ত্রিপুরা পুরভোটে বড় জয় বিজেপির। প্রায় ৯৯ শতাংশ আসন জিতে নিয়েছে গেরুয়া শিবির। তবে, জয়ের পরও গেরুয়া শিবিরকে অস্বস্তিতে রাখবে রাজ্য রাজনীতিতে তৃণমূলের উল্কার গতিতে তৃণমূলের উত্থান। প্রথমবার লড়েই রাজ্যের অধিকাংশ পুরসভায় প্রধান বিরোধী দল হিসাবে উঠে এসেছে তৃণমূল।
শেষ পাওয়া খবর অনুযায়ী, আগরতলার ২৫ টি আসনে দ্বিতীয় স্থানে উঠে এসেছে ঘাসফুল শিবির। এত অল্প সময়ের মধ্যে অন্য একটি রাজ্যে গিয়ে সংগঠন গড়ে তুলে একাধিক পুরসভায় দ্বিতীয় স্থানে উঠে আসা যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।
ত্রিপুরার ৩৩৪ টি ওয়ার্ডের মধ্যে একপেশে ভাবে ৩২৯ টি আসন জিতে নিয়েছে বিজেপি। বামেরা ৩ টি, তৃণমুলের ঝুলিতে ১ টি এবং প্রদ্যোৎ মাণিক্য দেববর্মনের টিপ্পা মোথা পেয়েছে একটি ওয়ার্ড। ১৩ টি পুরসভা এবং ৬ টি নগর পঞ্চায়েতই গেরুয়া শিবিরের দখলে এসেছে।
এ প্রসঙ্গে বলে রাখা দরকার, বিনা প্রন্জিন্দিতায় ১১২ টি আসন জিতেছে বিজেপি। যা দেখে ওয়াকিবহাল মহল বলছে, গত কয়েক বছরে ত্রিপুরায় বামেদের সংগঠন ধূলিসাৎ করে দিয়েছে গেরুয়া শিবির।
ফলস্বরূপ একপেশেভাবে জয় পেয়েছে তারা। এই জয়ে উচ্ছ্বসিত ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব দেব বলছেন, ‘এটা ত্রিপুরার মানুষের জয়। সংখ্যালঘু ও সংখ্যাগুরু ভাগাভাগি মানেনি তাঁরা। বহু মানুষ এ রাজ্যকে বদনাম করতে চেয়েছে, তাদের যোগ্য জবাব দিল ত্রিপুরার মানুষ।
কিন্তু তাৎপর্যপূর্ণভাবে ত্রিপুরার রাজনীতিতে উত্থান হয়েছে তৃণমূলের। একাধিক ওয়ার্ডে বামেদের হারিয়ে দ্বিতীয় স্থানে উঠে এসেছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দল। নির্বাচনী ফলাফল বলছে, আগরতলার ৫১ টি ওয়ার্ডের মধ্যে ২৫ টিতে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে তৃণমূল। বাকিগুলিতে বিজেপিকে লড়াই দিয়েছে সিপিএম।
আমবাসায় একটি ওয়ার্ডে জয় পেয়েছে তৃণমূল। একটি ওয়ার্ড পেয়েছে বামেরা ও একটি আসন পেয়েছে টিপ্পা মোথা। সার্বিকভাবে সবকটি পুরসভায় গড়ে ২৪ শতাংশের কাছাকাছি ভোট পেয়েছে ঘাসফুল শিবির। আমবাসায় তাঁরা ভোট পেয়েছে ২৮ শতাংশের বেশি।
আমবাসায় তৃণমূলের প্রাপ্ত ভোট ২৭ শতাংশের বেশি। আগরতলাতেও সিপিএমের থেকে বেশি ভোট পেয়েছে এরাজ্যের শাসকদল। গত মে মাসের পরই ত্রিপুরা সংগঠন মজবুত করতে ঝাঁপিয়েছে তৃণমূল। এত অল্প সময়ের মধ্যে সে রাজ্যে সংগঠন গড়েছে তারা।
স্টিয়ারিং কমিটিও গড়ে প্রচারের ঝড় তুলেছিল তারা। একাধিকবার বাধার মুখে পড়েছে তৃণমূল নেতৃত্ব। গ্রেপ্তার হয়েছেন যুবনেত্রী। তবু লড়াইয়ের মাটি ছাড়েননি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সৈনিকেরা। আর ভোটবাক্সে তারই ফল পেল ঘাসফুল শিবির। পুরভোটে ত্রিপুরায় কার্যত দ্বিতীয় দল হিসেবে উঠে এল তারা।
তৃণমুলের রাজ্য সম্পাদক তথা মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বলেন, ‘দু’মাসের সংগঠনে ত্রিপুরায় ‘নিঃশব্দ বিপ্লব’। হামলা-মামলা, ১৪৪ ধারা, ছাপ্পার পরেও দুমাসেই আমরা ২০ % ভোট পেলাম।’ আত্মবিশ্বাসী তৃণমূল বলছে, ‘২০২৩ সালের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন হল। এবারই খেলা হবে।’