২০১৮ সালেই ১০০ বছরের মধ্যে সবচেয়ে বড় বন্যার শিকার হয়েছিল কেরল। ১৬ আগস্ট থেকে অবিশ্রান্ত বৃষ্টিতে ভেসে গিয়েছে রাজ্য, মরা গিয়েছিলেন ৪৮৩ জন। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিলেন ১০ লক্ষ মানুষ। তার ঠিক এক বছরের মাথায় ফের ভয়াল প্রাকৃতিক দুর্যোগের মুখে দক্ষিণের ওই রাজ্য।
গত কয়েকদিন ধরে মুষলধারে বৃষ্টি হচ্ছে রাজ্যজুড়ে। মারা গিয়েছেন অন্তত ২২ জন। দুর্ঘটনার আশঙ্কায় কোচি বিমানবন্দর বন্ধ রাখা হয়েছে রবিবার পর্যন্ত। আগামী দু’দিন আর ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনার কথা জানিয়েছেন আবহবিদরা। বন্ধ রাখা হয়েছে স্কুল-কলেজও।
প্রবল বৃষ্টিতে ভয়াবহ অবস্থা কর্নাটক ও মহারাষ্ট্রে। কেরল ও কর্নাটকে বন্যায় মৃতের সংখ্যা ৪০ ছাড়িয়ে গেছে। জাতীয় আবহাওয়া দফতর ১৪ আগস্ট পর্যন্ত প্রবল বর্ষণের পূর্বাভাস দিয়েছে। ৫০ কিলােমিটার বেগে ঝড়াে হাওয়া বইতে পারে। সেই সঙ্গে প্রবল বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। মহারাষ্ট্রে কোলহাপুর ১০ ফুট জলের তলায় ডুবে গেছে বলে জানিয়েছে স্থানীয় প্রশান। মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন সেনাবাহিনী ও বায়ুসেনার সাহায্য চেয়ে পঠিয়েছেন।
গত কয়েকদিনে সবচেয়ে বেশি বৃষ্টি হয়েছে ওয়ানাড়ে। বহু জায়গায় রাস্তাঘাট ভেঙে যােগাযােগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছে। মে প্পাডি অঞ্চলে কাদার ধস নেমে অনেকে আটক পড়েছিলেন। এনডিআরএফের কর্মীরা সেখান থেকে ৫৪ জনকে উদ্ধার করেছেন।
শুক্রবার রাজ্যে মারা গিয়েছেন সাতজন। তাদের চারজনের মৃত্যু হয়েছে ওয়ানাড়ে। ইদুক্কিতে দু’জন ও মালাপুরমে একজন মারা গিয়েছেন। কেরল সরকার পর্যটকদের বলেছে, ১৫ আগস্ট অবধি ওয়ানাড় অথবা ইন্দ্রকিতে যাবেন না।
আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, নিলাম্বুর, ইরিত্তি কোট্টায়ুর এবং পাহাড়ের ওপরে মুন্নার অঞ্চলে গত ২৪ ঘন্টায় ১৮ থেকে ২০ সেন্টিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। রাজ্যের উপর দিয়ে প্রবাহিত ৪৪টি নদীর মধ্যে অর্ধেকের জল বিপদসীমার ওপর দিয়ে বইছে। অনেকগুলি বাঁধও ভরে গিয়েছে। কুড়ি হাজার মানুষকে তাদের বাসস্থান থেকে সরিয়ে আনা হয়েছে জায়গায়।
কেরলের বিপর্যয় মােকাবিলা দফতর থেকে ইদুক্কি, মালাপ্পুরম, কোঝিকোড় ও ওয়ানাড় জেলার উদ্দেশে লাল সতর্কতা জারি করা হয়েছে। সেখানে আগামী ২৪ ঘন্টায় ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা আছে। হলুদ সতর্কতা জারি করা হয়েছে আরও ছ’টি জেলায়। কেরলের পাশাপাশি মহারাষ্ট্র ও কর্ণাটকের বিরাট অংশেও বৃষ্টিপাত হচ্ছে।
ওয়েস্টার্ন নাভাল কম্যান্ডকে বলা হয়েছে সংশ্লিষ্ট এলাকায় যাতে দ্রুত সম্ভব ত্রাণের ব্যবস্থা করতে হবে। ত্রাণে সাহায্য করছে বায়ুসেনাও। শুক্রবার তারা কর্ণাটকের বেলাগাভি থেকে ২৫ জন কন্যার্তকে উদ্ধার করে। এছাড়া দুর্গত অঞ্চলে ৪৭৫টি খাবারের প্যাকেট ফেলা হয়।