বৌমাকে নির্যাতন ও আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগে শ্বশুর ও শাশুড়ির ৭ বছর সশ্রম কারাদন্ডের নির্দেশ দিল ঝাড়গ্রাম জেলা আদালত। মঙ্গলবার জেলা আদালতের সিনিয়র সরকারি আইনজীবী সত্যজিৎ সিনহা বলেন, জেলা বিচারক কল্লোল চট্টোপাধ্যায় আত্মহত্যায় প্ররোচনার দায়ে ওই দম্পতির ৭ বছর সশ্রম কারাবাসের সাজা ঘোষণার পাশাপাশি, বধূ নির্যাতনের ধারায় দোষী সাব্যস্ত করে দুই আসামীকে এক বছরের সশ্রম কারাবাসের সাজা দিয়েছেন। দু’টি সাজাই এক সঙ্গে চলবে। এছাড়াও সাজাপ্রাপ্তদের প্রত্যেককে তিন হাজার টাকা করে জরিমানাও ধার্য করেছেন জেলা বিচারক। জরিমানার টাকা অনাদায়ে তিনমাস অতিরিক্ত কারাবাসের আদেশ দিয়েছেন জেলা বিচারক।
সাজাপ্রাপ্ত ৫২ বছরের হরি সরেন ও তাঁর স্ত্রী ৪৭ বছরের স্ত্রী পার্বতী সরেনের বাড়ি গোপীবল্লভপুর থানার ভালুকাশোল গ্রামে। ২০২২ সালের ২৬ জুন সকালে হরি ও পার্বতীর বৌমা বছর ১৯-এর ছিতা সরেনকে বাড়ির অদূরে একটি গাছে ঝুলন্ত অবস্থায় পাওয়া যায়। ছিতার স্বামী শামু সরেন বেঙ্গালুরুতে একটি বেসরকারি সংস্থায় পরিযায়ী শ্রমিকের কাজ করেন। সেখানেই থাকতেন তিনি। মৃতার দাদা শোভারাম মান্ডি গোপীবল্লভপুর থানায় সে দিনই অভিযোগ করে জানান, বছরখানেক আগে শামুর সঙ্গে তাঁর বোন ছিতার বিয়ে হয়। বিয়ের তাঁর ভগ্নীপতি শামু বেঙ্গালুরুতে কর্মস্থলে চলে যায়। কিন্তু শ্বশুর-শাশুড়ি পণের দাবিতে ছিতার উপর মানসিক ও শারীরিক অত্যাচার শুরু করে।
মৃত্যুর আগের রাতে ছিতা ফোন করে তাঁর দাদাকে জানিয়েছিল, শ্বশুর বাড়িতে তাঁকে মারধর করেছিল শ্বশুর-শাশুড়ি। ২০২২ সালের ২৬ জুন সকালে হরি ও পার্বতী শোভারামকে ফোন করে ছিতাকে বাপের বাড়ি নিয়ে যেতে বলে। শোভারাম ভাতভাঙা এলাকায় একটি গাছে ঝুলন্ত অবস্থায় বোনকে দেখতে পান। শোভারামের অভিযোগের ভিত্তিতে ২০২২ সালের ২৭ জুন অভিযুক্ত হরি ও পার্বতীকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। ২০২২ সালের ৬ সেপ্টেম্বর ঝাড়গ্রাম এসিজেএম আদালতে মামলার চার্জশিট জমা পড়ে। ২০২৩ সালের ৩১ মার্চ মামলাটির বিচারের জন্য চার্জ গঠন হয়। তদন্তকারী অফিসার কৃষ্ণকুমার দাস সহ ৮ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ করে আদালত। সোমবার হরি ও পার্বতীকে দোষী সাব্যস্ত করেন জেলা বিচারক। মঙ্গলবার সাজা ঘোষণা হয়।