আরজি কর মামলায় আজ সুপ্রিম কোর্টে শুনানি

আরজি কর কাণ্ডে আজ সুপ্রিম কোর্টের দিকে তাকিয়ে গোটা দেশ। দেশের বিভিন্ন স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠানে নিরাপত্তা নেই বলে এদিন শীর্ষ আদালতে সওয়াল করবেন জুনিয়র ডাক্তারদের আইনজীবীরা। অপরদিকে ডাক্তারদের কর্মবিরতি তোলার বিষয়ে প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ কোনও নির্দেশ দেয় কি না সেই দিকে তাকিয়ে আছে রাজ্য। আজ সুপ্রিম কোর্টে জুনিয়র ডাক্তারদের হয়ে সওয়াল করতে দেখা যাবে প্রবীণ আইনজীবী ইন্দিরা জয়সিংহকে। তিনি জুনিয়র ডাক্তারদের কর্মবিরতি জারি রাখার পক্ষে কী যুক্তি দেন সেটাই এখন দেখার।

এর আগের শুনানিতে জুনিয়র ডাক্তারদের কাজে ফেরার প্রয়োজনীয়তা নিয়ে মন্তব্য করেছিল সুপ্রিম কোর্ট। ১০ সেপ্টেম্বর বিকেল ৫টার মধ্যে কাজে ফেরার নির্দেশ দিয়েছিল প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ। পাশাপাশি জানানো হয়, এই সময়ের মধ্যে কাজে যোগ দিলে আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে কোনও শাস্তিমূলক পদক্ষেপ করতে পারবে না রাজ্যে।

তবে এই নির্দেশের পরেও কর্মবিরতি প্রত্যাহার করেননি জুনিয়র ডাক্তাররা। পাঁচ দফা দাবিতে মঙ্গলবার দুপুর থেকেই স্বাস্থ্যভবনের সামনে অবস্থানে বসেন তাঁরা। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ না মানায় জুনিয়র ডাক্তারদের ভর্ৎসনার মুখে পড়তে হয় কি না সেই দিকেই তাকিয়ে দেশবাসী। এই প্রসঙ্গে আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের জুনিয়র ডাক্তার আরিফ আহমেদ বলেছেন,’সুপ্রিম কোর্টে মামলার শুনানি রয়েছে। তার জন্য আমাদের আইনজীবী থাকছেন ইন্দিরা জয়সিংহ। আমাদের কর্মবিরতির প্রসঙ্গ এবং তার সঙ্গে নির্যাতিতার বিচারের দাবি, হাসপাতালের সুরক্ষা ও নিরাপত্তা-সহ অন্য দাবিগুলি তিনি একে একে তুলে ধরবেন। সুপ্রিম কোর্ট বলেছে, রাজ্য নিরাপত্তা সংক্রান্ত বিষয়গুলি দেখুক এবং আন্দোলনকারীরা কাজে যোগ দিক। আমরা দেখাতে চাইছি, সুপ্রিম কোর্ট যে পর্যাপ্ত নিরাপত্তার কথা বলেছিল, সেটিও সরকার ঠিকঠাক ভাবে দেয়নি।’


পাশাপাশি তিনি আরও বলেন, ‘সিসিটিভি, শৌচালয়, বিশ্রামঘর, ডক্টর্স রুম-সহ আরও যা যা দরকার— তা আমরা এখনও নিচুতলায় দেখতে পাচ্ছি না। সেগুলির বিষয়ে তথ্য সংগ্রহও করা হয়েছে। সেই বিষয়টিও আমরা আদালতে জানাব।’ অপরদিকে জুনিয়র ডাক্তাররা কর্মবিরতি প্রত্যাহার না করায় রাজ্য সরকারও সুপ্রিম কোর্টে নিজেদের যুক্তি খাঁড়া করবেন বলে মনে করা হচ্ছে। কয়েকদিন আগে রাজ্য সরকার দাবি করেছিল, জুনিয়র ডাক্তারদের কর্মবিরতির ফলে রাজ্যে ২৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। মৃতের পরিবারদের ২ লক্ষ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কথাও ঘোষণা করা হয়েছি।

এই সকল তথ্য প্রধান বিচারপতির বেঞ্চের সামনে তুলে ধরে জুনিয়র ডাক্তারদের কর্মবিরতির বিরুদ্ধে পাল্টা সওয়াল করতে চলেছে কপিল সিব্বল সহ রাজ্য সরকারের অন্য আইনজীবীরা। উল্লেখ্য, আদালতের নির্দেশনামায় বলা হয়েছিল, নিরাপত্তা সংক্রান্ত কোনও অভিযোগ এলে তা খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেবেন সংশ্লিষ্ট এলাকার পুলিশ সুপার। কিন্তু এসব ব্যবস্থা হওয়ার পরেও জুনিয়র ডাক্তাররা কাজে যোগ না দিলে পদক্ষেপ করা যেতে পারে। কিন্তু এসব নির্দেশ উপেক্ষা করে কর্মবিরতির সিদ্ধান্তে অনড় থাকেন আন্দোলনকারী চিকিৎসকরা। এই পরিস্থিতিতে রাজ্য ও আন্দোলনকারী দুই পক্ষই তাকিয়ে রয়েছে মঙ্গলবারের শুনানির দিকে।