দিল্লি, ২৯ জুন – আমেরিকার ধর্মীয় স্বাধীনতা রিপোর্ট, ২০২৩-এ ভারতে ক্রমবর্ধমান ঘৃণাভাষণ এবং ধর্মান্তকরণ-বিরোধী আইনের নিন্দার পরে শনিবার সরকারি তরফ পাল্টা জবাব দিল ভারত। বিদেশ মন্ত্রকের পক্ষ থেকে একটি দীর্ঘ বিবৃতি দিয়ে নিশানা করা হয়েছে ওয়াশিংটনকে। সম্প্রতি মার্কিন বিদেশ সচিব অ্যান্টনি ব্লিংকেন হোয়াইট হাউসে সাংবাদিক বৈঠক ডেকে বলেন, ‘ ভারতে ঘৃণা ভাষণ বাড়ছে। সে দেশে সংখ্যালঘুরা বিপন্ন। তাদের উপাসনাস্থল ভেঙে দিয়ে ধর্মাচরণের অধিকার কেড়ে নেওয়া হচ্ছে।’ মোদি সরকারের এমন সন্ধিক্ষণে আমেরিকায় স্বয়ং বিদেশ সচিবের ভারত সম্পর্কে এমন নেতিবাচক মন্তব্য মোদি সরকারকে রীতিমতো চাপে ফেলে দেয় ।
প্রসঙ্গত, আমেরিকার বিদেশসচিব অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন শুক্রবার বলেছিলেন, ‘‘ভারতে আমরা ধর্মান্তরণ-বিরোধী আইন, ঘৃণাভাষণ, সংখ্যালঘুদের ধর্মস্থান ও বাসগৃহের উপরে হামলার ঘটনা বেড়ে চলতে দেখছি।’’ এটি উদ্বেগজনক বলেও মন্তব্য করেন তিনি। বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্রের পাল্টা বক্তব্য ছিল , “২০২৩ সালে ভারত সরকারি ভাবে আমেরিকার বিভিন্ন ঘটনা নিয়ে জানতে চেয়েছিল। সেগুলির মধ্যে রয়েছে সেই দেশের ঘৃণাসঞ্জাত অপরাধ, জাতিবিদ্বেষ, ভারতীয় এবং অন্যান্য সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের উপর আক্রমণ, তাদের প্রার্থনার জায়গাকে আক্রমণ করা, হিংসা, আইনপ্রয়োগকারী কর্তৃপক্ষের অন্যায্য ব্যবহার, চরমপন্থা এবং সন্ত্রাসবাদকে রাজনৈতিক পরিসর দেওয়া।’’
খলিস্তানপন্থী নেতা গুরপতবন্ত সিংহ পন্নুনকে হত্যার চেষ্টা এবং তাতে ভারতের ‘সংযোগের’ বিষয়ে দিল্লি ঠিক ভাবে তদন্ত করুক, এমন কথা বলেছেন আমেরিকার আর এক কর্তা কার্ট ক্যাম্পবেল। এই বিষয়টিকেও বিশেষ গুরুত্ব না দিয়ে রণধীর বলেছেন, “উচ্চপর্যায়ের কমিটি গঠন করা হয়েছে। যখন সমস্ত তথ্য সামনে আসবে, প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে ।”
মানবাধিকার’ সংক্রান্ত বিষয়ে প্রত্যেক বছর গোটা বিশ্বের সার্বিক চিত্র তুলে ধরে রিপোর্ট প্রকাশ করে মার্কিন বিদেশ মন্ত্রক। সাধারণত মন্ত্রকের কোনও আধিকারিকই এই রিপোর্ট প্রকাশ করে থাকেন। তাৎপর্যপূর্ণভাবে স্বয়ং মার্কিন বিদেশ সচিব এবার সেটি প্রকাশ করেন। মোদি সরকার অতীতেও মার্কিন রিপোর্টের সত্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। মোদি প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর ভারতে সংখ্যালঘুদের উপর নির্যাতনের ঘটনা কয়েক গুণ বেড়েছে বলে আগেও একাধিকবার সরব হয় মার্কিন বিদেশ মন্ত্রক। যদিও ডোনাল্ড ট্রাম্পের সময় ভারত তুলনামূলকভাবে স্বস্তিতে ছিল। জো বাইডেন প্রেসিডেন্ট হওয়ার পরে বিদেশ নীতিতে বড় ধরনের পরিবর্তন আনেন। দেশে দেশে গণতন্ত্র ও মানবাধিকার রক্ষায় তাঁর প্রশাসন কাজ করবে বলে ঘোষণা করেন বাইডেন। সেই মতো সব দেশের প্রতিই মার্কিন বিদেশ মন্ত্রকের তীক্ষ্ণ নজর রয়েছে।