ভোপাল, ৬ ফেব্রুয়ারি – বাজি কারখানায় ভয়ানক বিস্ফোরণ, তার জেরে পুড়ে ছাই কারখানা সংলগ্ন এলাকার প্রায় ৬০ টি বাড়ি। আগুনের গ্রাসে মৃত্যু হয়েছে কমপক্ষে ৬ জনের। আগুনে ঝলসে আহত কমপক্ষে ৬০ জন। মঙ্গলবার সকালে এই ভয়াবহ দুর্ঘটনা ঘটে মধ্য প্রদেশের হরদা জেলার বৈরাগঢ় গ্রামে। আহতদের দ্রুত ভোপাল ও ইন্দোরের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। এই দুই শহরেই বার্ন ইউনিট তৈরি করা হয়েছে। আহতদের মধ্যে বেশ কয়েকজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। ফলে মৃত্যুর সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি, আগুনের লেলিহান শিখা ছড়িয়ে পড়ায় ওই বাজি কারখানায় পরপর বিস্ফোরণ ঘটে। ঘটনায় এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।
প্রাথমিকভাবে জানা গেছে, এটি বৈরাগঢ় গ্রামের একটি অবৈধ বাজির কারখানা। আতশবাজি তৈরির জন্য সেখানে মজুত করা ছিল প্রচুর পরিমানে গান পাউডার। তা থেকেই কোনোভাবে বিস্ফোরণ ঘটে যায়। বিস্ফোরণের তীব্রতা এতটাই বেশি ছিল, যে সংলগ্ন এলাকায় ভূমিকম্প পর্যন্ত হয়। বিস্ফোরণের তীব্রতা এতটাই বেশি ছিল যে সেই সময় কারখানার সামনের রাস্তার পথচারীরা আছড়ে পড়ে যান। পাশের নর্মদাপুরম জেলার সিওনি মালওয়া এলাকার মানুষও সেই কম্পন অনুভব করেন বলে জানিয়েছেন। আগুন লেগে যায় কারখানার আশেপাশের ৫০টিরও বেশি বাড়িতে।
এই ঘটনার বেশ কিছু ভিডিয়ো সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়ে। এক ভিডিয়োতে দেখা গেছে , কারখানায় বিশাল আগুনের শিখা ছড়িয়ে পড়ছে, ঘন কালো ধোঁয়ায় চারিদিক আচ্ছন্ন। পাশের রাস্তায় বিস্ফোরণের জেরে আতঙ্কিত লোকজনদের পালাতে দেখা যায়। আগুন লাগার সময় ওই কারখানাতেই কাজ করছিলেন এক কর্মী। প্রথম বিস্ফোরণের পরই তিনি প্রাণ বাঁচাতে পালিয়ে যান । ওই কর্মী জানিয়েছেন, সেই সময় কারখানার ভিতর অন্তত ১৫০ জন শ্রমিক কাজ করছিলেন।
বিস্ফোরণের খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে পৌঁছয় ৭টি জেলার প্রায় ৪০ টি দমকলের গাড়ি। দুর্ঘটনার খবর পাওয়া মাত্র মধ্য প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী মোহন যাদব জেলা প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্তাব্যক্তিদের সঙ্গে কথা বলেন এবং ঘটনার বিস্তারিত খোঁজ খবর নেন। আগুন লাগার কারণ খতিয়ে দেখা হচ্ছে। জেলাশাসক ঋষি গর্গ বলেছেন, “দমকলের বেশ কয়েকটি ইঞ্জিন ঘটনাস্থলে পৌঁছেছে। আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার কাজ চলছে। পাশাপাশি চলছে উদ্ধার অভিযান। আমরা জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীকেও ডেকেছি।”
ঘটনাস্থলে পৌঁছন জেলা এবং পুলিশ প্রশাসনের শীর্ষ আধিকারিকরা। স্থানীয় প্রশাসন সূত্রে খবর, আহতদের মধ্যে মহিলা এবং শিশুও রয়েছে। যুদ্ধকালীন তৎপরতায় উদ্ধারকাজ শুরু হয় । রাজ্য বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীও উদ্ধারকাজে হাত লাগায়। পুলিশ জানতে পেরেছে, কারখানাটির রাজু আগরওয়াল নামে এক ব্যক্তির। কারখানায় ১৫টি বিস্ফোরণ হয় বলে এলাকাবাসীদের কাছ থেকে জানা যায় ।