• facebook
  • twitter
Sunday, 8 September, 2024

রাজকোটের ঘটনায় পুরসভা এবং রাজ্য সরকারকে তীব্র ভর্ৎসনা গুজরাট হাইকোর্টের 

রাজকোট, ২৭ মে – রাজকোটের গেমিং জোনে অগ্নিকান্ডের ঘটনার শুনানিতে সোমবার রাজকোট পুরসভা স্বীকার করে নেয় অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থার পর্যাপ্ত অনুমতি ছাড়াই চলছিল । এর পরিপ্রেক্ষিতে পুরসভাকে তীব্র ভর্ৎসনা করে আদালত জানায়, ”আপনারা কি সবাই অন্ধ হয়ে গিয়েছেন ? ৪ বছর ধরে একটা গেমিং জোন অনুমতি ছাড়া চলছে আপনারা সব ঘুমোচ্ছিলেন ? স্থানীয় প্রশাসন ও রাজ্য সরকার

রাজকোট, ২৭ মে – রাজকোটের গেমিং জোনে অগ্নিকান্ডের ঘটনার শুনানিতে সোমবার রাজকোট পুরসভা স্বীকার করে নেয় অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থার পর্যাপ্ত অনুমতি ছাড়াই চলছিল । এর পরিপ্রেক্ষিতে পুরসভাকে তীব্র ভর্ৎসনা করে আদালত জানায়, ”আপনারা কি সবাই অন্ধ হয়ে গিয়েছেন ? ৪ বছর ধরে একটা গেমিং জোন অনুমতি ছাড়া চলছে আপনারা সব ঘুমোচ্ছিলেন ? স্থানীয় প্রশাসন ও রাজ্য সরকার কারও উপর আমাদের বিশ্বাস নেই।” এমনকী ওই গেমিং জোনে বেশ কয়েকজন আধিকারিককেও যেতে দেখা গিয়েছে। সে প্রসঙ্গে আদালত প্রশ্ন করে, ‘যে আধিকারিকরা ওখানে খেলতে গিয়েছিলেন তারা কারা?’

রাজকোটের ঘটনায় গুজরাট সরকারের তরফে আদালতকে জানানো হয়, এই ঘটনার তদন্তে সিট গঠন করা হয়েছে। ৭২ ঘণ্টার মধ্যে গোটা ঘটনার রিপোর্ট তলব করা হয়েছে। অনেক শপিং মলেও এমন গেম জোন চালু রয়েছে। শীঘ্রই এই বিষয়ে বিস্তারিত রিপোর্ট পাওয়া যাবে, সেই মতো ব্যবস্থাও নেওয়া হবে। পাশাপাশি গত ৪৮ ঘণ্টায় ৬ আধিকারিককে সাসপেন্ড করা হয়েছে। অনুমতি ছাড়া যে সব গেম জোন চলছিল সবগুলি সিল করে দেওয়া হয়েছে।

গুজরাটের রাজকোটের গেমিং জোন অগ্নিকাণ্ডে ৯ শিশুসহ ৩৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। ১৫ জনের বেশি মানুষের খোঁজ মিলছে না। যা নিয়ে রাজ্য এবং গোটা দেশ স্তম্ভিত। এ সম্পর্কিত একটি আর্জিতে আদালতে জানানো হয়েছে যে, গেমিং সেন্টারগুলি চলছিল বেআইনিভাবে নির্মিত বাড়িতে। এবং অগ্নিনির্বাপণের কোনও ব্যবস্থাই সেখানে ছিল না। এই ঘটনাকে মানুষের সৃষ্টি করা বিপর্যয় বলে বর্ণনা করে হাইকোর্ট বলেছে, বেআইনিভাবে ২ বছর ধরে অনুমোদনহীন দুটি গেমিং জোন শহরের বুকে কী করে চলতে পারে?  গুজরাটের রাজকোটে অগ্নিকাণ্ডে ৩৩ জনের মৃত্যুর ঘটনায় সোমবার এই ভাষাতেই শহরের পুরসভা এবং রাজ্য সরকারকে তীব্র ভর্ৎসনা করে গুজরাত হাইকোর্ট।

পুলিশের বক্তব্য অনুযায়ী, ওখানে প্রচুর পরিমাণে অতিদাহ্য পদার্থ মজুত ছিল। অগ্নিকাণ্ডের সময় ওয়েল্ডিংয়ের কাজ চলছিল। যার ফুলকি থেকেই আগুন লেগেছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা। গেমিং জোনের ৬ মালিকের বিরুদ্ধে বিভিন্ন ধারায় মামলা রুজু করেছে পুলিশ। ২ জন গ্রেফতার হলেও বাকিরা পলাতক।

এদিকে, গুজরাত সরকার সোমবার ৬ আধিকারিককে সাসপেন্ড করেছে। সরকারি এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, উপযুক্ত অনুমতি ছাড়া এই গেমিং জোন চালাতে দেওয়ার গুরুতর গাফিলতির দায়ে তাঁদের সাসপেন্ড করা হল। তাঁরা হলেন রাজকোট পুরসভার নগর পরিকল্পনা বিভাগের অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার জয়দীপ চৌধুরি, সহকারী নগর পরিকল্পক গৌতম জোশি, রাজকোট সড়ক এবং বিল্ডিং বিভাগের ডেপুটি এক্সিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার এম আর সুমা এবং পরশ কোঠিয়া এবং দুই পুলিশ আধিকারিক।

উল্লেখ্য, গেম জোনে অগ্নিকাণ্ডের তদন্ত শুরু হতেই দুটি বিস্ফোরক তথ্য সামনে আসে। জানা যায়, কোনও ফায়ার লাইসেন্স ছাড়াই চলছিল ওই গেমিং জোন। পাশাপাশি ওই জোনের এক্সিট গেট ছিল একটিই।  এদিকে জানা যাচ্ছে, ‘টিআরপি’ নামের ওই গেমিং জোনে এমনিতে ভিড় থাকত। কিন্তু শনিবার সেখানে ব্যাপক ভিড় হয়ে যায়। ৯৯ টাকায় বিশেষ ছাড়ে টিকিট মেলায় অনেকেই আসেন গেম খেলতে। এদিকে সেদিনের ঘটনার একটি সিসিটিভি ফুটেজ সামনে এসেছে। যেখানে দেখা যাচ্ছে, গেমিং জোনের মধ্যে ওয়েল্ডিংয়ের কাজ করছিলেন দু’তিন জন কর্মচারী। সেই সময়ই আগুন স্ফুলিঙ্গ দেখা যায়। তারপর আচমকাই সেখান থেকে আগুন ছড়িয়ে পড়ে। যা পরবর্তীতে বিধ্বংসী আকার ধারণ করে।