্বন্ধিত কোনও তথ্য দিতে চান আমাদের পাঠকদের?

হ্যাঁ অবশ্যই৷ ৩১ অগস্ট রবীন্দ্র সদনে আমাদের অনুষ্ঠান হতে চলেছে৷ ঠিক সাড়ে ৫টায় শুরু হবে কনসার্ট৷ গান গাইবেন কিংবদন্তি সঙ্গীত শিল্পী উষা উত্থুপ এবং পন্ডিত বিক্রম ঘোষ৷ এই ইভেন্ট থেকে অর্জিত অর্থের একটা অংশ দুঃস্থ শিশুদের বিনামূল্যে হার্ট সার্জারির উদ্দেশ্যে প্রদান করা হবে৷ অনুষ্ঠান শেষে মঞ্চেই সেই অর্থরাশি আমরা হৃদয়া ফাউন্ডেশনের হাতে তুলে দেব৷ গতানুগতিক আর পাঁচটা কনসার্টের থেকে কিছুটা ব্যতিক্রমী হতে চলেছে এই অনুষ্ঠান৷ পেক্ষাগৃহে ঢুকে শ্রোতারা নিজেরাই তা বেশ অনুভব করতে পারবেন৷ এছাড়াও, আমার পক্ষ থেকে প্রত্যেকের জন্য থাকছে রির্টান গিফ্ট৷ প্রত্যেক সংঙ্গীত প্রেমীকে আহ্বাবান জানাচ্ছি এই ঐতিহাসিক অনুষ্ঠানের সাক্ষী থাকার জন্য৷ গানের ফিউসনে, কিংবদন্তি শিল্পীদের কন্ঠে রবীন্দ্র সদন মুখরিত হবে ৩১ -এর সন্ধ্যায়৷