প্রয়াত হলেন দিল্লির প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী শীলা দীক্ষিত। তাঁর বয়স হয়েছিল ৮১ বছর। দিল্লির বেসরকারি হাসপাতালে হৃদরােগে আক্রান্ত হয়ে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। তাঁর পরিবারের তরফে জানানাে হয়, আজ সকালে হঠাৎ করে অসুস্থতা বােধ করার তাঁকে এসকর্টস হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। পরে শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় তিনি কোমায় চলে যান। কিছুক্ষণের মধ্যে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।
প্রবীণ কংগ্রেস নেত্রীর প্রয়াণে শােকজ্ঞাপন করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মােদি। কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধি সহ দলের নেতারা তাঁদের সহকর্মীর প্রয়াণে শােকজ্ঞাপন করেন।
হাসপাতালের তরফে বিবৃতি দিয়ে জানানাে হয়, ‘ফর্টিস এসকর্টস হার্ট ইন্সটিটিউটের চেয়ারম্যান ড. অশােক শেঠের নেতৃত্বে চিকিৎসকদের টিম প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর চিকিৎসা শুরু করেন। দীক্ষিত চিকিৎসায় সাড়াও দেন। তাঁর শারীরিক পরিস্থিতি স্থিতিশীল হলেও কিছুক্ষণের মধ্যে ফের হার্ট অ্যাটাক হয়। তাঁকে বাঁচানাের সমস্ত রকম চেষ্টা করা হলেও তিনি চিকিৎসায় সাড়া দিতে ব্যর্থ হন। ৩.৫৫ মিনিটে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী শীলা দীক্ষিত শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন’।
দিল্লির রাজনীতিতে শীলা দীক্ষিত অন্যতম জনপ্রিয় নেত্রী ছিলেন। তিনি ১৯৯৮ সাল থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত পরপর তিনবার মুখ্যমন্ত্রী হয়েছিলেন।
আমৃত্যু তিনি দিল্লি কংগ্রেসের প্রধান ছিলেন। চলতি বছরের গােড়াতে তিনি দিল্লি কংগ্রেসের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেছিলেন। ২০১৯ সাধারণ নির্বাচনে উত্তরপূর্ব দিল্লি লােকসভা আসন থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করলেও তিনি বিজেপির মনােজ তিওয়াড়ির কাছে পরাজিত হয়েছিলেন।
প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী রাজীব গান্ধির ঘনিষ্ট সহযােগী ছিলেন। তাঁর মন্ত্রিসভায় শীলা দীক্ষিত মন্ত্রীও ছিলেন।
পাঞ্জাবের কাপুরথালায় শীলা দীক্ষিত জন্ম গ্রহণ করেছিলেন। তিনি হালকা চালে রাজনীতি শুরু করলেও পরে সক্রিয় রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়েন। তাঁর শ্বশুর মশাই উমাশঙ্কর দীক্ষিত ইন্দিরা গান্ধির মন্ত্রিসভায় মন্ত্রী ছিলেন। তাঁকে সাহায্য করার মাধ্যমেই শীলা দীক্ষিতের রাজনীতিতে হাতেখড়ি বলা যেতে পারে।
দিল্লি শহরের পরিকাঠামােগত উন্নয়নের কৃতিত্ব তাঁর, রাস্তা নির্মাণ, ফ্লাইওভার, দূষণমুক্ত শহর তৈরির প্রয়াস, সরকারি পরিবহণ ব্যবস্থার উন্নয়ন করেছেন। পাশাপাশি স্বাস্থ্য ও শিক্ষা দফতরেরও উন্নতি করেছিলেন। ২০০৪ সালে কেরলের রাজ্যপাল হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেছিলেন। ছ’মাসের পর তিনি পদ থেকে সরে দাঁড়ান। ১৯৮৪ সালে কনৌজ লােকসভা আসন থেকে প্রথমবার জিতে সাংসদ হয়েছিলেন।