• facebook
  • twitter
Saturday, 29 March, 2025

পেঁয়াজ রপ্তানি থেকে ২০ শতাংশ শুল্ক তুলে নিল ভারত, লাভ হবে বাংলাদেশের

চলতি বছরে রবি শস্যের সময় দেশে পেঁয়াজ উৎপাদন অনেকটাই বৃদ্ধি পেয়েছে। গত বছর যা ছিল ১.৯২ কোটি টন, এবার সেই উৎপাদন হয়েছে ২.২৭ কোটি টন।

প্রতীকী চিত্র

আগামী ১ এপ্রিল থেকে পেঁয়াজ রপ্তানি থেকে শুল্ক তুলে নিয়েছে ভারতের রাজস্ব বিভাগ। ২০ শতাংশ রপ্তানি শুল্ক বা এক্সপোর্ট ডিউটি তুলে দিল কেন্দ্র। ২০২৪ সালে ১৩ সেপ্টেম্বর থেকে পেঁয়াজের রপ্তানিতে ২০ শতাংশ শুল্ক ধার্য করা হয়েছিল। বাজারে পেঁয়াজের দাম কমার জেরেই এই সিদ্ধান্ত।

এ বিষয়ে এক বিজ্ঞপ্তি জারি করে কনজ়িউমার অ্যাফেয়ার্স মন্ত্রক জানিয়েছে, ‘পেঁয়াজের উৎপাদন বৃদ্ধি হওয়া এবং দাম নিয়ন্ত্রণে আসায় স্বস্তি ফিরেছে। ২০২৩ সালের অগস্ট থেকে পেঁয়াজের উৎপাদন কমে যাওয়ায় দাম বেড়েছিল। সেজন্য তখন থেকেই রপ্তানি শুল্ক চাপানো হয়েছিল।’ প্রায় দেড় বছর রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা থাকা সত্ত্বেও ভারত থেকে পেঁয়াজের রপ্তানিতে তেমন ভাটা আসেনি। ২০২৩-২৪ অর্থবর্ষে ১৭.১ লক্ষ টন পেঁয়াজ রপ্তানি করা হয়েছিল। ২০২৪-২৫ অর্থবর্ষে ১৮ মার্চ পর্যন্ত তা হয়েছে ১১.৬ লক্ষ টন।

প্রসঙ্গত এর আগে দেড় বছরেরও বেশি সময় ধরে পেঁয়াজের রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা জারি ছিল। ২০২৩ সালের অক্টোবর মাস থেকে এই নিষেধাজ্ঞা জারি হয়। তখন পেঁয়াজের রপ্তানিতে রাশ টানার পদক্ষেপ শুরু করেছিল কেন্দ্র। ২০২৩ সালের ৮ ডিসেম্বর থেকে ২০২৪ সালের ৩ মে পর্যন্ত পেঁয়াজের রপ্তানিতে এই নিষেধাজ্ঞা জারি ছিল। এবার সেই নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হয়েছে। ধার্য হয়েছিল ২০ শতাংশ শুল্ক। এবার সেটাও প্রত্যাহার করা হল।

চলতি বছরে রবি শস্যের সময় দেশে পেঁয়াজ উৎপাদন অনেকটাই বৃদ্ধি পেয়েছে। গত বছর যা ছিল ১.৯২ কোটি টন, এবার সেই উৎপাদন হয়েছে ২.২৭ কোটি টন। ভারতে সারা বছর যে পরিমাণ পেঁয়াজ উৎপাদিত হয় তার ৭০ থেকে ৭৫ শতাংশই হয় রবি শস্যের সময়ে। হিসেব অনুযায়ী, গত বছরের থেকে রবি ফসলের সময়ই ১৮ শতাংশ বেশি পেঁয়াজ উৎপাদিত হয়েছে। এই বাড়তি উৎপাদনের জেরে পাইকারি বাজারে পেঁয়াজের দাম যেমন কমেছে, তেমনি খুচরো বাজারেও যথেষ্ট সস্তা হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে পেঁয়াজের উপর রপ্তানি শুল্ক তুলে দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন মহারাষ্ট্রের কৃষকরা। মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফড়নবিশ বিষয়টি নিয়ে কেন্দ্রকে একটি চিঠি দিয়েছেন।

এদিকে এমন একসময় ভারত এই রপ্তানি শুল্ক প্রত্যাহার করল, যখন বাংলাদেশের বাজারে পেঁয়াজের দাম অনেকটাই কম। অতীতে দেখা গিয়েছে, বাংলাদেশের বাজারে যখন পেঁয়াজের দাম কমতে শুরু করে, তখন ভারতীয় পেঁয়াজ আমদানির কারণে দাম আরও কমে যায়। তাতে কৃষকরা মার খান। আবার ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানির পর দেশের বাজারে পেঁয়াজের বাড়তি দাম কমে যায় বলে সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে।

উল্লেখ্য, বর্তমানে পেঁয়াজ রপ্তানিতে বিশ্বের মধ্যে প্রথম সারিতে রয়েছে ভারত। গত দেড় বছরে ভারতের নিষেধাজ্ঞার জেরে পাকিস্তান থেকে পেঁয়াজ রপ্তানির পরিমাণ বেড়েছে। ভারতের ৪৮ শতাংশ রপ্তানি হয় বাংলাদেশে। এছাড়া ভারতের থেকে মালয়েশিয়াও প্রচুর পরিমাণে পেঁয়াজ কেনে। পেঁয়াজ রপ্তানির সঙ্গে জড়িতদের অভিমত রপ্তানি শুল্ক উঠে যাওয়ায় এই দুই দেশেরও যথেষ্ট সুবিধা হবে।