• facebook
  • twitter
Thursday, 21 November, 2024

তামিলনাড়ুতে ফের রাজ্যপাল-মুখ্যমন্ত্রী সংঘাত 

তামিলনাড়ুতে ফের সংঘাতে রাজ্যপাল এবং মুখ্যমন্ত্রী। সঙ্গীত বিতর্কে ফের নতুন করে রাজপাল আরএন রবির সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী এমকে স্ট্যালিনের বিবাদের সূত্রপাত। একে অপরের বিরুদ্ধে আক্রমণের সুর চড়িয়েছেন। রাজ্যপালকে সরানোর দাবিতে কেন্দ্রের কাছে আবেদন জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী এমকে স্ট্যালিন। অন্যদিকে রাজ্যপাল আরএন রবির পাল্টা অভিযোগ, তাঁর বিরুদ্ধে বর্ণবিদ্বেষী মন্তব্য করেছেন মুখ্যমন্ত্রী ।

তামিলনাড়ুতে ফের সংঘাতে রাজ্যপাল এবং মুখ্যমন্ত্রী। সঙ্গীত বিতর্কে ফের নতুন করে রাজপাল আরএন রবির সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী এমকে স্ট্যালিনের বিবাদের সূত্রপাত। একে অপরের বিরুদ্ধে আক্রমণের সুর চড়িয়েছেন। রাজ্যপালকে সরানোর দাবিতে কেন্দ্রের কাছে আবেদন জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী এমকে স্ট্যালিন। অন্যদিকে রাজ্যপাল আরএন রবির পাল্টা অভিযোগ, তাঁর বিরুদ্ধে বর্ণবিদ্বেষী মন্তব্য করেছেন মুখ্যমন্ত্রী । প্রসঙ্গত, তামিলনাড়ুর রাজ্য সঙ্গীত থেকে ‘দ্রাবিড়’ শব্দ বাদ দেওয়া নিয়ে এই বিতর্কের সূত্রপাত।     

মুখ্যমন্ত্রী স্ট্যালিনের অভিযোগ, তামিলনাড়ুর উপর হিন্দি চাপিয়ে দিতে চাইছেন রাজ্যপাল।মুখ্যমন্ত্রী রাজ্যপালের উপস্থিতিতে চেন্নাইয়ের একটি অনুষ্ঠান নিয়ে সরব হন। সেখানে দক্ষিণী রাজ্যের রাজ্য সঙ্গীত ‘তামিল থাই বাজথু’ গাওয়া হচ্ছিল। অভিযোগ, ওই অনুষ্ঠানে তামিলনাড়ুর রাজ্য সঙ্গীত গাওয়ার সময় দ্রাবিড় শব্দটি উচ্চারণ করা হয়নি। তামিলনাড়ুর শাসক দল ডিএমকে-র অভিযোগ, রাজ্যপালকে সন্তুষ্ট করতেই ‘দ্রাবিড়’ শব্দটি উচ্চারণ করা হয়নি। স্ট্যালিন কটাক্ষ করে বলেন, রাজ্যপালের ‘দ্রাবিড়িয়ান’ অ্যালার্জি রয়েছে।

তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রীর কটাক্ষ, ‘দ্রাবিড় শব্দটি বাদ দিয়ে তামিলনাড়ুর রাজ্য সঙ্গীত গাওয়া তামিলনাড়ুর আইন লঙ্ঘন করা। যে মানুষ আইন না মেনে নিজের ইচ্ছা অনুযায়ী চলেন, তাঁর রাজ্যপাল পদে থাকারই কথা নয়। ভারতকে উদযাপন করতে গিয়ে রাজ্যপাল দেশের একতাকে এবং এখানে বসবাসকারী বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মানুষকে অপমান করেছেন। ‘দ্রাবিড়িয়ান’ অ্যালার্জিতে ভুগতে থাকা রাজ্যপালের কি সাহস হবে জাতীয় সঙ্গীত থেকে শব্দটি বাদ দেওয়ার? কেন্দ্রীয় সরকারের উচিত এখনই ওঁকে সরিয়ে দেওয়া। তিনি ইচ্ছাকৃতভাবে তামিলনাড়ু ও সেখানকার মানুষদের ভাবাবেগকে আঘাত করেছেন।’

