মোদিকে চিঠি গেহলটের, সরকার ফেলার চেষ্টা হচ্ছে

রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী অশোক গেহলট। (File Photo: Ravi Shankar Vyas/IANS)

রাজস্থানে পরিকল্পিতভাবে সরকার ফেলার চেষ্টা চলছে। সেই পরিকল্পনাতে শচীন পাইলট ও তাঁর অনুগামীরা যেমন রয়েছে, তেমনি রয়েছেন বিজেপি নেতারা। নির্বাচিত সরকারকে অনৈতিকভাবে ফেলার চেষ্টা চলছে। এমনই অভিযোগকে সামনে রেখে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে চিঠি লিখলেন রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী অশোক গেহলট।

রাজস্থানের মানুষ ও সাংবিধানিক পরিকাঠামোকে অপমান করা হচ্ছে। কর্নাটক ও মধ্যপ্রদেশ তার উদাহরণ। যদিও রাজস্থানের বিজেপি’র বিধায়ক দলের নেতা গুলাব চান্দ কাটারিয়া বলেন, ‘কংগ্রেসের অন্তর্দ্বন্দ্বের ফলে যাবতীয় রাজনৈতিক অস্থিরতা তৈরি হয়েছে। বিরোধী দল বিজেপি আস্থাভোটের দাবি জানায়নি। অথচ সরকার পক্ষ নিজেরাই আস্থাভোট করতে চাইছে।

রাজস্থানের রাজনৈতিক সংকট মামলা এবার সুপ্রিম কোর্টে পৌছল। রাজস্থানের অধ্যক্ষ সি পি যাোশীর সঙ্গে বিদ্রোহী নেতা শচীন পাইলটের লড়াই শেষপর্যন্ত কোন দিকে মোড় নেয় তা নিয়ে জল্পনা ক্রমশ বাড়ছে। যদিও অধ্যক্ষ সি পি যোশী আদালতে আবেদন জানিয়ে বলবেন, রাজ্যে সাংবিধানিক সংকট তৈরি হতে চলেছে।


ইতিমধ্যেই বিদ্রোহী শচীন পাইলট এবং তাঁর অনুগামীদের কেন বিধায়ক পদ খারিজ করা হবে না তা জানতে চেয়ে সি পি যোশী নোটিশ পাঠিয়েছিলেন। অধ্যক্ষের সেই নোটিশকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে হাইকোর্টে যায় শচীনরা। সেই মামলার রায় শুত্রবার ঘোষণা করা হবে বলে জানিয়েছে আদালত। তবে, ততদিন পর্যন্ত শচীন ও বিদ্রোহী বিধায়কদের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হবে না বলে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

এই নির্দেশের বিরুদ্ধেই এবার রাজস্থান বিধানসভার অধ্যক্ষ সি পি যোশী সুপ্রিম কোর্টে যাচ্ছেন। বুধবার এক সাংবাদিক বৈঠক করে সি পি যোশী বলেন, আমি শুধু কাল জানতে চেয়ে নোটিশ দিয়েছি। এটা কি আমার অধিকারের মধ্যে পড়ে না? অধ্যক্ষের পূর্ণ অধিকার রয়েছে বিধায়কদের নোটিশ ধরানোর।

অধ্যক্ষ সিদ্ধান্ত নেওয়ার পর তা নিয়ে আদালতে যাওয়া যায়। কিন্তু এখনও পর্যন্ত কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি, তার পরেও আদালতে যাওয়া হল, যা সংসদীয় গণতন্ত্রের পক্ষে বিপজ্জনক। হাইকোর্ট যে নির্দেশ দিয়েছে তাতে করে সুপ্রিম কোর্টের সাংবিধানিক বেঞ্চের সিদ্ধান্তই লংঘিত হয়েছে।

এ প্রসঙ্গে যোশী আরও জানিয়েছেন, সংবিধান মেনেই আমাদের দেশে কিছু হয়। সংসদীয় গণতন্ত্র মেনেই নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিরা তাদের কর্তব্য পালন করেন। আয়ারাম-গয়ারামদের জন্য সংবিধান সংশোধন ঘটানো হয়েছিল। ১৯৯২ সালে সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছিল, কোনও বিধায়ককে অযোগ্য মনে হলে তার পদ খারিজ করার পূর্ণ অধিকার রয়েছে অধ্যক্ষের। শীর্ষ আদালতের সাংবিধানিক বেঞ্চ এই সিদ্ধান্ত নিয়েছিল।

অধ্যক্ষ যদি কোনও সিদ্ধান্ত নেয়, তার বিরুদ্ধে আদালতে যাওয়া যায়। কিন্তু এখানে চূড়ান্ত কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। এরপর যোশী আরও বলেন, হাইকোর্টের হস্তক্ষেপ এবং একটার পর একটা তারিখ ঘোষণা করে পুরো বিষয়টি অযথা বিলম্বিত করা হচ্ছে। তার কথায় বিচার ব্যবস্থা এবং প্রশাসনের মধ্যে কোনও সংঘাতের পরিবেশ তৈরি হোক তা আমি চাই না।

ইচ্ছাকৃতভাবে সিদ্ধান্তকে ঝুলিয়ে রাখা গণতন্ত্রের পক্ষে বিপজ্জনক। সবার আগে বিধানসভার মর্যাদা রক্ষা করা উচিত। তাই সাংবিধানিক কোনও সংকট যাতে তৈরি না হয় তার আগেই সুপ্রিম কোর্ট পরিস্থিতি সামলাক। সেকারণেই এই পদক্ষেপ।

যতদূর জানা গিয়েছে, প্রবীণ কংগ্রেস নেতা কপিল সিব্বল সুপ্রিম কোর্টে রাজস্থানের অধ্যক্ষ সি পি যোশীর হয়ে সওয়াল করতে পারেন। সেখানে সংবিধানের ২১২ ধারা তুলে ধরে তিনি সওয়াল করবেন বলে জানা যাচ্ছে। এই ধারায় বলা হয়েছে, বিধানসভার কোনও কাজে হস্তক্ষেপ করতে পারে না আদালত।

কোনও বিষয়ে চুড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়ে গেল তারপর সেটা আদালতে চ্যালেঞ্জ জানানো যায়। তাই আদালত এই বিষয়ে এখন কোনও সিদ্ধান্ত নিতে পারে না। কারণ অধ্যক্ষ শুধুমাত্র কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছিল। চূড়ান্ত কোনও সিদ্ধান্ত নেয়নি।