• facebook
  • twitter
Saturday, 23 November, 2024

নয়া কৃষি আইনের বিরােধিতায় গ্রাম দিয়ে রাজধানী ঘেরাও

কনকনে শীত, পুলিশের লাঠি, জল কামান উপেক্ষা করে পাঞ্জাব, হরিয়ানা, উত্তরপ্রদেশ, রাজস্থানের কয়েক হাজার কৃষক চারদিক থেকে রাজধানী দিল্লিকে ঘিরে ফেলেছেন।

কৃষি বিলের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ। (Photo: Twitter/@srivatsayb)

কনকনে শীত, পুলিশের লাঠি, জল কামান উপেক্ষা করে পাঞ্জাব, হরিয়ানা, উত্তরপ্রদেশ, রাজস্থানের কয়েক হাজার কৃষক চারদিক থেকে রাজধানী দিল্লিকে ঘিরে ফেলেছেন। এযেন গ্রাম দিয়ে শহর ঘেরার মতােই ব্যাপার। 

কেন্দ্রের নয়া কৃষি আইন নিয়ে তাদের আপত্তি। তা প্রত্যাহারের দাবিতে তারা এতটাই আপসহীন যে দু’মাসের রেশন হাতে নিয়ে তারা আন্দোলনে নেমেছেন। এমনিতেই পাঞ্জাব ও হরিয়ানার মানুষের জেদ প্রচণ্ড। তাদের সঙ্গে সমঝােতার পথ অতীতেও সহজ ছিল না। 

মােদি সরকারের নয়া তিন আইন। প্রথম আইনে রয়েছে ফার্মার্স প্রডিউস ট্রেড অ্যান্ড কমার্স (প্রমােশন অ্যান্ড ফেসিলিটেশন) আইন ২০২০ : এই আইনের বলে চাষীরা এখন রাজ্য সরকারের নির্ধারিত ও নিয়ন্ত্রিত মাণ্ডির বাইরেও তাদের ফসল বিক্রি করতে পারবে। এ জন্য কোনও কর বা ফি-এর বােঝা থাকবে না। আগে সেই সুযােগ ছিল না। এপিএমসি তথা কৃষিপণ্যের বিপণন আইন অনুসারে সরকার নিয়ন্ত্রিত বাজারেই পণ্য বিক্রি করতে হত চাষীদের। 

দ্বিতীয় আইন : ফার্মার্স (এমপাওয়ারমেন্ট অ্যান্ড প্রটেকশন) এগ্রিমেন্ট অব প্রাইস অ্যাসিওরেন্স– এই আইনের ফলে চাষীরা এখন সরাসরি সরকারি বা বেসকারি সংস্থার সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হতে পারেন। ফসল উৎপাদনের পরে তারা চুক্তি করতে পারেন। বা ফসল উৎপাদনের আগেই চুক্তি করতে পারেন তারা।

তৃতীয় আইন : কৃষি পরিষেবা আইন ২০২০ এবং অত্যাবশ্যকীয় পণ্য আইন ২০২০– প্রধান কৃষিপণ্যগুলির মজুত ও সরাহের ক্ষেত্রে আর কোনও নিয়ন্ত্রণ থাকবে না। তা পুরােপুরি বাজার নিয়ন্ত্রিত হবে। তবে হ্যা সঙ্কটের পরিস্থিতিতে সরকারের হাতে মজুত নিয়ন্ত্রণের ক্ষমতা থাকবে। যেমন বন্যা, খরা, বাজারে কোনও পণ্য হঠাৎ অপ্রতুল হয়ে পড়া বা তার দাম হঠাৎ বেড়ে যাওয়ার মতাে ঘটনার ক্ষেত্রে। 

এখানে বলে রাখা ভালাে দেশের সব কৃষক এই তিনটি আইনের বিরােধিতা করছেন না। যেমন পশ্চিমবঙ্গে সামগ্রিকভাবে এই আইনের বিরুদ্ধে কৃষকদের তেমন কোনাে বিক্ষোভ দেখা যায়নি। মূলত পাঞ্জাব, রাজস্থান, হরিয়ানা ও উত্তরপ্রদেশের বড় অংশের কৃষক এই আন্দোলনে সামিল হয়েছেন। তাঁদের বক্তব্য এই আইনের ফলে কৃষকদের বড় কর্পোরেটের কাছে বিকিয়ে থাকতে হবে। এর ফলে সরকার যে ন্যূনততম সহায়ক মূল্য দেয়, তা তুলে দেওয়া হবে। 

কেন্দ্রের কৃষি আইনের বিরােধিতা করে পাঞ্জাব বিধানসভায় ইতিমধ্যেই সংশােধন প্রস্তাব পাশ হয়েছে। তাতে বলা হয়েছে এর ফলে পাঞ্জাব কেন্দ্রের ওই তিন কৃষি আইনের আওতায় তারা থাকবে না। কিন্তু হরিয়ানার বিজেপি সরকার কৃষকদের সেই দাবিতে রাজি হয়নি। ফলে ভারতীয় কৃষক ইউনিয়নের নেতা গুরনাম সিন চাদুনির নেতৃত্বে কৃষকরা আন্দোলনে নেমেছেন। হরিয়ানার সমস্ত বিরােধী দল এবং জাতীয় স্তরের সমস্ত কৃষক সংগঠন তাদের সমর্থন করেছে।