ক্ষমতায় থাকার জন্য অধর্মের পথে হাঁটতেও দ্বিধা করছে না এখনকার রাজনীতিকরা
অযোধ্যা, ২৪ মে– একজন বাঙালি হয়েও বারাণসীতে সাত দশক রাজনীতির রাশ ধরে রেখেছেন শ্যামদেব চৌধুরী৷ পদ্মশিবিরের গুরুত্বপূর্ণ মুখও বলা চলে৷ একবারের কাউন্সিলর৷ টানা সাতবারের বিধায়ক ও একবার মন্ত্রীও হয়েছেন৷ কিন্ত্ত নরেন্দ্র মোদি প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পরই রাজনীতি বিমুখ৷ পদ্মশিবিরের নেতৃত্বের সঙ্গে সম্পর্ক চিরকালের মতো ছিন্ন করেছেন৷ কাশীর করিডর বিতর্কে মহাত্মা গান্ধীর প্রসঙ্গ টানলেন প্রাক্তন বিজেপি বিধায়ক৷ এখন বারাণসীর জঙ্গমবাডি়র কানাইয়া চিত্র মন্দিরের একচিলতে ফ্ল্যাটে টিভি আর খবরের কাগজ পডে় সময় কাটান৷ সেই শ্যামদেববাবুই এবার মোদি প্রসঙ্গে তীব্র বিরোধী৷
এক সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে শামদেববাবুর বক্তব্য, ‘ক্ষমতায় থাকার জন্য অধর্মের পথে হাঁটতেও দ্বিধা করছে না এখনকার রাজনীতিকরা৷ আমার পক্ষে সেটা মানা সম্ভব নয়৷ আমি নিজে ধার্মিক হলেও ধর্ম নিয়ে রাজনীতি করিনি৷ সেবার মানসিকতা নিয়ে রাজনীতি করেছি৷ মানুষের সেবাই ছিল জীবনের একমাত্র লক্ষ্য৷ এখন তা হচ্ছে না৷ এটা আমার কাছে খারাপ লাগার জায়গা৷’ শ্যামদেবের বিস্ফোরক দাবি, ‘এখন ধর্মের নামে অধর্মের রাজনীতি হচ্ছে৷ সেবা করতে কেউ রাজনীতিতে আসে না৷ সকলেই ব্যক্তিস্বার্থ নিয়ে রাজনীতি করছে৷ সেক্ষেত্রে আমি পিছিয়ে পড়ছিলাম৷ বারবার তাল কাটছিল৷ হয়তো নতুনদের সঙ্গে তাল মেলাতে পারছিলাম না৷ এখন যাঁরা বিজেপি করছেন, তাঁরা অনেক আধুনিক৷ আমি পুরোনো হয়ে গিয়েছি৷ বয়স তো অনেক হল৷ শরীর আগের মতো পরিশ্রম নিতে পারে না৷’
প্রাক্তন বিধায়ক ও মন্ত্রীর মতে, ক্ষমতায় থাকার জন্য এখন রাজনীতি হচ্ছে৷ ক্ষমতা দখলই এখন একমাত্র লক্ষ্য৷ ক্ষমতায় থাকার জন্য অধর্মের পথে হাঁটতেও দ্বিধা করছে না এখনকার রাজনীতিকরা৷ তাহলে কি রাজনীতি আর ধর্ম মিলেমিশে এক হয়ে যাচ্ছে? শ্যামদেব মনে করেন, “ধর্ম সবসময় সঠিক পথ দেখায়৷ কিন্ত্ত তা হচ্ছে না৷ আবার বলছি, ধর্মের নামে অধর্ম হচ্ছে৷”
ধর্ম নিয়ে রাজনীতি করার অভিযোগ উঠছে তো বিজেপির বিরুদ্ধেই৷ প্রাক্তন বিধায়ক প্রশ্ন এডি়য়ে জানালেন, “আমি ঈশ্বরে বিশ্বাস করি৷ সেই বিশ্বাস থেকে রাজনীতিতে এসেছিলাম৷ কিন্ত্ত ঈশ্বর ও রাজনীতিকে এক করিনি৷ সবসময় মানুষের সেবার মনোভাব নিয়ে চলেছিলাম৷” তিনি মন্ত্রী বা বিধায়ক থাকার সময় কাশী বিশ্বনাথ মন্দিরে এত আধুনিক ব্যবস্থা ছিল না৷ এখন আধুনিকতার মোড়কে মন্দির চত্বর, করিডর হচ্ছে৷ সে কথা মেনে নিয়েছেন শ্যামদেব৷ জানালেন, ‘খুব নোংরা ছিল৷ মহাত্মা গান্ধি যখন মন্দির দর্শনে আসেন তিনিও অপরিসর রাস্তা ও নোংরা দেখে বিরক্তি প্রকাশ করেছিলেন৷ অনেক চেষ্টা করেছি কিন্ত্ত হয়নি৷ এখন মানুষ আগের থেকে অনেক বেশি মন্দিরে স্বাচ্ছন্দ্য পাচ্ছে৷ দর্শণার্থীর সংখ্যা প্রতিদিন কয়েক গুণ বেডে় গিয়েছে৷ ক্ষতিপূরণ নিয়ে সমস্যা হলে প্রশাসন দেখবে৷’
প্রবাসী বাঙালি হলেও বাংলার খবর রাখেন৷ পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সম্পর্কে তাঁর মূল্যায়ন কী? শ্যামদেবের মতে, “উনি লড়াকু নেত্রী৷ লড়াই করে উঠে আসা একজন নেত্রী৷