যদিও রাজ্যপালের দপ্তর থেকে স্ট্যালিনের এই অভিযোগ নস্যাৎ করা হয়। রাজ্যপালের তরফে দাবি, যে অনুষ্ঠানে রাজ্যপাল গিয়েছিলেন সেখানে একজন অতিথি হিসেবে যান। সঙ্গীত সম্পর্কে কোন নির্দেশই সেখানে তিনি দেননি। যাঁরা গান গাইছিলেন তাঁরাই ভুল করে লাইনটি বাদ দিয়েছিলেন। পরে রাজ্যপাল সোশ্যাল মিডিয়ায় এক বিবৃতিতে বলেন, ‘মাননীয় মুখ্যমন্ত্রী আমার বিরুদ্ধে বর্ণবাদী মন্তব্য করেছেন এবং মিথ্যে অভিযোগ করেছেন।  তিনি খুব ভালো করেই জানেন যে, প্রতিটি অনুষ্ঠানেই আমি সম্পূর্ণ রাজ্য সঙ্গীত গেয়ে থাকি।’ 

এই ইস্যুকে হাতিয়ার করে রাজ্যপাল ও মুখ্যমন্ত্রী পরস্পরকে দেশ বিরোধী বলেছেন। রাজ্যপালের মুখ্যমন্ত্রীকে আক্রমণের কারণ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে লেখা স্ট্যালিনের শুক্রবারের চিঠি। তাতে তিনি অভিযোগ করেছেন, ভারত সরকার অ-হিন্দিভাষী রাজ্যগুলির উপর হিন্দি চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছে।

চেন্নাইয়ে হিন্দি মাস উদযাপনের সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে প্রধানমন্ত্রীকে এই চিঠি লেখেন মুখ্যমন্ত্রী। তবে প্রধানমন্ত্রীর অফিস মুখ্যমন্ত্রীর চিঠির কোনও জবাব দেয়নি। কিন্তু রাজ্যপাল ওই চিঠির বক্তব্য নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীকে নিশানা করেছেন। বলেছেন, ‘মুখ্যমন্ত্রীর অন্ধ হিন্দি বিরোধিতা আসলে দেশ বিরোধী অবস্থান। রবি আরও বলেন, আমি রাজ্যপালের দায়িত্ব নেওয়ার সময় রাজ্যে হিন্দি ভাষাকে হেয় করা হত। এখন পরিস্থিতি বদলেছে। আমি স্কুল-কলেজে গেলে ছেলেমেয়েরা আমার সঙ্গে হিন্দিতে কথা বলে। এটাই সরকার মানতে পারছে না।’

অন্যদিকে, রাজ্যপালের বিরুদ্ধে বহুদিন ধরেই দ্রাবিড় তথা তামিল সংস্কৃতিকে হেয় করার অভিযোগ করে আসছে রাজ্য সরকার। দু বছর আগে বিধানসভায় রাজ্যপালের ভাষণে তামিল বন্দনা সংক্রান্ত গানের অংশ রাজ্যপাল পাঠ না করায় বিতর্কের সৃষ্টি হয়। 

‘তামিল থাই বাইজু’ গানটি তামিলনাড়ুর রাজ্য সঙ্গীত। প্রতিটি সরকারি অনুষ্ঠানের আগে ওই গান গাওয়া হয়। সম্প্রতি তামিল দূরদর্শনের এক অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত হন রাজ্যপাল। সেই অনুষ্ঠানের শুরুতে গানটি গাওয়া হয়েছিল।  সেই গানে একটি লাইন বাদ পড়েছিল। সেই লাইনেই ‘দ্রাবিড়’ শব্দটি ছিল। এরপরই মুখ্যমন্ত্রী খোঁচা দিয়ে রাজ্যপালের ‘দ্রাবিড়িয়ান’ অ্যালার্জি বলেন।