বিজেপি জোটে ভাঙনের সুযোগে মণিপুরে সরকার গঠনের তোড়জোড় শুরু করতেই কেন্দ্রীয় তদন্তকারী ব্যুরো, সিবিআইয়ের জেরার মুখে পড়লেন প্রবীণ কংগ্রেস নেতা, রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ওকরাম ইবোবি সিং । ৩৩২ কোটি টাকার একটি দুর্নীতিতে জড়িত থাকার অভিযোগে বুধবার কয়েক দফায় জেরা করা হয়েছে রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীকে।
সিবিআইয়ের একটি সূত্রে খবর, বুধবার তিন ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে প্রবীণ কংগ্রেস নেতাকে। যুগ্ম অধিকর্তার নেতৃত্বে সিবিআইয়ের একটি টিম গিয়েছিল প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর বাড়িতে। যুগ্ম অধিকর্তা ছাড়াও ওই টিমে ছিলেন মামলার তদন্তকারী এক অফিসার এবং অ্যাসিস্ট্যান্ট পুলিশ সুপার।
বিজেপি নেতৃত্বাধীন মণিপুর সরকার গত বছর দুর্নীতি মামলার তদন্ত করার জন্য সিবিআইয়ের কাছে আর্জি জানিয়েছিল। অভিযোগে বলা হয়, মণিপুর ডেভেলপমেন্ট সোসাইটি (ড) সরকারি তহবিল তছরুপ করেছে। ওই সোসাইটির চেয়ারপার্সন ইবোবি সিং’য়ের দিকেই সরাসরি অভিযোগের আঙুল তুলে দাবি করা হয়, ২০০৯ সালের ৩০ জুন থেকে ২০১৭ সালের ৬ জুলাই পর্যন্ত ৩৩২ কোটি টাকা তছরুপ হয়েছে। ইবোবি সিং ছাড়াও একাধিক আধিকারিক ও কন্ট্রাক্টরা এই ঘোটালার সঙ্গে জড়িত।
বিজেপির সরকারের তরফে সিবিআইয়ের কাছে নালিশ করা হয়, ওই আট বছরে উন্নয়নমূলক কাজে প্রায় ৫১৮ কোটি টাকা দেওয়া হয়েছিল। এই টাকার ৬৪ শতাংশই আত্মসাৎ করা হয়েছে। সিবিআইয়ের একটি সূত্র জানাচ্ছে, বৃহস্পতিবার প্রাক্তন আইএএস অফিসার ও নাবা কিশোর সিংকে জেরা করা হবে।
বিজেপির তিন বিধায়ক ইস্তফা দিয়ে কংগ্রেসে যোগ দেওয়ায়, মণিপুরের রাজনৈতিক সংকট তৈরি হয়েছে। ওই তিন বিজেপি বিধায়কই শুধু নন, আরও বিধায়কও (তাঁদের মধ্যে মণিপুরের উপ-মুখ্যমন্ত্রী ও রাজ্যের তিন মন্ত্রীও রয়েছে) একসঙ্গে ইস্তফা দিয়ে বীরেন সিং সরকারের উপর থেকে সমর্থন প্রত্যাহার করে নেন। ফলে, সংখ্যার বিচারে সংখ্যালঘু হয়ে পড়ে বিজেপি সরকার।
জোট ছুট ওই বিদ্রোহী বিধায়কদের সমর্থন নিয়েই নয়া জোট গড়ে মণিপুরে সরকার গঠনের তোড়জোড় শুরু করে দিয়েছিলেন রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা প্রবীণ কংগ্রেস নেতা ওকরাম ইবোবি সিং। রাজ্যপালের কাছে গিয়ে সরকার গঠনের দাবিও জানিয়ে এসেছিলেন এই কংগ্রেস নেতা।