চা–‍বিস্কুট আমি খাওয়া‍ব, ইডির অভিযানের গোপন খ‍বর পেয়ে মন্ত‍ব্য রাহুলের

দিল্লি, ২ অগাস্ট – বৃহস্পতিবার রাত ১টা ৫২ মিনিট। রাহুল এক্স হ্যান্ডলে পোস্ট করেন, “স্পষ্টতই দু’জন আমার চক্রব্যূহ মন্তব্য পছন্দ করেননি। ইডির ভিতরের লোকেরা আমায় বললেন, একটি তল্লাশি অভিযানের পরিকল্পনা করা হচ্ছে।” তাঁর বাড়িতে ইডি অভিযান চালাতে পারে বলে শুক্র‍বার শোরগোল ফেলে দিয়েছেন রাহুল গান্ধি। তার রেশ গিয়ে পড়ে সংসদেও। শুক্রবার লোকসভার বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধি দাবি করেন যে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের অন্দর মহল সূত্রে খবর পেয়েছেন যে তাঁর বিরুদ্ধে অভিযান করা হবে। ইডি অভিযান চালানোর পরিকল্পনা করা হচ্ছে। ইডির সূত্রেই এই খবর পেয়েছেন বলে কংগ্রেস নেতার দাবি। কংগ্রেস নেতা জানিয়েছেন, দুই হাত খুলে, চা-বিস্কুট নিয়ে তিনি অপেক্ষা করবেন।
 
এ দিন এক্স হ্যান্ডেলে পোস্ট করে রাহুল লেখেন, “আপাতদৃষ্টিতে, দুইজনের আমার চক্রব্যূহ মন্তব্য ভাল লাগেনি। ইডির অন্দর মহলের খবর, রেইডের পরিকল্পনা করা হচ্ছে। দুই হাত খুলে আমি অপেক্ষা করছি। চা-বিস্কুট আমি খাওয়াব।”প্রসঙ্গত, গত ২৯ জুলাই সংসদের লোকসভায় বাজেট আলোচনায় প্রধানমন্ত্রী মোদিকে আক্রমণ করে বলেছিলেন, “ভারতীয়রা আধুনিক চক্রব্যূহে আটকা পড়েছেন। একবিংশ শতাব্দীতে তৈরি এই চক্রব্যূহ পদ্মের মতো দেখতে। প্রধানমন্ত্রী তাঁর বুকে এই প্রতীক পরেন। অভিমন্যুর সঙ্গে যা হয়েছিল, তা দেশের যুব, কৃষক, মহিলা এবং ছোট ও মাঝারি ব্যবসায়ীদের সঙ্গে করা হচ্ছে। আজকের চক্রব্যূহেও ৬ জন দেশকে নিয়ন্ত্রণ করছে। নরেন্দ্র মোদি, অমিত শাহ, মোহন ভাগবত, অজিত দোভাল ও আম্বান আদানি।”লোকসভায় রাহুল এ কথা বলার সঙ্গে সঙ্গেই আপত্তি জানান স্পিকার ওম বিড়লা। বিজেপি শিবির থেকেও হট্টগোল শুরু হয়ে যায়। স্পিকার রাহুলকে জানান, যাঁরা লোকসভার সদস্য নন, তাঁদের নাম ব্যবহার করা যাবে না।
 
লোকসভায় তাঁর ‘চক্রব্যূহ’ মন্তব্যের পর এমনটাই পরিকল্পনা করা হচ্ছে বলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে চাঞ্চল্যকর দাবি করেছেন রাহুল । এক্স হ্যান্ডেলে লিখেছেন, ‘আমার বিরুদ্ধে অভিযান চালাতে ছক কষছে ইডি। অভিযানের জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছি। ইডির ভিতরেই লোকেরাই এই খবর দিয়েছে। আমার তরফে ওঁদের জন্য চা-বিস্কুট থাকবে।’ ২৯ জুলাই সংসদে ‘চক্রব্যূহ’ সংক্রান্ত মন্তব্য করার পর এই পরিকল্পনা করা হয়েছে বলে দাবি করেছেন রাহুল গান্ধির।
উল্লেখ্য, ২৯ জুলাই সংসদের অধীবেশনে রাহুলের বক্তব্যে উঠে আসে মহাভারত, কুরুক্ষেত্র যুদ্ধ এবং চক্রব্যূহের প্রসঙ্গ। এই তিন প্রসঙ্গের সঙ্গে দেশের বর্তমান পরিস্থিতির সাদৃশ্য খুঁজে বের করেন রাহুল। বলেন, ‘মহাভারতে ঠিক যেভাবে অভিমন্যুকে চক্রব্যূহে বন্দি করে ৬ জন মিলে হত্যা করেছিল, ঠিক সেভাবে গোটা ভারতকে চক্রব্যূহে বন্দি করেছে বিজেপি সরকার।’ মোদি সরকারের সমালোচনা করে রাহুল বলেছিলেন, ‘দেশের যুবক ও কৃষকদের চক্রব্যূহে আবদ্ধ করা হয়েছে। ২০২৪ বাজেটের একমাত্র লক্ষ্য হল একচেটিয়া পুঁজিবাদ ও একচেটিয়া রাজনীতিকে শক্তিশালী করা।’
সংসদে ‘চক্রব্যূহ’ মন্তব্য ভাল ভাবে নেয়নি কেন্দ্রীয় সরকার। তাই তাঁর বিরুদ্ধে ইডি অভিযান চালানোর পরিকল্পনা করা হচ্ছে।
 

কংগ্রেসের প্রবীণ সাংসদ মণিকম ঠাকুর স্পিকারের কাছে মূলতুবি প্রস্তাব জমা দিয়ে দাবি করেছেন, বাকি সব কর্মসূচি স্থগিত রেখে লোকসভায় ইডি ও সিবিআইয়ের ভূমিকা বিশেষ করে বিরোধীদের অপদস্থ করার চেষ্টা নিয়ে আলোচনা করতে দিতে হবে। স্পিকার প্রস্তাবে সায় না দিলে কংগ্রেস সাংসদেরা চিৎকার জুড়ে দেন। তাঁদের সঙ্গী হন ইন্ডিয়া জোটের শরিক দলগুলিও। নিটের প্রশ্ন ফাঁস, এনসিইআরটি’র সিলেবাস বদল নিয়েও সরব হন বিরোধীরা।