জম্মু-কাশ্মীরে বইছে মুক্ত বাতাস, শিকল মুক্ত উপত্যকার মানুষ : মোদি 

শ্রীনগর, ৭ মার্চ – সংবিধানের ৩৭০ ধারা বাতিলের পর জম্মু ও কাশ্মীরের মানুষের জীবনযাত্রা উন্নত হয়েছে বলে দাবি করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। এই ধারার অবলুপ্তি ঘটানোর প্রায় সাড়ে চার বছর পর প্রথমবার জম্মু ও কাশ্মীরে গেলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। যাওয়ার পরই বৃহস্পতিবার তিনি বলেন, জম্মু ও কাশ্মীরে মুক্ত বাতাস বইতে শুরু করেছে। কাশ্মীর হল ভারতের কপাল। বিকশিত ভারত গড়ে তুলতে গেলে সবার আগে দরকার বিকশিত কাশ্মীর। কাশ্মীরে  ঢালাও উন্নয়নের বার্তা দিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। জানিয়ে দিলেন, কাশ্মীরবাসীর মন জিততেই উপত্যকায় গেছেন তিনি।
 
বৃহস্পতিবার শ্রীনগর পৌঁছন প্রধানমন্ত্রী। সেখানে ৬ হাজার ৪০০ কোটির মোট ৫৩টি প্রকল্পের ঘোষণা করেন। সরকারি চাকরির নিয়োগপত্রও তুলে দেন বেশ কয়েকজনের হাতে। তার পরে ভাষণ দিতে গিয়ে মোদির মুখে শোনা যায়  কাশ্মীরে উন্নয়নের বার্তা। তাঁর কথায়, “আজকে যেসব প্রকল্প উদ্বোধন হল সেগুলো কাশ্মীরের উন্নতি করবে। আর কাশ্মীরের বিকাশ মানেই ভারতের বিকাশ। এই কাশ্মীর দেখার জন্যই নিজের প্রাণ বিসর্জন দিয়েছিলেন ডঃ শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়। কাশ্মীরিদের হাসিমুখ দেখলেই দেশের ১৪০ কোটি মানুষ খুশি থাকবেন।” তাঁর আরও দাবি, আঞ্চলিক দলগুলি ভূস্বর্গের মানুষকে শিকলে বন্দি করে রেখেছিল। শিকল মুক্ত হয়েছেন কাশ্মীরের বাসিন্দারা।
 
বৃহস্পতিবার শ্রীনগরের সভা থেকে কংগ্রেস ও তার শরিক দলগুলির বিরুদ্ধে আক্রমণ শানান প্রধানমন্ত্রী। তিনি এদিন দাবি করেন, দশকের পর দশক ধরে কংগ্রেস ও তার শরিক দলগুলি ৩৭০ ধারা নিয়ে জম্মু ও কাশ্মীরের মানুষ এবং দেশকে ভুল পথে চালিত করেছে।  তিনি এদিন প্রশ্ন করেন, ‘ ৩৭০ ধারা কি জম্মু ও কাশ্মীরের মানুষের ভালোর জন ছিল, নাকি কিছু পরিবারের জন্য লাভজনক ছিল ? ‘ তাঁর কথায়, বহুদিন ধরে কংগ্রেস ও তার সঙ্গীরা ৩৭০ ধারা ব্যবহার করে কাশ্মীরিদের ভুল বুঝিয়েছে। কয়েকটা পরিবারের ফায়দার জন্য কাশ্মীরকে শিকলে বেঁধে রাখা হয়েছিল। কিন্তু এখন সেই ৩৭০ ধারা আর নেই। তাই কাশ্মীরের যুবসমাজের প্রতিভার কদর হচ্ছে, সকলের জন্য সমান সুযোগ তৈরি হচ্ছে। আগামী দিনে সারা পৃথিবীকে আকর্ষণ করবে কাশ্মীর।
 
বিশ্লেষকদের মতে, কাশ্মীর থেকে সন্ত্রাসবাদ একেবারে সমূলে উৎপাটন করতে চান মোদি। সেই জন্যই ঢালাও উন্নয়নের পথে হাঁটছে কেন্দ্র। উন্নয়ন হলে জনমানসে জঙ্গিদের প্রভাব কমবে, কর্মসংস্থান হলে সন্ত্রাসবাদ কমবে। সেই জন্যই লোকসভা নির্বাচনের আগে কাশ্মীরে গিয়ে প্রধানমন্ত্রীর বার্তা, “আপনাদের মন জিততে এসেছি।” তিনি এদিন বলেন, আজ ৩৭০ নেই, তাই যুব সমাজের আশা ও আকাঙ্খা পূরণ হচ্ছে। তাঁরা নতুন সুযোগ পাচ্ছেন। প্রধানমন্ত্রীর কথায়, ‘পাকিস্তানী উদ্বাস্তু ও বাল্মীকি সম্প্রদায়ের ভোটাধিকার ছিল না , তারাও আজ তাদের অধিকার পেয়েছে।’ মোদি বলেন, ‘এই সেই নতুন কাশ্মীর যার জন্য আমরা হাজার বছর ধরে অপেক্ষা করছিলাম। এই ভালোবাসা যে কোন মূল্যে ফিরিয়ে দেবেন মোদি।  এই মোদির গ্যারান্টি। ‘
 
বৃহস্পতিবার শ্রীনগরের বকসি স্টেডিয়ামে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি তাঁর জনসভা থেকে জম্মু-কাশ্মীরের বাসিন্দাদের উদ্দেশে বার্তা দেন। প্রধানমন্ত্রীর সভাকে ঘিরে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থার বন্দোবস্ত করা হয়। মোতায়েন করা হয় বিপুল সংখ্যক নিরাপত্তা বাহিনী। প্রধানমন্ত্রীর সভার সরাসরি সম্প্রচার দেখানোর জন্য বিভিন্ন জেলায় বসানো হয় জায়ান্ট স্ক্রিন  ।