গুয়াহাটি, ১৯ জুন – টানা বৃষ্টিতে বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হল অসমে। ইতিমধ্যে ৩০ জনের মৃত্যুর খবর মিলেছে। ১৫ টি জেলার ১.৬১ লক্ষ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত। করিমগঞ্জ জেলার বদরপুর এলাকায় ভূমিধসের ফলে একজন মহিলা ও তার তিন মেয়ে এবং তিন বছরের একটি ছেলেসহ পাঁচজন নিহত হয়েছে। নিহতরা হলেন- রায়মুন নেসা, (৫৫) ও তার মেয়ে সাহিদা খানম (১৮), জাহিদা খানম (১৬) ও হামিদা খানম (১১)। নিহত তিন বছরের শিশু মহিমুদ্দিনের ছেলে মেহেদী হাসান।
মঙ্গলবার রাতে গাইনাচোড়া গ্রামে এই ভূমিধসের ঘটনা ঘটে। মে মাসে ঘূর্ণিঝড় রেমাল রাজ্যে আঘাত হানার পর থেকে ভূমিধসের মৃত্যু আসামে মোট মৃত্যুর সংখ্যা ৩০ এ নিয়ে এসেছে। একাধিক জায়গায় আটকে পর্যটক-সহ বহু মানুষ, বিপর্যস্ত জনজীবন। বৃষ্টিতে ধসের কারণে রাস্তা বন্ধ। রাজ্যের একাধিক জেলা প্লাবিত। সাধারণ মানুষের মাথা গোঁজার জায়গাও নেই। ঘূর্ণিঝড় ‘রেমাল’ তাণ্ডব চালানোর পর থেকে পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে অসমে। আগামী কয়েকদিনে মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। বিভিন্ন এলাকায় ধসের নীচে বহু মানুষ চাপা পড়ে থাকতে পারেন বলে অনুমান করা হচ্ছে। এনডিআরএফ-এর দল উদ্ধারকাজ চালালেও কতজনকে জীবিত অবস্থায় উদ্ধার করা সম্ভব হবে তা এখনই বোঝা যাচ্ছে না।
আসাম স্টেট ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট অথরিটিসূত্রে খবর, করিমগঞ্জ সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত জেলা, যেখানে ১,৫২,১৩৩ জন মানুষ জলবন্দি ।প্রবল বৃষ্টি এবং বন্যায় প্রায় ১,৪০০ হেক্টর চাষের জমি জলের তলায় চলে গেছে। কমপক্ষে ৫৪,৮৭৭ গবাদি পশুর মৃত্যু হয়েছে। ভেসে গেছে বহু বাড়ি, দোকানপাট। ৫১১৪ জন মানুষ ৪৩ টি ত্রাণ শিবিরে আশ্রয় নিয়েছেন। বেড়িবাঁধ, রাস্তা এবং সেতু-সহ ক্ষতির পরিমাণ আরও বেড়েছে। কামপুরের কপিলি নদী বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে বলে জানা গেছে, যা আরও প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা তৈরি করছে।
এখনও পর্যন্ত বিপদসীমার উপর দিয়ে বইছে বরাক, কোপিলি ও কোশিয়ারা নদীর জল।বিস্তীর্ণ এলাকা জলের তলায় থাকায় উদ্ধারকাজেও অসুবিধা হচ্ছে। নলবাড়ি, তামূলপুর, উদলগুড়ি, দারাং, ধেমাজি সহ একাধিক এলাকায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।