প্রবল বৃষ্টির তোড়ে ভেসে গেল নদী সংলগ্ন আস্ত একটি স্কুল। গত কয়েক দিন ধরেই ভারী বর্ষণে প্লাবিত উত্তরপ্রদেশের বিভিন্ন জেলা। বিপদসীমা অতিক্রম করেছে ঘর্ঘরা, সরযূ নদী। বরাবাঁকিতে এই প্রবল বৃষ্টির অভিঘাতের বলি হল একটি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়। এলাকা জলমগ্ন হওয়ায় স্কুলে ছুটি ঘোষণা করা হয়েছিল আগেই। তাই জলের তোড়ে গোটা স্কুল ভেসে গেলেও কোনও পড়ুয়া বা স্কুলের শিক্ষক এবং কর্মীরা কেউই হতাহত হননি। উত্তরপ্রদেশে গত ২৪ ঘন্টারও বেশি সময় ধরে একটানা বৃষ্টির কারণে অপেক্ষাকৃত নিচু এলাকাগুলিতে নদীর জল ঢুকে পড়ায় পরিস্থিতি আরও ঘোরালো হয়ে উঠেছে।
বরাবাঁকির কাজিপুর গ্রামের একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ঘর্ঘরা-সরযূ নদীর প্লাবনে সম্পূর্ণ ভেসে গেছে। স্কুলটি এই নদীপথগুলির প্লাবনভূমিতে অবস্থিত ছিল। নদীর অবিরাম ভাঙনে ধীরে ধীরে স্কুলের গা ঘেঁষে বইছিল। স্থানীয় আধিকারিকদের মতে, নদীর জলস্তর বিপদ চিহ্নের ৬২ সেন্টিমিটার উপরে পৌঁছে যায় , যা অপেক্ষাকৃত নিচু এলাকার তরাই অঞ্চলের বন্যা পরিস্থিতিকে আরও বাড়িয়ে তোলে। এই পরিস্থিতিতে অবিরাম বর্ষণের কারণে জলের তোড়ে ভেসে যায় স্কুলটি।
এরই মধ্যে শারদা ও গির্জা ব্যারেজ থেকে ৭.৪১ লক্ষ ঘনমিটার জল ছাড়ার কারণে নদীর ব্যাপ্তি বিভিন্ন অঞ্চলকে গ্রাস করছে। তলিয়ে গেছে ২২ টিরও বেশি গ্রাম। যার ফলে ব্যাপক আতঙ্কের সৃষ্টি হয়েছে সেই সব অঞ্চলের বাসিন্দাদের মধ্যে। সঙ্কটের মোকাবিলায় প্রশাসন অতি সতর্কতা ঘোষণা করেছে এবং বাসিন্দাদের অপেক্ষাকৃত উঁচু জায়গায় স্থানান্তরিত করার উদ্যোগ নিয়েছে।
এদিকে অবিরত ধারায় বৃষ্টির কারণে রবিবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে সোমবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত সময়ের মধ্যে উত্তরপ্রদেশের ইটাওয়া, শ্রাবস্তি, সোনভদ্র এবং ফতেপুর -এই প্রত্যেক জেলা থেকে একজন করে মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে বলে প্রশাসন সূত্রে খবর। গাজ়িপুর, বালিয়ায় বিপদসীমার উপর দিয়ে বইছে গঙ্গা। লখিমপুর খেরি, বরাবাঁকিতে শারদা নদীর জল পাড় ছাপিয়ে বসতি এলাকায় ঢুকে পড়েছে। ফলে নদী সংলগ্ন গ্রামগুলিতে আতঙ্ক বাড়ছে। অনেকেই নিজেদের ঘরবাড়ি ছেড়ে নিরাপদ জায়গায় আশ্রয় নিচ্ছেন।
মৌসম ভবন জানিয়েছে, মঙ্গলবার রাজ্যের দক্ষিণ প্রান্তে এবং মধ্যপ্রদেশ লাগোয়া জেলাগুলিতে বজ্রবিদ্যুৎ-সহ ভারী বৃষ্টি হবে। সঙ্গে ৩০-৪০ কিলোমিটার বেগে বইবে ঝোড়ো হাওয়া। সোনভদ্র, মির্জাপুর, চন্দৌলি, চিত্রকূট, প্রয়াগরাজে ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে।
অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট অরুণ কুমার বলেছেন, জলের স্তর কমতে শুরু করার সাথে সাথে বন্যাকবলিত অঞ্চলগুলিতে খাবারের প্যাকেট এবং রেশন কিট সহ বিভিন্ন রকম সহায়তা দেওয়া হচ্ছে। ক্ষতিগ্রস্ত মানুষদের সহায়তার জন্য চলমান পর্যবেক্ষণ ও ত্রাণ তৎপরতা চলছে, কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।