আগামী চার বছরে মােদি সরকার বেচবে ১০০ টি সরকারি সংস্থা

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি (File Photo: IANS/BJP)

দ্বিতীয়বার ক্ষমতায় আসার পর থেকেই বেসরকারিকরণের পথে হাঁটছে মােদি সরকার। কেন্দ্রীয় সরকারের অবশ্য যুক্তি, সরকার ব্যবসা করবে না। সেই সূত্রেই এবার প্রকাশ্যে এল, কেন্দ্রীয় সরকারের পরবর্তী পরিকল্পনা অনুযায়ী, আগামী চার বছরে ১০০ সরকারি সংস্থা বিক্রি করতে চায় মােদি সরকার। যার মূল্য প্রায় ৫ লক্ষ কোটি টাকা। 

নীতি আয়ােগ ওই ১০০ টি সংস্থাকে চিহ্নিত করেছে। তৈরি হয়েছে একটি পাইপলাইন। আপাতত সেটা মেনেই ফাস্ট ট্র্যাক মােড়ে সম্পত্তিগুলি বিক্রির পথে এগােতে চাইছে সরকার। 

কোন কোন ক্ষেত্রের সম্পত্তি বিক্রি করার কথা ভাবছে মােদি সরকার? জানা গিয়েছে, এই ক্ষেত্রে রয়েছে পাের্ট, ক্রুজ টার্মিনাল, টেলিকম, তেল ও গ্যাস পাইপলাইন, ট্রান্সমিশন টাওয়ার, রেলওয়ে স্টেশন, স্পাের্টস স্টেডিয়ামের মতাে ক্ষেত্র। নীতি আয়ােগের তরফে সম্প্রতি সংশ্লিষ্ট মন্ত্রকগুলিকে এ বিষয়ে তথ্য সংগ্রহে ও সম্পত্তি চিহ্নিতকরণের নির্দেশও দেওয়া হয়েছে। 


প্রসঙ্গত, ক্ষমতায় আসার পরই পরবর্তী ৫ বছরে ৫ লক্ষ কোটি ডলার অর্থনীতিতে পৌঁছনাের কথা বলেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মােদি। অতিমারির ধাক্কায় বেহাল হয়ে পড়েছে দেশের অর্থনীতি। তবুও নিজেদের লক্ষ্য থেকে পিছিয়ে থাকতে চায় না কেন্দ্র। 

এই সপ্তাহেই ‘অ্যাসেট মানিটাইজেশন’ নিয়ে একটি ওয়ার্কশপের আয়ােজন করা হয়েছিল। সেখানেও এই বিষয়ে আলােচনা হয়। প্রসঙ্গক্রমে, ফেব্রুয়ারি মাসেই নীতি আয়ােগকে বিলগ্নিণের জন্য রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থার তালিকা তৈরির দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। নীতি আয়ােগের সুপারিশের ভিত্তিতে চুড়ান্ত তালিকায় অনুমােদন দেবে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা। আর সেই তালিকাতেই ঠাই পেয়েছে। আপাতত ১০০ সংস্থা। 

সূত্রের খবর, দেশে রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থার সংখ্যা বর্তমানে ৩০০। আর সেই সংখ্যা কমিয়ে ২৪ করার কথা ভাবছে মােদি সরকার। ক্ষতিতে চলা রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাগুলির বােঝা ঘাড় থেকে নামাতেই এই উদ্যোগ নিতে চলেছে কেন্দ্রীয় বিলগ্নিকরণ দফতর। 

এদিকে এর আগেই বাজেটে অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমন জানিয়েছিলেন, সরকার বেসরকারিকরণের মাধ্যমে অন্তত ১.৭৫ লক্ষ কোটি টাকার লক্ষমাত্রা রেখেছে। গত মাসের শেষদিকে বেসরকারিকরণের পক্ষে সওয়াল করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মােদিও।

ডিপার্টমেন্ট অফ ইনভেস্টমেন্ট অ্যান্ড পাবলিক অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট আয়ােজিত ওয়েবিনারে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সরকারের দায়িত্ব হল দেশের শিল্পসংস্থাগুলির পাশে দাঁড়ানাে, তাদের সাহায্য করা। কিন্তু কোনও শিল্প সংস্থার মালিক হওয়া বা ব্যবসা করা সরকারের কাজ নয়। একটা সময় ছিল যখন বিভিন্ন প্রয়ােজনে রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা তৈরি হয়েছিল। কিন্তু এখন সময় বদলেছে। জনকল্যাণমূলক ও উন্নয়নূলক প্রকল্পে গুরুত্ব দেওয়া উচিত সরকারের।’

তখনই প্রধানমন্ত্রীর ইঙ্গিত ছিল, চারটি কৌশলগত ক্ষেত্র ছাড়া দেশের প্রায় সমস্ত সরকারি ক্ষেত্রে বেসরকারিকরণ করতে চায় সরকার। আর এবার একশাে সরকারি সংস্থা বিক্রির এই সংবাদ এল, যা স্বভাবতই চাঞ্চল্য সৃষ্টি করেছে অর্থনৈতিক মহলে।