দিল্লি, ১৮ জুন– সে প্রত্যক্ষ হোক বা পরোক্ষভাবে দেশের অর্ধেক জনগণই নাকি আর্থিক জালিয়াতির শিকার৷ এমনটাই উঠে এল এক সমীক্ষায়৷ লোকালসার্কল নামক এক সমীক্ষায় বলা হয়েছে গত তিন বছরে দেশে প্রায় অর্ধেক মানুষই (৪৭%) আর্থিক প্রতারণার সম্মুখীন হয়েছেন বলে উঠে এল সমীক্ষায়৷ যেখানে ইউপিআই এবং ক্রেডিট কার্ডে বেশি জালিয়াতি হয়েছে৷ শুধু তা-ই নয়৷ লোকালসার্কলের এই সমীক্ষায় বলা হয়েছে, ৫০ শতাংশের বেশি ব্যক্তিই ক্রেডিট কার্ডে অতিরিক্ত চার্জ নেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন৷ দেশি-বিদেশি সব ধরনের সংস্থা ও ওয়েবসাইটেই বেশি চার্জের ঘটনা দেখা গিয়েছে বলে দাবি তাঁদের৷ যদিও অনেকাংশেই এই প্রতারণা রোখা যেত বলেই জানিয়েছে সমীক্ষা৷ সমীক্ষা বলছে প্রশাসনের তরফে আগেভাগে ব্যবস্থা নেওয়া এবং গ্রাহক সচেতনতার দিকে তীক্ষ্ণ দৃষ্টি থাকলে এই আর্থিক প্রতারণার হাত থেকে অনেক মানুষকেই বাঁচান যেত৷ আবার মানুষের দায়িত্ব এড়িয়ে যাচ্ছে না সমীক্ষা৷
প্রথম দফায় ক্ষমতায় আসার পর থেকেই দেশে ডিজিটাল লেনদেন প্রসারে জোর দিচ্ছে মোদি সরকার৷ পুরনো ৫০০ এবং ১০০০ টাকার নোট বাতিলের অন্যতম কারণ হিসেবেও ডিজিটাল লেনদেন বাড়ানোকে তুলে ধরেছিলেন প্রধানমন্ত্রী৷ এমনকি অতিমারি এবং তার পরে এই ব্যবস্থার প্রসার বেডে়ছে অনেকটাই৷ কিন্ত্ত এ সবের সঙ্গেই পাল্লা দিয়ে বেডে়ছে আর্থিক প্রতারণাও৷
এই পরিস্থিতিতে দেশের ৩০২টি জেলার ২৩,০০০ জন বাসিন্দাকে নিয়ে করা সমীক্ষা জানাচ্ছে, ৪৩% মানুষই ক্রেডিট কার্ড জালিয়াতির মুখে পডে়ছেন বলে অভিযোগ করেছেন৷ ৩৬% বলেছেন ইউপিআই লেনদেনে প্রতারণার কথা৷ ক্রেডিট কার্ডের মধ্যে আবার ৫৩% উত্তরদাতা তাঁদের লেনদেনে বেআইনি চার্জ বসানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন৷
রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্কের তথ্য তুলে ধরে লোকালসার্কল জানিয়েছে, ২০২৩-২৪ অর্থবর্ষে দেশে আর্থিক জালিয়াতির সংখ্যা দাঁডি়য়েছে ৩৬ হাজারেরও বেশি৷ কিন্ত্ত এর সঙ্গে যুক্ত অর্থের পরিমাণ প্রায় অর্ধেক হয়ে নেমেছে ১৩,৯৩০ কোটি টাকায়৷ কিন্ত্ত তেমনই গত তিন বছরে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে প্রতি ১০ জনের মধ্যে ৬ জন দেশবাসীই কোনও তদন্তকারী সংস্থা বা নিয়ন্ত্রকের কাছে আর্থিক প্রতারণার কথা জানাননি বলেও উঠে এসেছে৷ না হলে সামগ্রিক জালিয়াতির অভিযোগ আরও বাড়ত৷