২০২৫ এই ঘনাচ্ছে চিন-ভারত যুদ্ধের আশঙ্কা, আশঙ্কা বিশেষজ্ঞদের

দিল্লি, ১৩ মার্চ– ২০২৫ যুদ্ধের আবহ নিয়ে আসছে ভারতের জন্য৷ এমনটাই দাবি ভূরাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের৷ তাদের পূর্বাভাস বলছে ভারতের সঙ্গে ফের সংঘাতের পথে হাঁটতে প্রস্তুত চিন৷ আর এর সূচনা হবে সামনের বছর ২০২৫ এই৷ ১৯৬২ সালের পর দ্বিতীয়বার চিন-ভারত যুদ্ধের আশঙ্কা তৈরি হচ্ছে৷ ভূরাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা যুদ্ধের পূর্বাভাস দিয়ে দাবি করেছেন, হিমালয় পার্বত্য এলাকায় ভারতের ফের একবার বৃহত্তর সংঘাতের পথে এগিয়ে আসছে আগ্রাসী চিন৷ সেই সংঘাতের সময় আর বেশি দেরী নেই৷ আগামী বছর অর্থাৎ ২০২৫ সাল থেকে এই আবহ তৈরি হচ্ছে বলে তাঁদের মত৷
তবে চিন-ভারত যুদ্ধের এই পূর্বাভাস মানতে নারাজ ভারতের সেনাপ্রধানরা৷ এই মতের বিরোধী প্রাক্তন এক সেনাপ্রধান জানিয়েছেন, চিন যদি তার আগ্রাসী মনোভাব নিয়ে ভারতের সঙ্গে যুদ্ধে এগিয়ে আসে তার আগে তাকে হাজার বার ভাবতে হবে৷ কারণ দুটি সময়ের মধ্যে বিরাট ফারাক আছে৷ আধুনিক ভারতের সমরবহর তখনকার মতো নেই৷ ফলে তাকে দাবিয়ে রাখা সহজ নয়৷ তাছাড়া তাইওয়ান-সমস্যার কাঁটা চিনকে দ্বিতীয় কোনও যুদ্ধের পথে হাঁটতে দেবে না বলেই মত প্রাক্তন সেনাপ্রধানের৷
ভারতের আরেক প্রাক্তন সেনাপ্রধান জেনারেল এমএম নারায়ণের মতে, পূর্ব লাদাখ এবং কারাকোরাম গিরিপথের উপর চিনের দীর্ঘকালের নজর রয়েছে৷ চিন-পাকিস্তান অর্থনৈতিক করডরের পক্ষে এই দুই এলাকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ৷ কিন্ত্ত ওরা যদি ভেবে থাকে আমরা ওদের হাতে পাক অধিকৃত কাশ্মীর, তিব্বত তুলে দেব, তাহলে তা হবে বিরাট ভুল৷ কারণ ১৯৬২ সালের ভারতের সঙ্গে বর্তমান প্রজন্মের ভারতের আকাশ-পাতাল তফাত রয়েছে৷
তবে সম্প্রতি চিনের প্রতিরক্ষা খাতে ঢালাও খরচ কিন্তু অন্য কথাই বলছে৷ চলতি বছরে চিন প্রতিরক্ষা খাতে ৭.২ শতাংশ বরাদ্দ বৃদ্ধি করেছে৷ চিনের আপাতত লক্ষ্য তাইওয়ান দখল করে দেশের মূল ভূখণ্ডের সঙ্গে যুক্ত করা৷ একটি রিপোর্টে চিনের এই মনোভাবের কথা প্রকাশও পেয়েছে৷ চিন জানিয়েছে, স্বাধীনতার নামে তাইওয়ানের ‘বিচ্ছিন্নতাবাদী’ কাজকারবার এবং তার বিদেশি মদতদাতাদের বরদাস্ত করা হবে না৷
অন্যদিকে, ভূরাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের পূর্বাভাসকে অনেকটাই গ্রহণ করছে তবে দ রয়্যাল ইউনাইটেড সার্ভিসেস ইনস্টিটিউট ‘ওয়ার ক্লাউডস ওভার দি ইন্ডিয়ান হরাইজন?’ শীর্ষক একটি নিবন্ধ৷ যেখানে বলা হয়েয়ে, ভারতের উত্তর-পশ্চিম হিমালয় পার্বত্য এলাকার পূর্ব লাদাখে যুদ্ধের মেঘ ঘনাচ্ছে৷ ২০২৫ সাল থেকে এই সম্ভাবনা আরও জটিল আকার ধারণ করবে এবং যুদ্ধ বাধতে পারে ২০৩০ সালের মধ্যে যে কোনও সময়ে৷
চিন বরারবই ভারতের পূর্ব লাদাখকে কুক্ষিগত করতে চায়৷ কারণটা জ্বালানি সংক্রান্ত নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করা৷ ইরান থেকে তেল ও গ্যাস পাইপলাইনের মাধ্যমে দেশের পশ্চিম প্রান্তের জিনজিয়াং অঞ্চলের কাশগরের বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলে নিয়ে আসতে চায় চিন৷ সেই কারণেই আগেই পাকিস্তানের ওপর নানান দেনা চাপিয়ে করদ দেশে পরিণত করতে প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছে চিন৷ যাতে পাকিস্তানের জমির উপর দিয়ে চিন-পাকিস্তান অর্থনৈতিক করিডরের মাধ্যমে এই জ্বালানি নিয়ে আসার পরিকল্পনা বাস্তবায়িত করতে পারে বেজিং৷ সে কারণে ভারতের হাতে থাকা লাগোয়া লাদাখ চিনের কাছে ঝুঁকির বিষয় হয়ে থাকবে৷ আর সে কারণেই চিনা সেনার অনুপ্রবেশের সমূহ সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে৷