ব্রিটেনের সংবাদমাধ্যম ‘বিবিসি’ লিখেছে, ‘ জোর ধাক্কা খেতে হল ভারতের প্রধানমন্ত্রী মোদিকে। তাঁর জোট সংখ্যাগরিষ্ঠতা কম পেয়েছে।’ বিবিসির মতে, ইন্ডিয়া জোটের ‘গণতন্ত্র বাঁচাও’ স্লোগান ভোটারদের প্রভাবিত করেছে। এছাড়া, ব্যয় বৃদ্ধি, বেকারত্ব বৃদ্ধি, সাংবিধানিক পরিবর্তনের মতো বিষয়গুলি তুলে ধরাতেই বিরোধী পক্ষ আশাতীত সাফল্য পেয়েছে বলে জানিয়েছে এই ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম।
ব্রিটিশ দৈনিক, ‘গার্ডিয়ান’-এর শিরোনাম – “নরেন্দ্র মোদি ‘ঐতিহাসিক’ তৃতীয় মেয়াদের দাবি করছেন, কিন্তু অনুমান বলছে তাঁর দলের সম্পূর্ণ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাওয়ার সম্ভাবনা কম।” ইন্ডিয়া জোট নিয়ে তারা লিখেছে, ‘ অপ্রত্যাশিত ভাল ফল করেছে রাহুল গান্ধির কংগ্রেস পার্টির নেতৃত্বাধীন বিরোধী দলের জোট ইন্ডিয়া। ২৩০ টিরও বেশি আসনে এগিয়ে তারা।” তারা আরও লেখে , দিল্লিতে বিজেপির সদর দফতরে উদযাপনের বহরও এবার কম। এর আগের নির্বাচনে গণনার দিন যে ভিড় ছিল, এদিন তা ছিল না।
মার্কিন সংবাদমাধ্যম ‘সিএনএন’ লিখেছে, ‘ মোদি নির্বাচনে জয় ঘোষণা করলেন বটে, কিন্তু তাঁর দল বিস্ময়কর পরাজয়ের সামনে।’ আরও লেখা হয়েছে, বিজেপি সংসদের নিম্নকক্ষে ব্যাপক সংখ্যাগরিষ্ঠতা আশা করছিল। সেটা পেলে তারা দেশের সংবিধান পরিবর্তন করতে সক্ষম হত। কিন্তু, বিজেপিকে এখন সরকার গঠনের জন্য জোট-শরিকদের উপর নির্ভর করতে হবে।
কাতারের সংবাদমাধ্যম ‘আল জাজিরা’র বক্তব্য, “নির্বাচনে বিজেপি ধাক্কা খাওয়ায় মোদির ভাগ্য নির্ধারণ করবে শরিকরা।” তারা লিখেছে, “প্রধান রাজ্যগুলিতে বড় ক্ষতি হওয়ায় সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারাতে চলেছে ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির দল বিজেপি। গত এক দশক ধরে তারাই আধিপত্য বিস্তার করেছে। ফলে, রাজনৈতিক ক্ষেত্রে নাটকীয় পরিবর্তন হল।” এক্সিট পোলগুলির ব্যর্থতা নিয়েও লেখা হয়েছে আল জাজিরার রিপোর্টে। সেই সঙ্গে অযোধ্যায় বিজেপির হার নিয়ে লেখা হয়েছে, “ফৈজাবাদ কেন্দ্রে বিজেপি পরাজিত হয়েছে। এখানে জানুয়ারি মাসে মোদি একটি বিতর্কিত হিন্দু মন্দির উদ্বোধন করেছিলেন।”
মার্কিন নিউজ ওয়েবসাইট, ‘নিউজউইক’ লিখেছে, ‘ মোদির বিজেপি নির্বাচনে ধাক্কা ভারতে বিরোধীদের উদযাপনের সুযোগ করে দিয়েছে । তারা লিখেছে, “স্থানীয় সমস্যাগুলিতে জোর দেওয়া এবং ঐক্য ও ন্যায়বিচারের ক্ষেত্রে আশা জুগিয়েছিল বিরোধীরা, যা সম্ভবত ভোটারদের প্রভাবিত করেছে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরাও বিজেপি বিশাল জয় পাবেন বলে আশা করেছিলেন। কেউ কেউ নির্বাচনে ৫৪৩ আসনের মধ্যে ৪০০টিরও বেশি আসনের ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন। কিন্তু বিজেপির ফল অনেককেই হতবাক করে দিয়েছে।”