দিল্লি, ১০ জুন – নরেন্দ্র মোদির শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত ছিলেন একাধিক বিদেশি রাষ্ট্রনেতা। উপস্থিত আমন্ত্রিত রাষ্ট্রপ্রধানদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বার্তা, ‘প্রতিবেশীরা অগ্রাধিকার পাবে।’ শপথগ্রহণ অনুষ্ঠান শেষ হওয়ার পর রাষ্ট্রপতি ভবনে সাত রাষ্ট্রপ্রধানের সঙ্গে দেখা করেন তৃতীয়বার প্রধানমন্ত্রী হিসাবে শপথ নেওয়া মোদি । বিদেশ মন্ত্রকের তরফে জানানো হয়, আমন্ত্রিত রাষ্ট্রপ্রধানদের সঙ্গে দেখা করে মোদি দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় শান্তি এবং সমৃদ্ধির পক্ষে তাঁর প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন। তিনি জানান, ভারত দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় শান্তি এবং উন্নতির লক্ষ্যে কাজ করে যাবে।
এঁদের মধ্যে সবথেকে বেশি চর্চায় রয়েছেন মালদ্বীপের রাষ্ট্রপতি মহম্মদ মুইজ্জু। ‘চিনপন্থী’ রাষ্ট্রনেতার জন্যই যে ভারতের সঙ্গে মালদ্বীপের সম্পর্ক তলানিতে ঠেকেছে তা মনে করে আন্তর্জাতিক মহল। কারণ প্রেসিডেন্ট পদে আসার পর থেকেই তিনি পরপর ভারত-বিরোধী সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তাঁকেই মোদি তাঁকে শপথগ্রহণে ডাকা নিয়ে আলোচনা চলছিলই। এরপর তাঁদের দুজনকে পাশাপাশি বসতেও দেখা যায়।
রাষ্ট্রপতি ভবনে আয়োজিত নৈশভোজে যোগ দেন বিদেশি রাষ্ট্রপ্রধানেরা। সেই নৈশভোজে মলদ্বীপের প্রেসিডেন্ট মহম্মদ মুইজ্জুর সঙ্গে একান্তে কথা বলতে দেখা যায় মোদিকে।শুধু তাঁর সঙ্গে কথাই নয়, বিদেশি নেতাদের ঐক্যের বার্তাও দেন মোদি । বলেন, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় শান্তি এবং সম্প্রীতি বজায় রাখতে হবে। এর জন্য সকলকে এগিয়ে আসতে হবে। প্রতিবেশীরাই অগ্রাধিকার পাবে বলেও বার্তা দিয়েছেন তিনি। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০৪৭ বিকশিত ভারতের লক্ষ্যে প্রতিবেশীদের সঙ্গে সুসম্পর্ক, শান্তি, অগ্রগতি এবং সমৃদ্ধি হবে আমাদের লক্ষ্য।
প্রসঙ্গত, গত বছর এই মুইজ্জু মলদ্বীপের ক্ষমতায় আসার পরেই এই দেশটির সঙ্গে ভারতের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে নানা টানাপোড়েন শুরু হয়। কিন্তু সেই মুইজ্জুকেই শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানানো এবং তাঁর সঙ্গে একান্তে কথা বলাকে ‘তাৎপর্যপূর্ণ’ বলে মনে করা হচ্ছে। পর্যবেক্ষকদের একাংশের মতে , দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় চিনের প্রভাব খর্ব করতে শপথ নেওয়ার পর দিন থেকেই পড়শি দেশগুলিকে কাছে টানার চেষ্টা শুরু করে দিয়েছেন মোদি ।
রাষ্ট্রপতি ভবনের প্রাঙ্গণে মোদি এবং তাঁর মন্ত্রিসভার সদস্যদের শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট রনিল বিক্রমসিঙ্ঘে, মলদ্বীপের প্রেসিডেন্ট মহম্মদ মুইজ্জু, ভুটানের প্রধানমন্ত্রী শেরিং তোবগে, নেপালের প্রধানমন্ত্রী পুষ্পকমল দহাল ওরফে প্রচণ্ড, মরিশাসের প্রধানমন্ত্রী প্রবীন্দ জুগনাথ প্রমুখ। এই রাষ্ট্রপ্রধানদের মধ্যে কেবল বিক্রমসিঙ্ঘে পূর্বনির্ধারিত কাজের জন্য সোমবার দুপুরেই ভারত ছাড়েন।
তৃতীয়বার দেশের প্রধানমন্ত্রীর কুর্সিতে বসে বিদেশনীতি স্পষ্ট করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। রাষ্ট্রপ্রধানদের উদ্দেশে বার্তা দিলেন, নতুন সরকারে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব পাবে প্রতিবেশি দেশগুলি।