• facebook
  • twitter
Saturday, 29 March, 2025

হাসিনাবিরোধী বিক্ষোভের খবর ছিল ভারতের কাছে: জয়শঙ্কর

ভারত ছাড়াও বাংলাদেশের ভিতরের টালমাটাল পরিস্থিতি সম্পর্কে বেশ কিছু নেতৃস্থানীয়ও এই বিষয়ে অবগত ছিলেন বলে দাবি করেন জয়শঙ্কর।

ফাইল চিত্র

ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার আগে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে বাংলাদেশের মানুষের মধ্যে যে ক্ষোভ পুঞ্জীভূত হয়েছিল, সে সম্পর্কে অবগত ছিল ভারত। তবে এই বিষয়ে ভারত কোনও হস্তক্ষেপ করতে পারেনি বলে দাবি করেছেন দেশের বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। শনিবার বিদেশ মন্ত্রকের পরামর্শদাতা কমিটির কাছে এই তথ্য জানিয়েছেন বিদেশমন্ত্রী। সর্বভারতীয় এক সংবাদমাধ্যম সূত্রে এমনটাই জানা গিয়েছে। বিদেশমন্ত্রী কমিটির কাছে দাবি করেন, হাসিনাকে প্রভাবিত করার মতো ‘প্রয়োজনীয় প্রভাব’ তাঁদের ছিল না। তাঁরা শুধুমাত্র ‘পরামর্শ’ দিতে পারতেন। কংগ্রেসের কেসি বেণুগোপাল, মণীশ তিওয়ারি, উদ্ধব সেনার প্রিয়াঙ্কা চতুর্বেদীরা এই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।

ওই সূত্রে জানা গিয়েছে, ভারত ছাড়াও বাংলাদেশের ভিতরের টালমাটাল পরিস্থিতি সম্পর্কে বেশ কিছু নেতৃস্থানীয়ও এই বিষয়ে অবগত ছিলেন বলে দাবি করেন জয়শঙ্কর। এই প্রসঙ্গে তিনি রাষ্ট্রসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক বিভাগের প্রধান ভলকার তুর্কের সাম্প্রতিক মন্তব্যের কথা উল্লেখ করেছেন। তিনি জানিয়েছেন, রাষ্ট্রসংঘ হাসিনা-বিরোধী বিক্ষোভের সময় বাংলাদেশের সেনাবাহিনীকে সতর্ক করেছিল, যদি তারা নিরস্ত্র বিক্ষোভকারীদের উপর হামলা চালায়, তাহলে তাদের শান্তিরক্ষা মিশন থেকে নিষিদ্ধ করা হতে পারে।

শনিবারের বৈঠকে চিনকেও তোপ দেগেছেন জয়শঙ্কর। তাঁর দাবি, বেজিং বাংলাদেশের এই পরিস্থিতির নেপথ্যে ছিল। তাঁর বক্তব্য, বাংলাদেশে ‘বহিরাগত শক্তি’র ভূমিকা রয়েছে। তবে তিনি বলেছেন, চিনকে তিনি ‘প্রতিপক্ষ’ নয়, বরং ‘প্রতিযোগী’ হিসেবে দেখেন। শনিবারের এই বৈঠকে বাংলাদেশ ছাড়াও মায়ানমার, মালদ্বীপ, শ্রীলঙ্কা, ও পাকিস্তানের পরিস্থিতি আলোচনার অন্যতম বিষয় হয়ে ওঠে বলে বলা হয়েছে। কমিটির সদস্যদের সঙ্গে জয়শঙ্কর সার্কের ভবিষ্যত নিয়েও আলোচনা করেন জয়শঙ্কর।

উল্লেখ্য, গত ৫ আগস্ট দেশে গণ অভ্যুত্থানের জেরে ক্ষমতাচ্যুত হতে হয় শেখ হাসিনাকে। প্রধানমন্ত্রিত্ব ছেড়ে তিনি ভারতে চলে আসেন। আপাতত দিল্লির গোপন আস্তানায় ভারতের কূটনৈতিক আশ্রয়ে রয়েছেন মুজিবকন্যা তথা আওয়ামী লীগের নেত্রী। মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার ইন্টারপোলের মাধ্যমে হাসিনাকে দেশে ফেরানোর আবেদনের পাশাপাশি বহুবার দিল্লির উপর চাপ সৃষ্টি করেছে। গত বছরের শেষে ঢাকায় গিয়েছিলেন ভারতের বিদেশসচিব বিক্রম মিস্রি। যদিও এরপরেও অবশ্য দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের জট কাটেনি।

আগামী ২ এপ্রিল থেকে ৪ পর্যন্ত থাইল্যান্ডের ব্যাঙ্ককে বিমস্টেক শীর্ষ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। সেখানে যোগ দেওয়ার কথা রয়েছে মোদীর। সম্মেলনে যোগ দেওয়ার কথা ইউনুসেরও। ব্যাঙ্ককে নরেন্দ্র মোদী এবং ইউনূসের মধ্যে একান্ত বৈঠক চেয়ে ঢাকা দিল্লির কাছে আর্জি জানালেও, এখনও এই বিষয়ে নিজেদের স্পষ্ট অবস্থান জানায়নি ভারত। শুক্রবার সাংবাদিক সম্মেলনে বিদেশমন্ত্রকের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়ালকে এই বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘আপাতত এই বিষয়ে বলার মতো আমার কাছে কোনও তথ্য নেই।’