রাজ্যসভার চেয়ারম্যান তথা রাষ্ট্রপতি জগদীপ ধনকড়কে সরাতে বদ্ধপরিকর ইন্ডিয়া জোটের আগামী পদক্ষেপ ইমপিচমেন্ট মোশন আনা। বিরোধী তথা ইন্ডিয়া জোট ধনকড়ের বিরুদ্ধে ইতিমধ্যেই রাজ্যসভার ৬৭ ধারার অধীনে ইমপিচমেন্ট মোশন আনার প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছে। অনুচ্ছেদ ৬৭ (বি)-তে বলা হয়েছে যে, উপরাষ্ট্রপতিকে রাজ্যসভার বর্তমান সদস্যদের সংখ্যাগরিষ্ঠ অংশের দ্বারা গৃহীত একটি প্রস্তাবের মাধ্যমে এবং তাতে লোকসভা দ্বারা অভিশংসন-অনাস্থা প্রস্তাবে সম্মতিক্রমে চেয়ারম্যান হিসেবে তাঁর কার্যকাল থেকে অপসারণ করা যেতে পারে। যদিও এই প্রস্তাবের জন্য তাদের চোদ্দ অপেক্ষা করতে হবে কারণ নিয়ম হল ১৪ দিন আগে নোটিস দেওয়ার।
তবে ইমপিচমেন্টের সিদ্ধান্ত আজকেই নেয়নি বিরোধী শিবির। ধনকড়ের বিরুদ্ধে ইমপিচমেন্ট প্রস্তাব আনার জন্য যে তাঁরা তৈরি হয়ে গিয়েছিলেন সেকথা মেনে নিয়েছেন তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্যসভার মুখ্যসচেতক নাদিমূল হক। এ প্রসঙ্গে তিনি জানিয়েছেন, “সংসদের অন্দরে বিরোধী দলনেতা মল্লিকার্জুন খাড়গের দপ্তরে বসেই ইন্ডিয়া জোটের পক্ষ থেকে একজোট হয়ে রাজ্যসভার চেয়ারম্যানের ইমপিচমেন্টৃএর জন্য প্রস্তাবের খসড়া তৈরি করা হয়েছে।”
সংখ্যাগরিষ্ঠতার জোর তাদের নেই তা জানা সত্ত্বেও ইন্ডিয়া জোটের পক্ষ থেকে এই সংক্রান্ত নোটিস দেওয়ার প্রস্তুতির কাজ সারা হয়ে গিয়েছিল। সোমবার তাঁরা নোটিস জমা দেবেন বলেও ঠিকও করেছিলেন। কিন্তু শুক্রবারেই রাজ্যসভা সাইন-এ-ডাই অর্থাৎ অনির্দিষ্টকালের জন্য মুলতুবি হয়ে গিয়েছে।
এদিকে শনিবার রাজ্যসভায় ধনকড়ের সঙ্গে সমাজবাদী পার্টির সাংসদ জয়া বচ্চনের তর্ক চরম নেয় । ধনকড়ের বলার ধরণ নিয়ে প্রশ্ন তোলেন জয়া, তাতে বেজায় চটেন ধনকড়ও। জয়া বলেন, “আমি একজন শিল্পী। বডি ল্যাঙ্গোয়েজ বুঝি। অভিব্যক্তি বুঝতে পারি। ক্ষমা করবেন, কিন্তু আপনার ‘টোন’ ঠিক নয়। এটা মেনে নেওয়া যায় না।” জয়ার এই কথা শুনে রেগে যান ধনখড়। ক্ষুব্ধ হয়ে তিনি শালীন আচরণ করার পরামর্শও দেন জয়াকে। যা নিয়ে রাজ্যসভায় তুমুল হট্টগোল বাধে। প্রতিবাদে ‘দাদাগিরি চলবে না’ স্লোগান দিয়ে ওয়াক আউটও করেন বিরোধীরা।
সূত্রের খবর, এই প্রস্তাবে ইন্ডিয়া জোটের প্রায় নব্বই জন সাংসদ স্বাক্ষরও করেছেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ইন্ডিয়া জোটের এক নেতা এপ্রসঙ্গে বলেছেন, সরকার তড়িঘড়ি করে অধিবেশন শেষ করে দেওয়াতে এবারে প্রস্তাব জমা দেওয়া হল না। সংসদের পরবর্তী অধিবেশনে আমরা এবিষয়ে পদক্ষেপ করব বলেই ঠিক হয়েছে।