মঙ্গলবার ব্রুনেই পৌঁছলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। দুই দেশের মধ্যে ৪০ বছরের কূটনৈতিক সম্পর্ক থাকা সত্ত্বেও এই প্রথম কোন ভারতীয় রাষ্ট্রপ্রধানের এই দ্বীপরাষ্ট্রে সফর। ব্রুনেই সফরের পর প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ৪ ও ৫ সেপ্টেম্বর, এই দুইদিনের সফরে সিঙ্গাপুর যাবেন। সিঙ্গাপুরের প্রধানমন্ত্রী লরেন্স ওয়াং -এর সঙ্গে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা হবে তাঁর।
এই সফর সম্পর্কে মঙ্গলবার এক্স হ্যান্ডেলে প্রধানমন্ত্রী লেখেন, ভারত ও ব্রুনেই কূটনৈতিক সম্পর্কের ৪০-তম বর্ষপূর্তি উপলক্ষে তাঁর এই সফর। দুই দেশের মধ্যে সু-সম্পর্ক রক্ষা করা এবং দৃঢ় করাই এই সফরের প্রধান লক্ষ্য। সুলতান হাজি হাসানাল বলকিহারের সঙ্গে দেখা করবেন তিনি। পাশাপাশি তিনি আরও লেখেন, সিঙ্গাপুরে রাষ্ট্রপতি থার্মান শন্মুগরত্নম, প্রধানমন্ত্রী লরেন্স ওয়াং, মন্ত্রী লি সিয়েন লুং এবং ইমেরিটাস সিনিয়র মন্ত্রী গোহ চোক টং-এর সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন। বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ খাতে বিনিয়োগের মাধ্যমে দুই দেশের সম্পর্ক আরও মজবুত করা হবে।
দুই দেশের সফর শুরু করার আগেও প্রধানমন্ত্রী এক্স-এ এক বিবৃতিতে বলেন, “আগামী দুই দিনের মধ্যে, আমি ব্রুনাই দারুসসালাম এবং সিঙ্গাপুর সফর করব। এই দেশগুলির বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা যাতে ফলপ্রসূ হয় এবং দুই দেশের সম্পর্ক ভারতের সঙ্গে আরও গভীর হয় সেদিকে লক্ষ্য থাকবে।”
প্রধানমন্ত্রীর সফরের আগেই বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর বলেছিলেন, ভারতের প্রধানমন্ত্রীর এই দ্বীপরাষ্ট্র সফরের জন্য এটাই আদর্শ সময়। সংবাদ সংস্থা সূত্রে খবর , বিদেশমন্ত্রী জয়শঙ্কর বলেছেন, ” বিশ্বের পরিবর্তনের পরিপ্রেক্ষিতে ভারতে যে রূপান্তর চলছে তা আরও সমসাময়িক হয়ে ওঠা প্রয়োজন । সেই কারণেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি তাঁর তৃতীয় মেয়াদে এত তাড়াতাড়ি সিঙ্গাপুর সফর বেছে নিয়েছেন,” ।
মোদির এই সফরের লক্ষ্য প্রতিরক্ষা, বাণিজ্য, জ্বালানি এবং মহাকাশ প্রযুক্তি সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতা জোরদার করা। ব্রুনেই তেল সমৃদ্ধ দ্বীপরাষ্ট্র । অন্য দিকে সিঙ্গাপুরের সঙ্গে সুসম্পর্ক রয়েছে চিনের। ফলে প্রধানমন্ত্রীর এই সফর যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ তা বলার অপেক্ষা রাখে না । দুই দেশের সঙ্গেই একাধিক ক্ষেত্রে চুক্তি হতে পারে দিল্লির। ব্রুনেইয়ের সুলতান হাজি হাসানাল বলকিয়া এবং রাজপরিবারের অন্যান্য সদস্যদের সঙ্গে দেখা করার পর বুধবার সিঙ্গাপুর পৌঁছবেন মোদি । সিঙ্গাপুরের নতুন প্রধানমন্ত্রী লরেন্স ওয়াং এবং ভারতীয় বংশোদ্ভূত প্রেসিডেন্ট থার্মান শন্মুগরত্নমের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করবেন তিনি। বৈঠকে থাকবেন মন্ত্রী লি সিয়েন লুং, গোহ চোক টং এবং দেশের গুরুত্বপূর্ণ শিল্প-বাণিজ্য কর্তারাও।
ভারত ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে চিনা আগ্রাসন ক্রমবর্ধমান। সেদিকে নজর রেখে উপকূলবর্তী ছোট ছোট দেশগুলির সঙ্গে বন্ধুত্ব দৃঢ় করতে তৎপর হয়েছে মোদি সরকার। ফলে এই আবহে চিনের আগ্রাসী মানসিকতার বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যেতে ছোট ছোট দেশগুলির সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক মজবুত রাখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সূত্রের খবর, এই দেশগুলি সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক উন্নত করতেই ভারতের প্রধানমন্ত্রীর এই সফর।