চোখ-কান খোলা রাখলেই কিস্তিমাত

কোভিড কাল কাটার পর মানুষের বেড়াতে যাওয়ার প্রবণতা অনেকাংশে বৃদ্ধি পেয়েছে৷ আবার এরপরই একদিকে যেমন বিমান টিকিটের দাম বাড়ছে, তেমনি বাড়ছে ভিনদেশে বেড়াতে যাওয়ার প্রবণতা৷ কম খরচে বিমানের টিকিট কাটার কিছু কৌশল জানা থাকলে আপনিও হয়তো বাজেটের মধ্যে একটা বিদেশভ্রমণের পরিকল্পনা করে ফেলতে পারবেন৷ চলুন, জেনে নিই এমনই পাঁচটি উপায়৷

১. কয়েক মাস আগে বুকিং
বিদেশভ্রমণের ক্ষেত্রে খরচ কমানোর সবচেয়ে ভালো উপায় হলো আগে থেকে পরিকল্পনা করা৷ তিন-চার মাস আগে থেকেই যদি ভ্রমণের পরিকল্পনা শুরু করেন, তাহলে শুধু বিমানের টিকিট নয়, হোটেলের ভাড়া কিংবা নানা অ্যাডভেঞ্চারের ফি—সবই পেতে পারেন কম দামে৷ সাধারণত আন্তর্জাতিক গন্তব্যের ক্ষেত্রে ভ্রমণ তারিখের এক বছর আগে পর্যন্ত টিকিট বুক করা যায়৷ এ ছাড়া টিকিট যখন প্রথম এয়ারলাইনসের ওয়েবসাইটে ছাড়া হয়, সাধারণত তখনই দাম সবচেয়ে কম থাকে৷ এর পর চাহিদা অনুযায়ী দাম বাড়ে৷ তাই শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত অপেক্ষা না করে ফ্লাইটের বুকিং আগে আগে সেরে ফেলাই বুদ্ধিমানের কাজ৷

২. টু্যরিজমবিষয়ক মেলার খোঁজ
পর্যটনবিষয়ক বিভিন্ন মেলায় গেলে পেয়ে যাবেন ভ্রমণসম্পর্কিত হালনাগাদ তথ্য, এয়ারলাইনসের বিশেষ অফার, কিংবা বিশেষ ছাড়ে টু্যর প্যাকেজ৷ অনেক সময় শুধু এই আয়োজনগুলোকে কেন্দ্র করে বিশেষ ছাড়ে বিমানের টিকিট বিক্রি হয়৷ বিশেষ করে বাংলাদেশ বিমানের টিকিট এই মেলাগুলোতেই কম দামে পাওয়া যায়৷ তাই ফেসবুকে বিভিন্ন ইভেন্টের খোঁজখবর রাখুন৷ বছরে অন্তত তিনটি বড় পর্যটনবিষয়ক মেলা পেয়েই যাবেন৷


৩. মরশুম না বাছুন সাধারণ দিন
এয়ারলাইনসগুলোর ওয়েবসাইট একটু ঘাঁটলেই বুঝবেন, ছুটির দিনগুলোতে ফ্লাইটের দাম একটু বেশি থাকে৷ বড় ছুটিগুলোতে স্বাভাবিকভাবেই ফ্লাইটের চাহিদা বেড়ে যায়, তাই দামও বাড়ে৷ একইভাবে পর্যটনের মৌসুমে সবকিছুরই দাম থাকে স্বাভাবিকের তুলনায় কিছুটা বেশি৷ এই ঝামেলা এড়াতে পর্যটন মৌসুমের কিছুদিন আগে বা কিছুদিন পরে ভ্রমণ করতে পারেন৷ এভাবে বিমানের টিকিট কাটলে সাশ্রয়ে পাবেন৷ এশীয় অঞ্চলের দেশগুলোতে সাধারণত দেখা যায় বছরের শেষে ও শুরুর দিকে টিকিটের দাম বেশি থাকে৷ কোনো কোনো বিশেষ উপলক্ষে কোনো কোনো দেশে ভ্রমণের খরচ আবার অনেকখানি কমেও যায়৷ যেমন ধরা যাক, আপনি যদি রমজান মাসে দুবাই ভ্রমণ করেন, তাহলে বিমানের টিকিট থেকে শুরু করে হোটেল—অনেক কিছুই কম খরচে পাবেন৷ বেড়ানো হবে, আবার দুবাইয়ের রমজানের চিত্রটাও ঘুরে দেখতে পারবেন৷

৪. তৃতীয় পক্ষীয় ওয়েবসাইট ব্যবহার
ইন্টারনেট ঘাঁটলে এমন হাজারো ওয়েবসাইটের সন্ধান পাবেন, যারা আপনার ভ্রমণকে সহজ করবে৷ সব ওয়েবসাইটই যে বিশ্বাসযোগ্য, তা-ও নয়৷ তবে জনপ্রিয় কিছু দেশি ও বিদেশি ওয়েবসাইট বেশ কয়েক বছর ধরেই এ ক্ষেত্রে ভালো সেবা প্রদান করে আসছে৷ বিদেশি ওয়েবসাইটের মধ্যে যেমন আছে স্কাইস্ক্যানার, কায়াক, কিউই৷ কখন, কীভাবে গেলে টিকিট কম খরচে পাবেন, তা এসব ওয়েবসাইটের মাধ্যমে দেখতে পারবেন৷ শেয়ারট্রিপ, গোযায়ানের মতো দেশি প্রতিষ্ঠানের ওয়েবসাইটের মাধ্যমেও সরাসরি টিকিট কেটে ফেলতে পারেন৷ এসব প্রতিষ্ঠানের অ্যাপের মাধ্যমেও সাশ্রয়ে টিকিট পাওয়া যায়৷ তাই সরাসরি এয়ারলাইনসের ওয়েবসাইটের বদলে এসব ওয়েবসাইট বা অ্যাপের সাহায্য নিন৷

৫. চোখ কান খোনা রাখুন
বিভিন্ন এয়ারলাইনস বছরের বিভিন্ন সময়ে বিশেষ কিছু মূল্য ছাড় দেয়৷ এই মূল্যছাড় সম্পর্কে অবগত থাকার একটি সহজ উপায় হলো—সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলোয় এয়ারলাইনসের পেজ অনুসরণ করা৷ অর্থাৎ চোখ-কান একটু খোলা রাখুন৷ যখনই কোনো নতুন অফার আসবে, সাশ্রয়ী দামে বিমানের টিকিট কিনে ফেলুন৷ এ ক্ষেত্রে কখনো কখনো ট্রানজিটসহ ফ্লাইট বেছে নিতে হতে পারে৷ যেমন ধরা যাক, সিঙ্গাপুর এয়ারলাইনের অফার চলছে৷ আপনার গন্তব্য যদি মালয়েশিয়া হয়, আপনি মালয়েশিয়া এয়ারলাইনসে সরাসরি না গিয়ে যদি সিঙ্গাপুর এয়ারলাইনসের টিকিট বেছে নেন, তাহলে হয়তো সিঙ্গাপুরের চাঙ্গি বিমানবন্দরে কয়েক ঘণ্টার ট্রানজিট পড়বে; কিন্ত্ত আপনি টিকিট পাবেন কম দামে৷