• facebook
  • twitter
Thursday, 19 September, 2024

মমতা নজর ঘোরানোর চেষ্টা করছেন, আর জি কর ইস্যুতে মুখ খুললেন নির্ভয়ার মা

আর জি কর কাণ্ডে মুখ খুললেন নির্ভয়ার মা আশা দেবী। এই ঘটনার জন্য মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে দায়ী করেছেন তিনি। তাঁর দাবি, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পরিস্থিতি সামাল দিতে ব্যর্থ হয়েছেন। নির্ভয়ার মা আশা দেবী বলেন, সরকার মামলা, নারীর সুরক্ষা এবং আইনের ত্রুটিগুলি সমাধান করার পরিবর্তে একে অপরকে অভিযুক্ত করছে। তিনি বলেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই ইস্যু থেকে মানুষের

আর জি কর কাণ্ডে মুখ খুললেন নির্ভয়ার মা আশা দেবী। এই ঘটনার জন্য মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে দায়ী করেছেন তিনি। তাঁর দাবি, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পরিস্থিতি সামাল দিতে ব্যর্থ হয়েছেন। নির্ভয়ার মা আশা দেবী বলেন, সরকার মামলা, নারীর সুরক্ষা এবং আইনের ত্রুটিগুলি সমাধান করার পরিবর্তে একে অপরকে অভিযুক্ত করছে।

তিনি বলেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই ইস্যু থেকে মানুষের দৃষ্টি সরানোর জন্য প্রতিবাদ করছেন। তিনি নিজেই একজন মহিলা। রাজ্যের প্রধান হিসাবে তাঁর দায়িত্ব পালন করার সময় দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া উচিত ছিল। তাঁর পদত্যাগ করা উচিত। কারণ তিনি পরিস্থিতি সামাল দিতে ব্যর্থ হয়েছেন।

আশা দেবী আরও বলেন, যতক্ষণ না কেন্দ্র ও রাজ্য সরকার ধর্ষকদের দ্রুত শাস্তির জন্য সিরিয়াস হবে না, ততক্ষণ পর্যন্ত দেশের বিভিন্ন জায়গায় এই ধরনের নৃশংসতা চলতেই থাকবে। ২০১২ সালের ১৬ ডিসেম্বর রাতে নির্ভয়াকে চলন্ত বাসে গণধর্ষণ করে রাস্তায় ফেলে দেওয়া হয়। তারপর চিকিৎসা চলাকালীন মৃত্যু হয় তাঁর। এই ঘটনায় গোটা দেশ কেঁপে উঠেছিল। ২০২০ সালে চারজনের ফাঁসি হয়।

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভূমিকার কড়া সমালোচনা করেছেন নির্ভয়ার বাবাও। তিনি বলেন, এই ধরনের অপরাধীরা, কোনও না কোনও রাজনৈতিক দলের ছত্রছায়ায় থাকে, তাই সরকার ইচ্ছে করে এদের চটায় না। কিছুদিন প্রতিবাদ হয়, তারপর সব আগের মতো চলতে থাকে। আর জি করের ঘটনা নিয়ে তীব্র আক্ষেপ ঝরে পড়েছিল তাঁর গলাতেও।

আশা দেবী বলেন যে যতক্ষণ রাজ্য ও কেন্দ্রীয় সরকার মহিলাদের নিরাপত্তা নিয়ে এবং ধর্ষকদের অবিলম্বে কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা করা নিয়ে সিরিয়াস হচ্ছে না, ততক্ষণ পর্যন্ত দেশের বিভিন্ন প্রান্তে প্রতিদিন এই ধরনের নৃশংস অপরাধ হতেই থাকবে। তিনি বলেন, কলকাতার  মেডিক্যাল কলেজেই যদি মেয়েরা সুরক্ষিত না থাকে এবং তাদের সঙ্গে এমন বর্বরোচিত অপরাধ হয়, তবে দেশে মহিলাদের সুরক্ষার অবস্থা কী, তা বুঝতেই পারছেন।

গত ৯ অগস্ট আর জি করের জরুরি বিভাগের চারতলার সেমিনার হল থেকে উদ্ধার করা হয় এক মহিলা চিকিৎসকের মৃতদেহ। তাঁকে ধর্ষণ করে খুন করা হয়েছে বলে অভিযোগ। এই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত এই ঘটনায় ৩০ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে ঘটনার তদন্ত করছে সিবিআই।

সিবিআই তদন্ত চলাকালীনই আবার আর জি করে ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। ‘রাত দখল’ কর্মসূচি চলাকালীন আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে হামলা চালায় একদল দুষ্কৃতী। বুধবার রাত সাড়ে ১২টা নাগাদ আর জি করের লাগোয়া এলাকায় ‘রাত দখল’ কর্মসূচির একটি মিছিল চলছিল।

অভিযোগ, সেই সময় আর জি করের জরুরি বিভাগের বাইরে তাণ্ডব চালায় একদল দুষ্কৃতী। গেট ভেঙে ভেতরে ঢুকে ভাঙচুর চালানো হয়। ক্রিটিক্যাল কেয়ার ইউনিট), সিসিইউ (ক্রিটিক্যাল কেয়ার ইউনিট), ওষুধের স্টোররুমে ভাঙচুর চলানো হয়।

আর জি করের পুলিশ ফাঁড়ি এবং আন্দোলনকারী পড়ুয়াদের মঞ্চেও ভাঙচুর চালানো হয় বলে অভিযোগ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের। ঘটনাস্থলে কিছু পুলিশকর্মী উপস্থিত থাকলেও প্রাথমিকভাবে তারা কিছু করে উঠতে পারেননি। পরে বিশাল পুলিশ বাহিনী ঘটনাস্থলে পৌঁছয়। নামানো হয় র‌্যাফও। ভিড়কে ছত্রভঙ্গ করতে কাঁদানে গ্যাসের শেল ফাটায় পুলিশ। ভাঙচুর করা হয়েছে পুলিশের একাধিক গাড়ি। দুষ্কৃতীদের ছোঁড়া ইটে জখম হন বেশ কয়েকজন পুলিশকর্মী।

দুটি ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষকে বৃহস্পতিবার তলব করেছিল সিবিআই‌। সে দিন তিনি হাজিরা দেননি। তার পর শুক্রবার সিজিওতে পৌঁছন। শনিবারও জেরা হয় সন্দীপকে।