জম্মু-কাশ্মীরে গুলি বিনিময়ে খতম গ্যাংস্টার, শহিদ পুলিশ আধিকারিক

শ্রীনগর, ৩ এপ্রিল: জম্মু ও কাশ্মীরে পুলিশের সঙ্গে গুলির লড়াইয়ে মৃত্যু হল এক কুখ্যাত গ্যাংস্টারের। ঘটনায় শহীদ হয়েছেন পুলিশের এক সাব ইন্সপেক্টর। উপত্যকার কাঠুয়া হাসপাতাল চত্বরে এই সংঘর্ষ হয়। শহীদ ওই পুলিশ আধিকারিকের নাম দীপক শর্মা। তিনি গুলি বিনিময়ের সময় আততায়ীদের গুলিতে মাথায় আঘাত পান। আজ সকালে তিনি পাঠানকোট হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।

এছাড়া এই সংঘর্ষে ওই গ্যাংস্টারের এক সঙ্গী এবং অনিল কুমার নামে আরও এক বিশেষ পুলিশ আধিকারিক গুরুতর জখম হয়েছেন। তাঁদেরকে চিকিৎসার জন্য কাঠুয়া হাসপাতালেই ভর্তি করা হয়েছে। এবিষয়ে রাজ্যের লেফ্টেন্যান্ট গভর্নর মনোজ সিনহা জানিয়েছেন, ‘বীর শহিদের আত্মত্যাগ আমাদের অনুপ্রেরণা জুগিয়েছে। আমরা এই ঘটনার বদলা নেব।’

বহু বছর বিরতির পর সম্ভবত এটাই প্রথম জম্মু-কাশ্মীরে পুলিশ ও গ্যাংস্টারের গুলি বিনিময়। কুখ্যাত শিনো গ্যাংয়ের অপরাধমূলক কার্যকলাপে অতিষ্ঠ উপত্যকাবাসী। তাদের অপরাধ প্রবণতা ক্রমশ বাড়ছিল। সেই অপরাধীদের দমন করতে অভিযান শুরু করে পুলিশ। এদিন শিনো গ্যাংয়ের কয়েকজন সদস্যকে পুলিশ ধাওয়া করে। তারা বেগতিক বুঝতে পেরে কাঠুয়ার একটি গাড়ি সমেত কাঠুয়া হাসপাতালে ঢুকে পড়ে। অতর্কিতে পুলিশ সেখানে পৌঁছেই হাসপাতালের চারিদিক ঘিরে ফেলে। শুরু হয় পুলিশ ও দুষ্কৃতীদের গুলির লড়াই। এই দুষ্কৃতীদের মূল মাথা ছিল বসুদেব। তার বিরুদ্ধে রামগড় থানায় খুনের অভিযোগও দায়ের হয়েছে।


জানা গিয়েছে, গতকাল মঙ্গলবার রাত ১০টা ৩৫ নাগাদ জম্মু-পাঠানকোট জাতীয় সড়কে গুলি বিনিময় শুরু হয়। পুলিশের গুলিতে ঘটনাস্থলেই গ্যাংস্টার বসুদেবের মৃত্যু হয়। সেসময় ৩২ বছর বয়সী সাব ইন্সপেক্টর দীপক শর্মার মাথায় আঘাত লাগে। জখম অবস্থায় প্রথমে তাঁকে কাঠুয়া হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা করা হয়। এরপর তাঁকে পাঞ্জাবের পাঠানকোটে আমনদীপ হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়। শহীদ দীপক শর্মার বাড়ি জম্মু-কাশ্মীরের সাঙ্গুরে উধমপুর রেল স্টেশনের কাছে। ঘটনার পর সাম্বা জেলা পুলিশ লাইনে পুলিশের শীর্ষ কর্তারা পুষ্পস্তবক দিয়ে শহিদ শর্মাকে শেষ শ্রদ্ধা জানান।

এই ঘটনার প্রতিক্রিয়ায় লেফ্টেন্যান্ট গভর্নর মনোজ সিনহা বলেন, ‘দীপক শর্মা কাঠুয়ার একজন মোস্ট ওয়ান্টেড গ্যাংস্টারকে জব্দ করতে খুব বীরত্বের সঙ্গে লড়াই করেছেন এবং তিনি নিজেকে সম্পূর্ণভাবে উৎসর্গ করে দিয়েছেন। তাঁর মহান আত্মত্যাগ আমাদের হৃদয়ে খোদাই হয়ে থাকবে। তাঁর প্রতি বিন্দু রক্তের আমরা বদলা নেব। এবং আমরা একটি ভয়মুক্ত জম্মু-কাশ্মীর উপহার দিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ থাকব।’