বর্তমানে বিশ্বে পঞ্চম। পঞ্চম থেকে একলাফে তৃতীয় স্থানে পৌঁছবে ভারতের অর্থনীতি। তাও মাত্র ৩ বছরে। আগামী ৩ বছরের মধ্যেই বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম অর্থনীতিতে পরিণত হবে ভারত, এমনটাই জানাল আন্তর্জাতিক অর্থ ভান্ডার (আইএমএফ)। সংস্থার মুখ্য অর্থনীতিবিদ গীতা গোপীনাথ শুক্রবার জানিয়েছেন, ‘ভারতের আর্থিক বৃদ্ধির হার প্রত্যাশার চেয়েও বেশি, ২০২৭ সালের মধ্যেই ভারতের অর্থনীতি বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম হবে।’ ‘ইন্ডিয়া টুডে’-কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে আইএমএফ-এর প্রথম মহিলা মুখ্য অর্থনীতিবিদের দাবি, আর মাত্র তিন বছরে আমেরিকা এবং চিনকে টেক্কা দিয়ে ভারত পরবে এই বিজয়ের মুকুট ।
প্রসঙ্গত, এর আগে গত ফেব্রুয়ারিতে ব্যাঙ্কিং বিনিয়োগ সংস্থা জেফ্রিসের অর্থনীতি মূল্যায়নের রিপোর্টে বলা হয়েছিল, ২০২৭ সালের মধ্যে জাপান এবং জার্মানিকে টপকে বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম অর্থনীতিতে পরিণত হবে ভারত। এবার সেই দাবিকে কার্যত মেনে গীতা শুক্রবার বলেন, ‘ভারতের আর্থিক বৃদ্ধির প্রভাবগুলি এই অর্থবর্ষের জন্য আমাদের পূর্বাভাসকে প্রভাবিত করছে৷ অন্য কারণটি হল, আমরা বিভিন্ন তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখছি, ভারতীয়দের ব্যক্তিগত খরচের হার (ভোগ্যপণ্য কেনার নিরিখে) আবার বেড়ে গিয়েছে।’
ব্লুমবার্গের একটি রিপোর্ট অনুযায়ী, ২০২১ সালের শেষ ত্রৈমাসিকের হিসাবে ব্রিটেনকে টপকে বিশ্বের পঞ্চম বৃহত্তম অর্থনীতি হিসাবে উঠে এসেছে ভারত। লক্ষ্য ছিল ৫ ট্রিলিয়ন ডলারের অর্থনীতি। করোনার ধাক্কা সেই লক্ষ্যমাত্রা থেকে অনেকটাই পিছিয়ে দিয়েছে ভারতকে। কিন্তু সার্বিকভাবে এখনও দ্রুতগতিতে এগোচ্ছে দেশের অর্থনীতি। বস্তুত, করোনা, নোট বাতিল, জিএসটির ধাক্কা কাটিয়ে উঠে অন্তত বিশ্বের অন্যান্য দেশগুলির তুলনায় দ্রুত এগোচ্ছে অর্থনীতি।
এই সাফল্যের মূল কৃতিত্ব দেশের ম্যানুফ্যাকচারিং ইন্ডাস্ট্রির৷ সেই সঙ্গে উপভোক্তার সংখ্যাও বেড়েছে এবং তাঁদের ক্রয়ক্ষমতাও বেড়েছে৷ এই মুহূর্তে অর্থনীতির আকারের নিরিখে ভারতের উপরে রয়েছে শুধু আমেরিকা, জার্মানি, চিন এবং জাপান।
গত জুলাই মাসে আইএমএফ প্রকাশিত ‘ওয়ার্ল্ড ইকনমিক আউটলুক’ শীর্ষক রিপোর্টে বলা হয়েছিল, ২০২৪-২৫ অর্থবর্ষে ভারতে জিডিপি (মোট অভ্যন্তরীণ উৎপাদন) বৃদ্ধির হার ৭ শতাংশ ছুঁতে পারে।
তবে এক বছর আগে ২০২৩ সালে লালকেল্লায় স্বাধীনতা দিবসের ভাষণে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি আগেই জানিয়েছিলেন ভারতের এই জয়ের কথা। তিনি সেদিন বলেছিলেন ‘২০২৭-এর মধ্যেই জাপান এবং জার্মানিকে ছাড়িয়ে তৃতীয় বৃহত্তম শক্তিতে পরিণত হবে ভারত। আমাদের লক্ষ্য, ২০৪৭ সালে স্বাধীনতার শতবর্ষে পদার্পনের আগে ৩৫ লক্ষ কোটি ডলারের অর্থনীতি হয়ে ওঠা।’