জম্মু ও কাশ্মীরের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ফারুক আবদুল্লাহকে মুক্তির প্রশ্নে কেন্দ্র এবং জম্মু ও কাশ্মীর প্রশাসনকে নােটিশ পাঠাল সুপ্রিম কোর্ট। পাশাপাশি নিজে কাশ্মীরে গিয়ে পরিস্থিতি খতিয়ে দেখবেন বলে জানিয়েছেন প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈ। কাশ্মীরকে অবিলম্বে স্বাভাবিক করে তােলারও নির্দেশ দিয়েছে শীর্ষ আদালত।
রাজ্যসভার সাংসদ তথা এমডিএমকে-এর সাধারণ সম্পাদক ভাইকো ফারুক আবদুল্লার মুক্তির দাবিতে যে পিটিশন দাখিল করেছেন, এদিন তার শুনানি হয় প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈ, বিচারপতি এসএ বােবদে ও এসএ নাজিরের বেঞ্চে। ফারুক আবদুল্লাকে আটক করে হেফাজতে রাখা হয়েছে কি না তা জানতে চান বিচারপতিরা।
ভাইকোর আইনজীবী জানান, ‘কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী নিজেই বলেছিলেন যে ফারুক আবদুল্লাকে আটক করা হয়নি। কিন্তু তিনি এখন কোথায় তা আমরা জানি না’। আবদুল্লাকে চেন্নাইয়ে আয়ােজিত এক সেমিনারে অংশ নেওয়ারও অনুমতি দেওয়া হচ্ছে না বলে জানান ভাইকোর আইনজীবী।
সুপ্রিম কোর্টকে কেন্দ্রের তরফে জানানাে হয়, কাশ্মীরে দুরদর্শনের মলে টিভি চ্যানেল, এফএম চলছে। রেস্টিকটেড এলাকায় যাওয়ার জন্য সাংবাদিকদের পাস দেওয়া হচ্ছে। সরকার সবরকমভাবে সাহায্য করছে। কাশ্মীরের সব খবরের কাগজ চলছে। কাশ্মীরের ৮৮ শতাংশ থানার অন্তর্গত এলাকাগুলি থেকে কড়াকড়ি তুলে নেওয়া হয়েছে। সব শুনে সুরিম কোর্ট অ্যাটর্নি জেনারেল কে কে ভেনুগােপালকে বলেন, জাতীয় নিরাপত্তা অটুট রেখে উপত্যকাকে স্বাভাবিক করতে সচেষ্ট হােক কেন্দ্রীয় সরকার ও জম্মু-কাশ্মীর প্রশাসন। প্রধান বিচারপতির কথায়, ‘মানুষ যদি হাইকোর্টে যেতে না পারে তা খুব গুরুতর বিষয়। আমি নিজে শ্রীনগরে যাব’।
৩৭০ ধারা প্রত্যাহারের পরই রহস্যজনকভাবে গৃহবন্দী করা হয় এনসি নেতা ফারুক আবদুল্লাকে। এবার তাঁর মুক্তি নিয়ে শীর্ষ আদালতের দ্বারস্থ হলেন তামিলনাড়ুর এমডিএমকে নেতা ভাইকে। সম্প্রতি সিএন চেন্নাদুরাইয়ের জন্মবার্ষিকীতে মেগা ইভেন্ট রয়েছে সেখানে যাতে ফারুক আবদুল্লা উপস্থিত থাকতে পারে তার জন্যই সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হলেন দক্ষিণ ভারতের এই নেতা।
এনসি সাংসদ ফারুক আবদুল্লাকে আটক করার ঘটনা সম্পূর্ণ বেআইনি বলে দাবি করে সুপ্রিম কোর্টে মামলা রুজু করেন এমডিএমকে নেতা ভাইকো। সেই মামলার শুনানিতেই প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈ প্রশ্ন করেন, আদৌ কী আটক করা হয়েছিল ফারুক আবদুল্লাকে? পাশাপাশি এদিন ফারুক আবদুল্লার মুক্তির আবেদনে সাড়া দেওয়ার নির্দেশ দিয়ে কেন্দ্রকে নােটিশ পাঠায় শীর্ষ আদালত।
যদিও কেন্দ্র জানিয়েছে, কাশ্মীরের এই পরিস্থিতিতে ফারকু আবদুল্লার মুক্তির এই আর্জিতে দেশের আইনশৃঙ্খলার অপমান করছেন এমডিএমকে নেতা ভাইকো। প্রসঙ্গত, ফারুক আবদুল্লার খুবই ঘনিষ্ঠ বন্ধু হলেন মানুমালারচি দ্রাবিড়া মুন্নেত্রা কজাহাগাম নেতা ভাইকো। শীর্ষ আদালত জানিয়েছে, আবদুল্লার মুক্তি নির্ভর করবে জম্মু-কাশ্মীর প্রশাসনের নির্দেশের ওপর।
জম্মু কাশ্মীর ও লাদাখকে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল ঘােষণা করার পর যাতে কোনওরকম নেতার উস্কানিমূলক মন্তব্যে অশান্তি না ছড়ায় তার জন্য প্রায় ৪০০ জন রাজনৈতিক নেতাকে আটক করার নির্দেশ দিয়েছিল কেন্দ্র। এদের মধ্যে রয়েছে মেহবুবা মুফতি, ওমর আবদুল্লা ও ফারুক আবদুল্লা।