ভারতে একদিনেই ৬০১ জন করোনায় আক্রান্ত হওয়ায় দেশে আক্রান্তের সংখ্যা তিন হাজারে ঠেকেছে। মৃত্যু হয়েছে ৭৫ জনের। সারা বিশ্বে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে দশ লাখ। বিশ্বে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে পঞ্চাশ হাজার মানুষের। মার্কিন দেশেই মৃত দেড় হাজার।
দক্ষিণ দিল্লির তাবলিঘি জামাতের জমায়েতে যোগদানকারী একহাজার মানুষকে পরীক্ষার পর ভাইরাসে আক্রান্ত বলে জানিয়েছে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য দফতর। জমায়েতে যোগদানকারী করোনা সংক্রমণ নিয়ে বহু মানুষ দেশের সতেরোটি রাজ্যে ছড়িয়ে পড়ায় স্বাস্থ্যদফতর বেশ উদ্বিগ্ন।
মহারাষ্ট্রে আক্রান্তের সংখ্যা ৪৯০, মৃতের সংখ্যা ২৬। তামিলনাড়ুতে শুক্রবার নতুন করে একশো জনের আক্রান্ত হওয়ার খবর পাওয়া গিয়েছে। এদের অধিকাংশই নিজামুদ্দিনের জমায়েতে ছিল বলে খবর।
উত্তরপ্রদেশ সরকার তাবলিঘি জামাতের বেশ কয়েকজন সদস্যের বিরুদ্ধে জাতীয় নিরাপত্তা আইনে মামলা দায়ের করেছে। এদের বিরুদ্ধে গাজিয়াবাদ হাসপাতালে পরীক্ষার সময় নার্সদের ওপর হামলার অভিযোগ রয়েছে। সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করার নির্দেশ দেওয়ার সময় তাদের মানবতার শত্রু বলে উল্লেখ করেন মুখ্যমন্ত্রী আদিত্যনাথ।
কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রক অবস্থা মোকাবিলায় ১১ কমিটি তৈরি করেছে। এদিন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি কমিটি গুলি এক বৈঠকে পৌরোহিত্য করে চিকিৎসক-নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীদের যাবতীয় সরঞ্জাম পর্যাপ্ত পরিমাণে সরবরাহ করার নির্দেশ দেন।
স্বাস্থ্যমন্ত্রক দেশে ১৪’টি জায়গায় সর্বাধিক সংখ্যক সংক্রমণের জন্য চিহ্নিত করেছে। এগুলি হল দিল্লি’র দিলশাদ গার্ডেন এবং নিজামুদ্দিন, উত্তর প্রদেশের নয়ডা, রাজস্থানের ভিলওয়ারা, কেরলের কাশারগড়, পাঠানামথিট্টা এবং কন্নুর, মহারাষ্ট্রের মুম্বই, যাভতমল এবং পুনে, মধ্যপ্রদেশের ইন্দোর এবং জব্বলপুর, গুজরাতের আহমেদাবাদ এবং লাদাখ।
দিল্লির স্যার গঙ্গারাম হাসপাতালে ১০৮ স্বাস্থ্যকর্মীকে করোনা সংক্রমের জন্য কোয়রেন্টাইনে রাখা হয়েছে। এঁরা সকলেই দুই করোনা আক্রান্ত রোগির সংস্পর্শে এসেছিলেন। মুম্বইয়ের তথা এশিয়ার বৃহত্তম বস্তি ধারাভি’তে দশলাখ লোকের বাস। পাঁচ কিলোমিটার জুড়ে বিস্তৃত এই বস্তিতে সত্তর শতাংশ মানুষই সাধারণ শৌচালয় ব্যবহার করেন। এখানে করোনা সংক্রমণ হওয়ায় প্রশাসনের ঘুম উড়ে গিয়েছে।
কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রক থেকে সকলকেই মাস্ক ব্যবহার করার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। বিশ্বের অধিকাংশ দেশেই ঘরে তৈরি মাস্ক ব্যবহারের ওপর জোর দেওয়া হচ্ছে। এগুলি স্বচ্ছতা রক্ষা করার ক্ষেত্রে অনেক বেশি কার্যকরী বলে মন্তব্য করা হয়েছে।
করোনা মোকাবিলায় ওয়ার্ল্ড ব্যাঙ্ক ২৫’টি দেশের জন্য ১.৯ বিলিয়ন মার্কিন ডলার সাহায্যের কথা ঘোষণা করেছে। এর মধ্যে ১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ভারতের জন্য দেওয়া হচ্ছে চিকিৎসা সরঞ্জাম সংগ্রহ, নতুন আইসোলেশন কেন্দ্র ইত্যাদি স্থাপনের জন্য।