চিটফান্ড কাণ্ডে অভিযুক্ত আইএএস অফিসার আত্মঘাতী

প্রতিকি ছবি (Photo: iStock)

চার হাজার কোটি টাকার চিটফান্ড কেলেঙ্কারি তথা পঞ্জি স্কিম কাণ্ডে অভিযুক্ত আইএএস অফিসার মঙ্গলবার আত্মহত্যা করেছেন বলে জানিয়েছে পুলিশ। তাঁর বাড়িতে তাঁকে ঝুলন্ত অবস্থায় পাওয়া গিয়েছে। আই মানিটারি প্রাইভেট লিমিটেড ও তার অধীনস্থ একাধিক সংস্থা দক্ষিণের তিন রাজ্য তথা কর্নাটক, কেরল ও তামিলনাড়ুর গরিব মানুষদের থেকে আমানত সংগ্রহ করেছিল।

ওই মামলায় অন্যতম অভিযুক্ত ছিলেন বিএম বিজয়শঙ্কর নামে এই সিনিয়র আইএএস অফিসার। তাঁর অস্বাভাবিক মৃত্যুর খবর পেয়ে মঙ্গলবার বিকেলে দক্ষিণ বেঙ্গালুরুতে তাঁর বাসভবনে পৌঁছয় পুলিশ। প্রাথমিক ভাবে আত্মহত্যা মনে হলেও দেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। সেই সঙ্গে তদন্তও শুরু করেছে পুলিশ।

চিটফান্ড সংস্থার মালিক মনসুর খানের থেকে বিজয়শঙ্কর দেড় কোটি টাকা ঘুষ নিয়েছিলেন বলে অভিযোগ। গত বছর কর্নাটকে কুমারস্বামী সরকার গঠিত স্পেশাল ইনভেস্টিগেটিং টিম তাঁকে গ্রেফতার করে। পরে তিনি জামিনে ছাড়া পান। পশ্চিমবঙ্গের মতই কর্নাটকে চিট ফান্ড কেলেঙ্কারি নিয়ে তদন্ত করছে সিবিআই।


সংবাদসংস্থা জানিয়েছে, বিজয়শঙ্কর ও আরও এক আমলাকে সম্প্রতি জেরা করেছিল সিবিআই। তার পর তাঁদের হেফাজতে নেওয়ার জন্য চিঠি পাঠিয়েছিল রাজ্য সরকারের কাছে। একই ভাবে রাজ্যের দুই আইপিএস অফিসারকেও হেফাজতে নিতে চায় সিবিআই।

চিটফান্ড কেলেঙ্কারি অভিযোগে, বাংলাতেও বেশ কয়েক আমলা ও পুলিশ কর্তাকে ইতিমধ্যে জেরা করেছে সিবিআই। যদিও গত কয়েক মাস ধরে দৃশ্যত এ ব্যাপারে সিবিআইয়ের কোনও তৎপরতা দেখা যাচ্ছে না। কিন্তু কর্নাটকে অবশ্য ছবিটা অন্য। সেখানে পঞ্জি স্কিমের তদন্তে এখন ভীষণ সক্রিয় এই কেন্দ্রীয় তদন্ত এজেন্সি।

জানা গিয়েছে, তিন রাজ্যে মূলত মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষকে বেশি ঠকিয়েছেন মনসুর খান। সে মানুষকে বোঝাত যে সে হালাল স্কিমে টাকা তুলছে। যা শরিয়তি আইন মেনেই হচ্ছে। অর্থাৎ আমানতের টাকা মদের ব্যবসা বা অন্য এমন কোনও ব্যবসায় বিনিয়োগ করবে না যা শরিয়তি মতে হারাম।

সিবিআই জানতে পেরেছে, মনসুর খান বিপুল অঙ্কের আমানত সংগ্রহ করার পর তা রিজার্ভ ব্যাঙ্কের নজরে আসে। কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্ক তখন রাজ্য সরকারের থেকে এ ব্যাপারে রিপোর্ট চেয়ে পাঠায়। সেই সময় বিজয়শঙ্করকে সেই রিপোর্ট তৈরির দায়িত্ব দিয়েছিল সরকার। তখনই ভাল রিপোর্টে লেখার শর্তে বিজয়শঙ্কর ঘুষ নিয়েছিল বলে অভিযোগ। দক্ষিণে এই পঞ্জি স্কিম নিয়ে হইচই পড়তেই দুবাইতে পালিয়ে গিয়েছিল খান। পরে গত বছর জুলাই মাসে সে সংস্থার আরও কয়েকজনকে নিয়ে দিল্লি ফিরতেই পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে।