সাংবাদিক গৌরী লঙ্কেশ খুনে আরও ২ অভিযুক্ত জামিন পেয়েছেন। পরশুরাম ওয়াগমারে ও মনোহর যাদবকে আদালত জামিন দেওয়ার পর তাঁদের মালা ও উত্তরীয় পরিয়ে এবং বীরের সম্মান জানিয়ে বরণ করে নিল কট্টর হিন্দু সংগঠনের নেতারা। রবিবার বিজয়পুরার বাড়িতে এই দুই অভিযুক্তকে বরণ করে স্থানীয় হিন্দুত্ববাদী গোষ্ঠী।
সাংবাদিক গৌরী লঙ্কেশকে খুনে অভিযুক্ত ৮ জনকে মুক্তি দিয়েছে বেঙ্গালুরুর বিশেষ আদালত। ২০১৭ সালের ৫ আগস্ট নিজের বাড়িতেই দুষ্কৃতীদের হাতে নিহত হন সাংবাদিক এবং সমাজকর্মী গৌরী লঙ্কেশ। বাইকে চেপে বেঙ্গালুরুর বাড়ির সামনে লংকেশকে লক্ষ্য করে গুলি চালায় দুষ্কৃতীরা। তাঁর মৃত্যুতে তোলপাড় হয় গোটা দেশ। ঘটনার তদন্তের জন্য বিশেষ তদন্তকারী দল গঠন করা হয়। লঙ্কেশকে খুনের দায়ে ৬ বছর ধরে জেলে ছিলেন পরশুরাম ও মনোহর। গত ৯ অক্টোবর তাঁদের জামিন মঞ্জুর করে বেঙ্গালুরুর দায়রা আদালত। গত ১১ অক্টোবর পারাপ্পানের অগ্রহার জেল থেকে ছাড়া পান তাঁরা। সেখান থেকেই বাড়ির পথে রওনা হন লঙ্কেশ খুনে দুই অভিযুক্ত।
বাড়ি ফেরার পড়ি তাঁদের মালা ও গেরুয়া রঙের উত্তরীয় পরিয়ে বরণ করে নেয় স্থানীয় হিন্দুত্ববাদী সংগঠনের নেতারা। স্লোগান দিয়ে দুই অভিযুক্তকে অভ্যর্থনা জানান তাঁরা। এরপর তাঁদের ছত্রপতি শিবাজীর মূর্তির কাছে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে তাঁরা যান কালিকা মন্দিরে। হিন্দুত্ববাদী নেতাদের দাবি, এই দুই অভিযুক্তকে মিথ্যে মামলায় ফাঁসানো হয়। তাঁদের আরও অভিযোগ, আসল দোষীরা এখনও বাইরে ঘুরে বেড়াচ্ছে। এক নেতা বলেন, ‘আদালতের রায়ে আমরা খুশি। গত ৬ বছর ধরে এঁদের পরিবার অনেক কিছু সহ্য করেছে। এবার তাঁরা নিশ্চিন্ত হলেন।’
এই মামলায় বিশেষ তদন্তকারী দলের তালিকায় মোট ১৮ জনকে সন্দেহের তালিকায় রাখা হয়েছিল। এদের মধ্যে এই খুনের মূল পান্ডা ছিল অমল কালে। বিশেষ আদালতের রায়ে পরশুরাম, মনোহর, অমল কালে ছাড়াও জামিন পেয়েছে বাসুদেব সূর্যবংশী, গণেশ মিসকিন, ঋষিকেশ দেবদেকর, রাজেশ বাঙেরা, অমিত রামচন্দ্র বাদ্দি। এর আগে জুলাই মাসে এই খুনের ঘটনায় আরও তিন অভিযুক্তকে শর্তসাপেক্ষে জামিন দেওয়া হয়। তার আগে গত ডিসেম্বরে ছাড়া পান আরো এক অভিযুক্ত। সব মিলিয়ে এই খুনের মামলায় জড়িত মোট ১২ জন জামিন পেল। ফলে প্রশ্ন উঠেছে বিশেষ তদন্তকারী দলের তদন্ত নিয়ে।