দিল্লি, ১৫ এপ্রিল – ইজরায়েল-ইরান যুদ্ধের আবহে সাময়ির ইতি। এর পরই ইরানের হাতে ‘বন্দি’ ভারতীয় নাবিকদের উদ্ধারে তৎপর হয়েছে নয়াদিল্লি । ইতিমধ্যে বিষয়টি নিয়ে ইরানের বিদেশমন্ত্রী হোসেন আমির আবদোল্লাহিয়ানের সঙ্গে কথা বলেছেন এস জয়শংকর। আশ্বাসও মিলেছে বলে দাবি তাঁর। হরমুজ় প্রণালীতে তাদের হাতে আটক জাহাজে থাকা ভারতীয়দের সঙ্গে নয়াদিল্লির প্রতিনিধিদের দেখা করতে দেওয়া হবে। ওই জাহাজে ২৫ জন কর্মীর মধ্যে ১৭ জনই ভারতীয়। জাহাজটি ইরানের হাতে আটক হওয়ার পর থেকেই তেহরানের সঙ্গে যোগাযোগ রেখেছে নয়াদিল্লি। ওই ১৭ নাবিকের সঙ্গে ভারতীয় কূটনীতিকদের দেখা করতে দেওয়া হবে। নিরাপদে তাঁদের পরিবারের কাছে ফেরানো হবে বলে আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। ভারতের বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের সঙ্গে ফোনে কথা হওয়ার পরই ইরানের তরফে ইতিবাচক সাড়া মেলে।
রবিবার রাতে ইরানের বিদেশমন্ত্রী আমির আবদোল্লাহিয়াঁর সঙ্গে ফোনে কথা বলেন জয়শঙ্কর। পশ্চিম এশিয়ার পরিস্থিতি নিয়ে তাঁদের মধ্যে আলোচনা হয়। আটক জাহাজে থাকা ভারতীয়দের মুক্তির বিষয়েও ইরানের বিদেশমন্ত্রীর সঙ্গে কথা হয়েছে বলে জানিয়েছেন জয়শঙ্কর। এক্স হ্যান্ডেলে তিনি লেখেন, ‘‘ইরানের বিদেশমন্ত্রীর সঙ্গে আমার ফোনে কথা হয়েছে। এমএসসি এরিস জাহাজে বন্দি আমাদের ১৭ জন কর্মীর মুক্তি নিয়ে আমরা কথা বলেছি। পশ্চিম এশিয়ার এখনকার পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করলাম। আমি ওঁকে বলেছি, আক্রমণ থেকে বিরত থাকা, শান্তি বজায় রাখা এবং কূটনীতির আশ্রয় নেওয়ার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। আমরা একে অপরের সঙ্গে যোগাযোগ রাখার বিষয়ে সহমত হয়েছি।’’
সোমবার ইরানের বিদেশমন্ত্রী জানান, তাঁরা বন্দিদের সঙ্গে ভারতের সরকারি প্রতিনিধিদের দেখা করতে দেবেন। মালবাহী জাহাজটিকে আরব আমিরশাহি উপকূলে পারস্য উপসাগরের হরমুজ় প্রণালীতে আটক করে ইরান। ইজ়রায়েলের সঙ্গে ওই জাহাজের সম্পর্ক থাকতে পারে, এই সন্দেহে সেটিকে আটক করা হয়। দেখা যায়, জাহাজের কর্মীদের অধিকাংশই ভারতীয়। তেহরানের বক্তব্য, নিজের দেশের প্রতিরক্ষার স্বার্থে তারা জাহাজটিকে আটক করেছে। উপযুক্ত তদন্তের আগে জাহাজ এবং তার বন্দিদের ছাড়া সম্ভব নয়। জাহাজটি সম্পর্কে যাবতীয় তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে তেহরান।
মধ্যপ্রাচ্যে দুদেশের মধ্যে যুদ্ধ-যুদ্ধ পরিস্থিতি তৈরি হচ্ছিল শনিবার থেকে। সেই পরিস্থিতিতে গত ১৩ তারিখ, শনিবার হরমুজ প্রণালীতে তল্লাশি অভিযান চালিয়ে একটি ইজরায়েলি জাহাজকে আটক করে ইরানের বিশেষ বাহিনী ‘রেভোলিউশনারি গার্ডস অ্যারোস্পেস ফোর্স’। ওই জাহাজের ২৫ জন নাবিকের মধ্যে ১৭ জনই ভারতীয় । তাঁরা ইরানের বিশেষ বাহিনীর হাতে ‘বন্দি’ হন। জানা গিয়েছে, ইরানের বিশেষ বাহিনী ভারতগামী এমএসসি অ্যারিস নামে পণ্যবাহী জাহাজটির দখল নেয়। তবে জাহাজের সমস্ত কর্মীর নিরাপদ মুক্তির বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে বলে আশ্বাস দেওয়া হয়েছিল।
ইরানের বিদেশমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলার মাঝেই ১৭ জন ভারতীয় নাবিককে আটকে রাখার প্রসঙ্গও তোলেন বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। ভারতের তরফে জানানো হয়েছে, বিদেশমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলার পরই ইরান ভারতীয় আধিকারিকদের আটক হওয়া নাবিকদের সঙ্গে দেখা করতে দিতে রাজি হয়েছে। শীঘ্রই যাতে ভারতীয় নাবিকদের ছেড়ে দেওয়া হয়, তার প্রচেষ্টাও চালাচ্ছে ভারত সরকার।