ফের অশান্ত উপত্যকা। জম্মু ও কাশ্মীরের রাজধানী শ্রীনগরের লাল চকে গ্রেনেড বিস্ফোরণ ঘিরে ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। এই বিস্ফোরণে ১০ জন আহত হয়েছেন। বিস্ফোরণের জেরে লাল চক এলাকায় ব্যাপক আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে কারণ এলাকাটি খুবই জনবহুল। রবিবার এখানে হাট বসে। ঠিক কী ধরনের বিস্ফোরণ তা জানতে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।
জম্মু ও কাশ্মীর পুলিশের আইজি বলেন, এটা রহস্যজনক বিস্ফোরণ। পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে বিষয়টি তদন্ত করছে। জঙ্গি বিস্ফোরণেরও সন্দেহ রয়েছে। বিস্ফোরণে আহত সবাইকে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। বিস্ফোরণের পর গোটা এলাকা সম্পূর্ণভাবে ঘিরে রাখা হয়েছে। বিস্ফোরণ স্থল সিল করে দেওয়া হয়েছে।
সূত্রের খবর, ঠেলাগাড়ির ওপর থাকা অস্থায়ী একটি দোকানে বিস্ফোরণ হয়েছে। যদিও এ নিয়ে মুখ খোলেনি জম্মু-কাশ্মীর পুলিশ। বিস্ফোরণ স্থলের কাছেই সিআরপিএফের বাঙ্কার ছিল। সেখানে হামলার ছক ছিল কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। একই সঙ্গে বড়সড় নাশকতার পরিকল্পনা ছিল কি না, তাও তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।
বিস্ফোরণ স্থলে নিরাপত্তা বাহিনীর পাশাপাশি জম্মু ও কাশ্মীর পুলিশের স্পেশাল অপারেশন গ্রুপও মোতায়েন করা হয়েছে। জঙ্গিদের সন্ধান পেতে গোটা এলাকাজুড়ে চিরুনি তল্লাশি চালানো হচ্ছে।
গ্রেনেড হামলার ঘটনায় কড়া প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন জম্মু-কাশ্মীরের মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লা। এক্স হ্যান্ডেলে তিনি লিখেছেন, গত কয়েকদিন ধরে উপত্যকার কিছু অংশে হামলা ও এনকাউন্টারের ঘটনা ঘটেছে। শ্রীনগরের ‘রবিবার বাজারে’ নিরীহ ক্রেতাদের উপর গ্রেনেড হামলার খবর গভীরভাবে উদ্বেগজনক। নিরীহ নাগরিকদের টার্গেট করার কোনও যুক্তি থাকতে পারে না। নিরাপত্তা বাহিনীকে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব এই জাতীয় আক্রমণের বৃদ্ধি ঠেকাতে হবে, যাতে জনগণ কোনও ভয় ছাড়াই তাদের জীবনযাপন করতে পারে।
আহতের সংখ্যাও বাড়তে পারে বলে জানাচ্ছে প্রত্যক্ষদর্শীরা। জম্মু-কাশ্মীরে নতুন সরকার গঠনের পর থেকে প্রায় প্রতিদিনই জঙ্গি হামলার ঘটনা ঘটছে। সোনমার্গে টানেল নির্মানে যুক্ত একটি বেসরকারি সংস্থার ৬ জন শ্রমিক এবং এক জন স্থানীয় চিকিৎসককে সপ্তাহ খানেক আগে গুলি করে হত্যা করে জঙ্গিরা। তারপরও একাধিক জায়গায় নিরীহ মানুষের ওপর হামলা চালায় জঙ্গিরা।
গত শনিবার শ্রীনগরের খানিয়ারে নিরাপত্তা বাহিনী ও জঙ্গিদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এই সংঘর্ষে নিরাপত্তা বাহিনী লস্কর কমান্ডার উসমানকে হত্যা করে বাহিনী। উসমানকে লস্কর কমান্ডার সাজাদ গুলের ডান হাত মনে করা হত। উসমানের কোড নাম ছিল ‘ছোটা ওয়ালিদ’।
কাশ্মীরে লস্কর-ই-তৈবার সবচেয়ে সিনিয়র কমান্ডার ছিল উসমান। উসমানের দেহের পাশাপাশি সংঘর্ষ স্থল থেকে বিপুল পরিমাণ গোলা-বারুদও উদ্ধার করা হয়েছে। গত ৪৮ ঘণ্টায় কাশ্মীরের তিনটি জায়গায় এনকাউন্টার হয়েছে। এই এনকাউন্টারে তিন জঙ্গি খতম হয়েছে। শ্রীনগর, বান্দিপোরা এবং অনন্তনাগে এনকাউন্টারগুলি হয়েছে।
জম্মু ও কাশ্মীরকে জঙ্গিমুক্ত করতে লাগাতার অভিযান চালানো হচ্ছে। সেনা এবং পুলিশের যৌথবাহিনী উপত্যকায় নজরদারি জোরদার করেছে।