দিল্লি, ২০ জুন – আবার ভারত সফরে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শুক্রবার দুই দিনের সফরে ভারতে আসছেন তিনি । শুক্রবার তিনি আসছেন পূর্ব নির্ধারিত দ্বিপাক্ষিক সফরে। শুক্রবার বিকেলে দিল্লিতে পৌঁছোনোর পর পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর তাঁর সঙ্গে দেখা করবেন। শনিবার সকালে দিল্লির হায়দরাবাদ হাউসে শুরু হবে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির উপস্থিতিতে দুই দেশের শীর্ষস্তরের বৈঠক। তার আগে রাষ্ট্রপতি ভবনে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীকে রাষ্ট্রীয় সংবর্ধনা দেওয়া হবে। সেখান থেকে রাজঘাটে গিয়ে মহাত্মা গান্ধির সমাধিতে শ্রদ্ধা জানাবেন। গত ৯ জুন প্রধানমন্ত্রী পদে নরেন্দ্র মোদির তৃতীয় শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত ছিলেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী।
সরকারি সূত্রের খবর, এই সফরে দুই দেশের মধ্যে কম করে দশটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হবে। এছাড়া চারটি চুক্তির নবীকরণ হবে। প্রধানমন্ত্রী মোদির সঙ্গে অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে দ্বিপাক্ষিক বিষয়গুলি নিয়ে কথা হবে । তিস্তার পাশাপাশি এবারের আলোচনায় বিশেষ গুরুত্ব পেতে পারে গঙ্গা জলচুক্তি। ২০২৬-এ এই চুক্তির মেয়াদ শেষ হবে। সেই চুক্তির নবীকরণ ঢাকার অগ্রাধিকারের তালিকায় আছে।
বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর এবারের সফর দু-দেশেই ভিন্ন মাত্রা পাচ্ছে আরও একটি কারণে। নয়া দিল্লি থেকে ফেরার কয়েকদিন পরই হাসিনার চিন সফরে যাওয়ার কথা। বেজিংয়ের কর্তারা নানাভাবে চেষ্টা চালিয়েছিলেন, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী যেন আগে চিন সফরে যান। এ বছর জানুয়ারিতে হাসিনা টানা চারবার, সব মিলিয়ে পঞ্চমবারের জন্য বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন। তার আগে থেকেই ঢাকার চিনা দূতাবাস হাসিনার বেজিং সফর নিয়ে সক্রিয় ছিল। বিগত কয়েক বছরে বাংলাদেশে চিনের বিনিয়োগ উল্লেখযোগ্য পরিমাণে বৃদ্ধি পাওয়ায় হাসিনা শেষ পর্যন্ত কোন দেশে আগে যান তা নিয়ে কূটনৈতিক মহলে জল্পনা ছিল। তিনি ভারতেই প্রথম আসার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
ঢাকার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ব্যাখ্যা, ‘ভারত সবার আগে’ এই বার্তা দিতেই এই সিদ্ধান্ত। বাংলাদেশের জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে হাসিনা সরকারের বিরুদ্ধে মার্কিন প্রশাসনের লাগাতার আক্রমণের মুখে ভারতের পাশে থাকা এবং গত দেড়-দুই দশকে দু-দেশের সম্পর্কের উন্নতির ধারাবাহিকতাকে বিবেচনায় রেখে বেজিংয়ের আগে নয়া দিল্লিকে বেছে নিয়েছেন হাসিনা ।