পরিবেশবিদদের যুক্তি প্রাসঙ্গিক হলেও দেশের জাতীয় নিরাপত্তার প্রশ্নে তা লঘু-চার ধাম প্রকল্পের আওতায় রাস্তা চওড়া করার আবেদনের প্রেক্ষিতে দেশের শীর্ষ আদালতের তরফে দেওয়া নির্দেশে এমনই ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে।
৮ সেপ্টেম্বর, ২০২০ শীর্ষ আদালতের তিন বিচারপতির বেঞ্চের রায় সংশোধনের আর্জি জানিয়ে প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের তরফে আবেদন করা হয়েছিল। প্রতিবছর লক্ষ লক্ষ মানুষ চারধাম যাত্রা করেন। পাহাড়ি রাস্তায় তাদের যাত্রা করতে সাংঘাতিক অসুবিধান সম্মুখীন হতে হয়।
পাশাপাশি দেশের জাতীয় সুরক্ষার কথা মাথায় রেখে প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের তরফে চার ধাম প্রকল্পের মাধ্যমে ডবল লেন রাস্তা চওড়া করার আবেদন জানিয়েছিল। আজ দেশের শীর্ষ আদালত প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের আবেদন মঞ্জুর করল।
শীর্ষ আদালতের বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়, বিচারপতি সূর্যকান্ত ও বিচারপতি বিক্রম নাথের বেঞ্চের তরফে জানানো হয়েছে, চার ধাম যাওয়ার মোট ৮৯৯ কিলোমিটার রাস্তা প্রশস্ত করা হবে।
৫.৫ মিটার চওড়া করার বদলে ১০ মিটার চওড়া করার আবেদন করা হয়েছিল, যা মঞ্জুর করা হয়েছে। প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের তরফে সীমান্ত সুরক্ষার প্রয়োজনকে ও রুত্ব দেওয়া হয়েছে।
চার ধাম যাত্রার সুরক্ষার বিষয়টাকে গুরুত্ব দিয়ে সড়ক পরিবহন মন্ত্রককে বেশ কিছু সুপারিশ বাস্তবায়নের নির্দেশ দিয়েছিল। সেই মতোই রাস্তা ১০ মিটার চওড়া করা হবে।
শীর্ষ আদালতের তরফে বলা হয়েছে, দেশের সুরক্ষা সবার উপরে–দেশকে সুরক্ষিত রাখতে প্রয়োজনীয় যে কোনও পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। নিরাপত্তার কারণে চার ধামগামী রাস্তা চওড়া করা আবশ্যক।
ফলে জাতীয় নিরাপত্তার বিষয়টাকে গুরুত্ব দিয়ে কেন্দ্রকে রাস্তা চওড়া করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি ওই অঞ্চলের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য দিকটি নিয়েও চিন্তাভাবনা করতে হবে।
দেশের যে কোনও হাইকোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতির নেতৃত্বে একটি কমিটি গঠন করা হবে। ওই কমিটি বিষয়টি দেখবে” চারধাম যাত্রা প্রকল্পে উত্তরাখণ্ডে রাস্তা আরও চওড়া করতে সুপ্রিম কোর্টের কাছে অনুমতি চেয়েছিল কেন্দ্রের প্রতিরক্ষা মন্ত্রক।
রাস্তার অন্য প্রান্তে নিয়ন্ত্রণরেখার কাছেই হেলিপ্যাড তৈরি করছে চিন। এই পরিস্থিতিতে নিরাপত্তার দিকে লক্ষ্য রেখেই ওই রাস্তা চওড়া করার পক্ষে সওয়াল করেছিল কেন্দ্র। সেই আবেদন মঙ্গলবার মঞ্জুর করল সুপ্রিম কোর্ট।
এদিন বিচারপতি চন্দ্রচূড়, বিচারপতি সূর্যকান্ত ও বিচারপতি বিক্রম নাথের বেঞ্চ প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের পক্ষেই রায় দিয়ে বলেন, ‘দেশের সীমান্তবর্তী এলাকার নিরাপত্তা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। অন্য পাহাড়ি এলাকার সঙ্গে একে গুলিয়ে ফেলা যাবে না।
প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের যুক্তি গ্রহণযোগ্য। সেনার যাতায়াতের সুবিধার কথা ভাবা প্রয়োজন। সামরিক সরঞ্জাম নিয়ে যাতায়াতের জন্য রাস্তা চওড়া করার বিশেষ প্রয়োজন রয়েছে। পাশাপাশি সবুজ প্রকৃতি রক্ষাও গুরুত্বপূর্ণ।’